ছক ভাঙা পেশা! ১৯ পেরিয়ে কুড়িতম মাতৃত্বের পথে বছর ঊনচল্লিশের মহিলা
Pregnant With 20th Child: দু'টো, তিনটে বা পাঁচটা নয়, এখনও পর্যন্ত মোট ১৯টি সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলেছেন এই মহিলা। খুব শিগগিরই নিজের ২০তম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন তিনি।
মাতৃত্ব জীবনের এক অনবদ্য স্বাদ, তাতে কোনও ভুল নেই। কিন্তু এই মাতৃত্বকে মহৎ করে দেখানোর এক আশ্চর্য প্রয়াস রয়েছে সমাজে। যার ফল সারাজীবন ধরে ভুগতে থাকেন অজস্র 'মা'। যার ফলে একজন নতুন 'মা'-য়ের কাঁধে চেপে বসে বহু অমূলক প্রত্যাশা। যার ভার বহন করতে করতে নুব্জ্য হয়ে যান তাঁরা। কিন্তু সেই ট্যাবু সটান ভেঙে ফেলেছেন কলোম্বোর এই মহিলা। গোটা বিশ্ব জুড়ে যখন মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা ক্রমশ কমছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের, সেখানে তিনি যেন ব্যতিক্রম। দু'টো, তিনটে বা পাঁচটা নয়, এখনও পর্যন্ত মোট ১৯টি সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলেছেন এই মহিলা। খুব শিগগিরই নিজের ২০তম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন তিনি।
সর্ব অর্থেই প্রথা ভেঙেছেন তিনি। কারণ তাঁর প্রতিটি সন্তানের পিতাই আলাদা আলাদা। আর সেই সব সন্তান ধারণের পিছনে প্রেম, সংসার বা দাম্পত্য মোটেই নেই। কলোম্বিয়ার মেডেলিনের বাসিন্দা ৩৯ বছরের মার্থার কাছে এটা তাঁর কাজ মাত্র। যতদিন তাঁর শরীর মা হওয়ার যোগ্য, ততদিন এই কাজ করে যেতে যান তিনি। বহু ক্ষেত্রেই সেই সন্তানের পিতৃপরিচয় জানা নেই মার্থার। তাঁর অন্তত ১৭টি সন্তানের বয়স আঠেরোর মধ্যে।
আরও পড়ুন: ৩৬ বছর ধরে ‘গর্ভবতী’ এই পুরুষ! অস্ত্রোপচার শেষে চোখ কপালে চিকিৎসকদের…
মাতৃত্ব আর ব্যবসা, এই দু'টোকে কি এক দাঁড়িপাল্লায় রাখা যায়? মার্থার এই কাজের কথা শুনে অনেকেই ভ্রূকুঞ্চিত করবেন। তবে মার্থার তাতে কিছু যায় আসে না। তাঁর কাছে এটা ব্যবসা ছাড়া আর কিছু নয়। এই কাজের জন্য কলম্বিয়ান সরকারের কাছে প্রতি মাসে ৫১০ ডলার করে আর্থিক সাহায্য পান। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪৩ হাজার টাকার কাছাকাছি। মার্থা বলেন যে তিনি বড় সন্তানের জন্য প্রায় ৬,৩০০ টাকা এবং সবচেয়ে ছোটটির জন্য ২,৫০০ টাকা করে পান৷কাছের একটি গির্জা ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও বেশ কিছু অর্থসাহায্য পান মার্থা।
কিন্তু শুধু কি সরকারি অর্থসাহায্য় পাওয়ার জন্যই মার্থার একের পর এক সন্তানের জন্ম দিয়ে যাওয়া! সরকার বা গির্জা থেকে যা সাহায্য় তিনি পান, তার অধিকাংশ অংশই তো খরচ হয়ে যায় সন্তানদের প্রতিপালনে। তা-ও ছেলেমেয়েদের সব রকম সুবিধা ভালো করে দিয়ে উঠতে পারেন না। তিন কামরার ঘরও তাঁর কম পড়ে আজকাল। অনেকেরই রাত কাটাতে হয় সোফায়। তবে তাকে কোনও প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করেন না মার্থা। বরং সমাজে মাতৃত্ব নিয়ে চালু প্রথাগুলির বিরুদ্ধে এই ভাবেই নিজের প্রতিবাদ জারি রাখতে চান মার্থা।
মাতৃত্ব নিয়ে এখনও বহু রকমের ভ্রান্ত ধারনা গেঁথে রয়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরে। কোন বয়সে মা হওয়া যায়, ঠিক ক'টি সন্তানের মা হতে পারেন একজন মহিলা, এ সব নিয়ে একগুচ্ছ ভ্রান্ত ধারণাকেই সওয়াল করতে চান মার্থা। এই সমাজে 'একা মা'-দের লড়াই খুব একটা অজানিত নয়। সেখানে একটি নয়, মোট উনিশটি সন্তানের দায়িত্ব একার কাঁধে পালন করে আসছেন তিনি। আর তার জন্য সন্তানদের পিতাদের উপর কোনও রকম ভরসা বা প্রত্যাশা তিনি করেন না। বরং নিজের জোরেই পৃথিবীর আলো দেখাতে চান নিজের সন্তানদের। খুব শিগগিরই পৃথিবীর আলো দেখতে চলেছে মার্থার কুড়িতম সন্তান।
আরও পড়ুন:৫০ হাজার গর্ভবতী মহিলা যুদ্ধের শিকার! প্রিম্যাচিওর শিশুদের মৃত্যু দেখবে গাজা?
সন্তান জন্মের এমন রেকর্ড কিন্তু একা মার্থারই নেই। রয়েছে রাশিয়ার জর্জিয়ার বাসিন্দা ক্রিস্টিনা ওজতুর্ক নামে এক মহিলারও। ২৬ বছর বয়সেই ২২ বছরের সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলেছেন তিনি। যদিও প্রথমটি ছাড়া বাকি সব কটি সন্তানেরই তিনি জন্ম দিয়েছেন সারোগেসির মাধ্যমে। আর এখানেই থামছেন না তিনি। সন্তান জন্ম দেওয়ার সেঞ্চুরি হাঁকানোই একমাত্র উদ্দেশ্য তাঁর।