Budget 2024: কমবে আয়কর? কতটা ছাড়ের সম্ভাবনা মধ্যবিত্তদের জন্য?
Union Budget 2024: সত্যিই কি ধনকুবেরদের সম্পদ কর বসিয়ে আয়ের সাম্য আনতে পারবে মোদি ৩.০?
লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কেন্দ্র সরকার যে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করেছিল তাতে আয়কর কাঠামোয় কোনও বদল করেনি দ্বিতীয় মোদি সরকার। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ স্পষ্টই বলেছিলেন, ভোটের বছর বলেই আয়করের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি মন্ত্রক। ভোট সাঙ্গ, তৃতীয় দফায় বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে দেশের। পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণার পালা এবার। ভোটের ফলাফল বিজেপির কাছে আশানুরূপ নয়। এই পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কি আয়কর নিয়ে বড় ঘোষণা করে জনতার মন পেতে চাইবে শরিক-নির্ভর কেন্দ্র সরকার?
নিয়ম অনুযায়ী লোকসভা ভোটের বছরে পূর্ণাঙ্গ বাজেট নির্বাচনের পরে, নতুন সরকার গঠন হলেই পেশ হয়। অন্তর্বর্তী বাজেটে সাধারণত বড় কোনও ঘোষণা হয় না। বর্তমানে দেশে দু’টি আয়কর কাঠামো চালু রয়েছে। একটি পুরনো, আরেকটি নতুন। নতুন কর কাঠামোয় ঊর্ধ্বসীমা ৭ লক্ষ টাকা। সেখানে করের হার কম কিন্তু কোনও কর ছাড় মেলে না। পুরনো কর কাঠামোয় এখনও নানা ছাড় চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন- অন্তর্বর্তী বাজেটের মতোই হতাশা না স্বপ্নপূরণ? কোন কোন দিকে নজর থাকবে নির্মলার পূর্ণাঙ্গ বাজেটে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের পূর্ণাঙ্গ বাজেটের থেকে সবচেয়ে বড় প্রত্যাশাটিই হলো, নতুন কর ব্যবস্থার আওতায় করছাড়ের সীমাবৃদ্ধি। বর্তমানে, ছাড়ের সীমা ৩ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ এই পরিমাণ পর্যন্ত আয়ের উপর কর নেওয়া হবে না। আশা করা হচ্ছে এই সীমাটি বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হবে যাতে বিরাট স্বস্তি পাবেন করদাতারা। বর্তমানে, বার্ষিক ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা উপার্জনকারীদের ২০% হারে কর দিতে হয়। এই হার নিঃসন্দেহে বেশ চড়া। নতুন কর ব্যবস্থার অধীনে ট্যাক্স স্ল্যাবগুলির বদল হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
যাদের আয় ১৫ লাখ টাকা বা তার বেশি তাদের ৩০% হারে কর দিতে হয়। দাবি উঠেছে, বছরে ৩০ লক্ষ টাকা উপার্জনকারীদের উপরেই ৩০% হারে কর প্রয়োগ করা হোক। বার্ষিক ৯ থেকে ১২ লক্ষ টাকা উপার্জনকারীদের জন্য ১৫% হার সংশোধন করার দাবি উঠেছে। বর্তমানে, স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ৫০,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সরকার এটি বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা করতে পারে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের কোটা ব্যবস্থা ঠিক কী? কেন এর বিরোধিতায় প্রাণ হারালেন পড়ুয়ারা?
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়। পুরনো কর কাঠামোয় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয়ের উপর থেকে সর্বনিম্ন হারে আয়কর প্রযোজ্য হয়। অন্তর্বর্তী বাজেটে এই সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করা হতে পারে বলে জল্পনা ছিল। এমন হলে বছরে ১২৫০ টাকা বাঁচাতে পারতেন চাকরিজীবীরা। সে ক্ষেত্রে ৫.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও করই দিতে হতো না। পুরনো এবং নতুন, দুই কর কাঠামোতেই ‘স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন’-এর পরিমাণ ৫০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০,০০০ টাকা করা হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছিল, যদিও তা বাস্তবে ঘোষণা করা হয়নি।
এই শরিক-নির্ভর মোদি সরকার কি মধ্যবিত্তদের জন্য আয়কর নিয়ে সত্যিই বড় ঘোষণা করবে? চড়া মূল্যবৃদ্ধির বাজারে যাতে আমজনতার হাতে বাড়তি কিছু নগদ টাকা যাতে থাকে, সেই লক্ষ্যে চাকুরিজীবীদের আয়কর ছাড় দেওয়া প্রত্যাশা রয়েছে এবারের বাজেটে। হয় আয়করের হার কমানো হতে পারে বা আয়করের হিসেবে ‘স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন’-এর পরিমাণ বাড়ানোও হতে পারে। দেশজুড়ে ধনী আর গরিবের আয়ের অসাম্য কমাতে কোটিপতিদের উপর সম্পদ কর বসানো বা বাড়তি আয়কর চাপানোর পথে কি এগোবে মোদি সরকার? মুকেশ আম্বানির ছেলের বিয়ের মহাউৎসবে যেভাবে টাকা ওড়ানো হয়েছে তাতে কোটিপতিদের উপরে সম্পদ কর বসানোর দাবি ইতিমধ্যেই তুলেছে কংগ্রেস। সত্যিই কি ধনকুবেরদের সম্পদ কর বসিয়ে আয়ের সাম্য আনতে পারবে মোদি ৩.০?