কুকথার রাজা অভিজিতের টার্গেট এবার শাহরুখ, কেন?

Abhijeet-Shah Rukh: অভিজিৎ বলে বসেন, শাহরুখ নাকি খুবই বাণিজ্যিক স্বভাবের মানুষ। কিং খান নাকি কাউকে ব্যবহার করার পর তাঁকে নিজের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে দ্বিধা করেন না।

কখনও গরিবগুর্বো মানুষকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করা, কখনও আবার যৌনহেনস্থার প্রতিবাদ করায় অভিযোগকারিনীকে কুরূপা, কুৎসিত বলে দেগে দেওয়া! সময়ে-অসময়ে এমন নানান আকথা-কুকথা বলেই থাকেন তিনি। একসময় তিনি পরিচিত ছিলেন তাঁর অসাধারণ গায়কির জন্য। আশির দশক থেকে একের পর এক সুপারহিট গান দর্শকদের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। সেই মেলোডির সম্রাট আজকাল প্রায়শই লাইমলাইটে আসেন তাঁর কুকথার জন্য। সেই অভিজিত ভট্টাচার্যের নিশানায় এবার বলিউড বাদশা শাহরুখ।

'পাঠান' এবং 'জওয়ান', পর পর দু-দু'টো সুপারডুপার হিট ছবির পর এই বছরের তৃতীয় কিং খান মুভিটি মুক্তির অপেক্ষায়। সেই 'ডানকি' নিয়েও কিংখান ভক্তদের প্রতীক্ষা তুঙ্গে। এর মধ্যে আবার 'টাইগার থ্রি'-ছবিতে একটি ক্যামিও চরিত্রে প্রেক্ষাগৃহে আগুন লাগিয়ে গিয়েছেন বলিউড বাদশা। সব মিলিয়ে এই বছরটা যেন শাহরুখ খানেরই। ষাটের দোরগোরায় পৌঁছে যাওয়া একটা মানুষ আজও লাফাচ্ছেন, ঝাঁপাচ্ছেন, নেচে বেড়াচ্ছেন! যেন বছর চব্বিশের ছোকরা। সেই শাহরুখের শুরুর দিনের একাধিক ছবিতে বহু হিট থেকে সুপারহিট গানের কণ্ঠ অভিজিৎ। 'বস ইতনা সা খোয়াব হ্যায়' থেকে 'ইয়েস বস', 'বাদশা' থেকে 'চলতে চলতে'- অসংখ্য হিট ছবিতে গান গেয়েছেন তিনি। 'ম্যায় কোই অ্যাইসা গীত গাউ' থেকে শুরু করে 'তুমহে যো ম্যায়নে দেখা', 'চান্দ তারে তোড় লাউ', অগুনতি গান রয়েছে সেই তালিকায়। সেই সব গানের জনপ্রিয়তা আজও অক্ষুন্ন।

আরও পড়ুন: বলিউড বাদশার জন্য পেড়ে এনেছেন চাঁদও! কে শাহরুখের এই ‘জাবরা’ ফ্যান?

গায়ক হিসেবে অভিজিৎ দশে দশ হলেও মাঝেমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝেমধ্যেই তাঁর আকথা-কুকথার জন্য সমালোচিত হয়ে থাকেন অভিজিৎ। আর এবার সেই গায়কের নিশানায় খোদ শাহরুখ। সম্প্রতি বলিউডের কিং খানকে নিয়ে মুখ খোলেন বিতর্কিত এই গায়ক। শাহরুখের সঙ্গে কেরিয়ার শুরু করেছেন, বেশ খানিকটা পথ একসঙ্গে হেঁটেছেন, এমন মানুষ অবশ্য কম নেই ইন্ডাস্ট্রিতে। বলাই বাহুল্য, শাহরুখ খানের মতো নক্ষত্র হয়ে ওঠার ক্যারিশমা বা ললাটলিখন, তাঁদের কারওরই ছিল না। তেমনই একজন অভিজিৎ। গায়ক-অভিনেতা জুটিদের মধ্যে অন্যতম সফল এবং জনপ্রিয়তম ছিল অভিজিৎ-শাহরুখ খান জুটি। ৬০-এর দোরগোরায় পৌঁছে শাহরুখ খান যেন নিজের কেরিয়ারের নতুন ইনিংস শুরু করেছেন। সেই হিসেবে দেখতে গেলে গায়ক অভিজিতের কেরিয়ার অস্তগামী।

শাহরুখের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই দূরত্ব বেড়েছে অভিজিতের। কী নিয়ে দূরত্ব, তা অবশ্য পরিষ্কার করে জানা যায়নি। সম্প্রতি সেই দূরত্ব মেটাতেই শাহরুখ নিয়ে মুখ খুললেন অভিজিৎ? কারণ এবার তাঁর গলায় হঠাৎ করেই উঁকি দিল প্রশংসার সুর। অবশ্য তা ব্যাজস্তূতিও হতে পারে। বলিউড বাদশার প্রশংসা করে জানান, শাহরুখ একজন 'সেলফমেড স্টার'। নিজের তুলনা টেনে তিনি বলেন, শাহরুখ আর তাঁর চরিত্র নাকি অনেকটাই এক। তাঁরা দু'জনেই বৃশ্চিক রাশির জাতক। অভিজিতের জন্মদিন ৩০ অক্টোবর এবং শাহরুখের ২ নভেম্বর। গায়কের দাবি, তাঁদের স্বভাবে তাই অনেক মিল। তাঁদের নাকউঁচু এরম নয়, কিন্তু আত্মসম্মানবোধ প্রবল।

অভিজিৎ ও শাহরুখ খানের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমাদের মধ্যে কিছু সমস্যা রয়েছে। তিনি তা মেটানোরও চেষ্টা করেছেন। এরপরেই অভিজিৎ বলে বসেন, শাহরুখ নাকি খুবই বাণিজ্যিক স্বভাবের মানুষ। কিং খান নাকি কাউকে ব্যবহার করার পর তাঁকে নিজের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে দ্বিধা করেন না। এর সঙ্গেই অভিজিতের টিপ্পনী, তাই বলে শাহরুখতে অ্য়ান্টি-ন্যাশনাল বলা যায় না। কারণ শাহরুখের চেয়ে বড় জাতীয়তাবাদী তিনি আরও কোথাও দেখেননি।

কেরিয়ারের শুরু থেকেই একের পর এক দেশপ্রেমমূলক সিনেমায় দেখা গিয়েছে শাহরুখকে। 'ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্থানি' থেকে 'স্বদেশ', 'চক দে ইন্ডিয়া'-র মতো একাধিক সিনেমার কথাও উল্লেখ করেন গায়ক। জানান, নিজের ছবিতে সবসময় হিন্দু ধর্মের প্রচার করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, খানেদের মধ্যে নাকি একমাত্র জাতীয়তাবাদী শাহরুখই। বাকিদের দেশের সঙ্গে কোনও লেনাদেনা নেই।

আরও পড়ুন:বলিউড বাদশার জন্য পেড়ে এনেছেন চাঁদও! কে শাহরুখের এই ‘জাবরা’ ফ্যান?

আসলে গায়ক অভিজিতের ঠোঁটের আগাতেই যেন লেগে থাকে বিতর্ক। তিনি মুখ খুললেই বিতর্কের জন্ম হয়, তা তিনি জানেন। তবু তেমন কথাবার্তাই বারবার বলে বসেন তিনি। কখনও সলমন খানের মামলায় ফুটপাথবাসীকে 'কুকুর' বলে বসেন। কখনও আবার 'মি-টু' বিতর্কে অভিযোগকারিনীকে নিয়ে চারকথা বলে ফেলেন। অনেকেই মনে করেন, শাহরুখের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার নেপথ্যেও রয়েছে তাঁর এই ঠোঁটকাটা স্বভাবই। এ বার শাহরুখ নিয়ে ভালো কথা বলতে নেমেও ফের বিতর্কের জন্ম দিলেন গায়ক। কথায় কথায় শাহরুখকে ব্যবসায়ী থেকে সুবিধাবাদী, কোনও কিছু বলতেই ছাড়লেন না। একই সঙ্গে বাকি খানেদেরকে নিয়েও বিতর্ক তৈরি করে দিলেন গায়ক। যদিও এই অভিজিৎই ২০১৬ সালে উরি হামলার পর সিনেমায় পাক শিল্পীকে নেওয়ার কারণে সলমন, আমির ও করণ জোহরের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তাঁদের দেশবিরোধী বলেও তোপ দাগেন তিনি। আরও একবার সেই বিতর্ককেই যেন নতুন করে উস্কে দিল অভিজিৎ-উবাচ।

 

More Articles