ইজরায়েলের হামলায় নিহত নাসরাল্লাহ, এবার হিজবুল্লাহর দায়িত্ব সামলাবেন কে?
Hezbollah Hashem Safieddine: কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান হিসাবে, সাফিউদ্দিন হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক বিষয়গুলি তত্ত্বাবধান করেন।
তিন দশক ধরে ইরান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হাসান নাসরাল্লাহ। বেইরুটে ইজরায়েলের বিমান আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। এবার হিজবুল্লাহ প্রধান হিসেবে হাসান নাসরাল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হবেন হাশেম সাফিউদ্দিন। সাফিউদ্দিন হচ্ছেন নাসরাল্লাহর খুড়তুতো ভাই। নাসরাল্লাহ ৩২ বছরের দায়িত্ব যেখানে ছেড়ে গেছেন, সেইখান থেকেই দায়িত্বভার গ্রহণ করতে চলেছেন সাফিউদ্দিন। যদিও, এই বিমান হামলার খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাউর হয়ে যায়, লেবাননে ইজরায়েলের বোমা হামলায় সাফিউদ্দিনও নিহত হয়েছেন। তবে, পরে রয়টার্স জানায়, তিনি বেঁচে আছেন।
হাসান নাসরাল্লাহর সঙ্গে শারীরিক মিল প্রচুর সাফিউদ্দিনের। হিজবুল্লার শুরুর দিনগুলো থেকেই দাদার হাত ধরেই হিজবুল্লাহে যোগদান করেন তিনি। ১৯৬৪ সালে দক্ষিণ লেবাননের দেইর কানুন আল-নাহরে জন্মগ্রহণ করেন সাফিউদ্দিন। ১৯৯০-এর দশক থেকেই নাসরাল্লাহর উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে সাফিউদ্দিনকে। ইরানে সেইসময় পড়াশোনা করছিলেন সাফিউদ্দিন। তাঁকে ইরান থেকে বেইরুটে ডেকে পাঠানো হয়।
২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে সাফিউদ্দিনকে। হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক বিষয়গুলির তত্ত্বাবধান করেন সাফিউদ্দিন, এই জঙ্গিগোষ্ঠীর জিহাদ কাউন্সিলের সদস্য তিনি। নিহত ইরানি সামরিক জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মেয়ে জেইনাব সোলেইমানির শ্বশুর হিসেবে ইরানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। সিরিয়ার সরকারকে সমর্থন করার জন্য এই ২০১৭ সালেই সৌদি আরব সাফিউদ্দিনকে কালো তালিকাভুক্ত করে।
নাসরাল্লাহর মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর সিরিয়ায় উদযাপন শুরু হয়েছে। হিজবুল্লাহকে জনগণ শত্রু হিসেবে দেখে কারণ এই জঙ্গিগোষ্ঠীই সিরিয়ার বিপ্লব দমনে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সাহায্য করেছিল।
আরও পড়ুন- চরকে দিয়ে গোপন তথ্য হাসিল ইজরায়েলের? যেভাবে খুন হলেন হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহ
কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান হিসাবে, সাফিউদ্দিন হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক বিষয়গুলি তত্ত্বাবধান করেন। জিহাদ কাউন্সিলের কাজ হচ্ছে মূলত দলের সামরিক অভিযান পরিচালনা করা। গত ৩০ বছরে সাফিউদ্দিন হিজবুল্লাহর শিক্ষা ব্যবস্থা এবং অর্থসহ, অন্যান্য কাজের দেখভালও করেছেন। হাসান নাসরাল্লাহ মূলত এই জঙ্গিগোষ্ঠীর কৌশলগত বিষয়গুলির দেখাশোনা করতেন।
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, তিনি নাসরুল্লাহকে নির্মূল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কারণ নাসরাল্লাহর মৃত্যুই ইজরায়েলের যুদ্ধ জয়ের 'প্রয়োজনীয় শর্ত' হয়ে উঠেছিল। নেতানিয়াহুর মতে নাসরাল্লাহর মৃত্যু ‘ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্ট’। ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলছে, হাসান নাসরাল্লাহ আর বিশ্বকে ভয় দেখাতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, আইডিএফ আরেকজন হিজবুল্লাহ নেতাকে নির্মূল করারও দাবি করেছে। আইডিএফ বলছে, হাসান খলিল ইয়াসিন, যিনি হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা বিভাগের একটি শাখার নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁকেও হত্যা করা হয়েছে। এই শাখাটিই মূলত ইজরায়েলি সামরিক এবং অসামরিক স্থানগুলি শনাক্ত করত।