অ্যাম্বাসাডরের সঙ্গে টক্কর দিতে বাজারে ফিরছে টাটা ন্যানো, নতুন কী চমক রয়েছে গাড়িতে?
Tata Nano EV : নতুন ন্যানোর নকশায় অনেক বদল লক্ষ্য করা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আগের তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক হয়েছে ন্যানো। কোন কোন বদল হল?
প্রযুক্তির পিঠে চেপে সবকিছুতেই বদল আসছে। যাতায়াত ব্যবস্থাও দিনদিন উন্নত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে বায়ুদূষণ রোধে পেট্রোল ডিজেলের গাড়ির পরিবর্তে ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহারের চল শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাজারে নতুন রূপে ফিরেছে চিরাচরিত অ্যাম্বাসাডর। এবার সেই সফরে হাত মেলাতে আসতে চলেছে টাটা ন্যানো। নতুন করে কাম ব্যাক করা এই গাড়িতে থাকছে নানান চমক।
মধ্যবিত্তদের স্বপ্নপূরণের চাবিকাঠি ছিল টাটা ন্যানো। যে স্বপ্নের দাম লাখ টাকা। বড় খরচের জন্য যারা গাড়ি কিনতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রে দারুণ বিকল্প ছিল টাটা ন্যানো। রতন টাটার ‘স্বপ্নের গাড়ি’। আকারে খানিক ছোট। প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত হুগলি জেলার সিঙ্গুরে কারখানা হওয়ার কথা ছিল এই গাড়ির। যদিও রাজনৈতিক জটিলতায় সেই স্বপ্ন বেচা কেনা হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই।এখান থেকে পাততাড়ি গোটানোর পর ২০০৮ সালে গুজরাতে সানন্দের কারখানায় চালু হয়েছিল উৎপাদন। তারপরও কেটে গিয়েছে প্রায় ১৪ বছর। স্কুটার এবং বাইকের বিকল্প হিসেবে আনা হয়েছিল সস্তার চার চাকা। এক লাখি এই গাড়ি প্রথমে দারুণ সাড়া ফেলেছিল বাজারে। তবে ধীরে ধীরে কমতে থাকে চাহিদা। তারপর ২০১৮ সালে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন - ন্যানো ইভি থেকে শুরু করে মার্সিডিজ! মুম্বইয়ের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায় রতন টাটার এই গাড়িরা
সম্প্রতি আবারও শিরোনামে ফিরেছে টাটা ন্যানো। নয়া Tata Nano EV নিয়ে বেশ কিছু মাস ধরেই জল্পনা চলছে। জল্পনা আরও তুঙ্গে ওঠে যখন খোদ রতন টাটাকে দেখা যায়, টাটা ন্যানো ইভি ব্যবহার করে ফিডব্যাক দিতে।
এই নতুন ন্যানোর নকশায় অনেক বদল লক্ষ্য করা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আগের তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক হয়েছে ন্যানো। এমনকী যান্ত্রিক পরিবর্তনও লক্ষ্য করা গিয়েছে। বাজারের চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এসেছে বেশ কিছু ফিচার। যেমন ইলেকট্রিক পাওয়ার স্টিয়ারিং, বাতানুকূল যন্ত্র, সামনে রয়েছে অতিরিক্ত পাওয়ার উইন্ডো। এছাড়াও রয়েছে ব্লুটুথ, মাল্টি ইনফরমেশন ডিসপ্লে এবং রিমোট লকিং সিস্টেম। এখানেই শেষ নয়, থাকছে ৭ ইঞ্চির একটি টাচস্ক্রিন ইনফোটেনমেন্ট সিস্টেম। অ্যান্ড্রয়েড অটো এবং অ্যাপল কারপ্লে কানেক্টিভিটি ফিচার এবং একইসঙ্গে ব্লুটুথ ও ইন্টারনেট কানেক্টিভিটিও থাকছে নতুন ন্যানো গাড়ি গুলিতে। থাকতে পারে ৬টি স্পিকারের একটু সাউন্ড সিস্টেমও। একইসঙ্গে সাসপেনশন এবং চাকাতেও অনেক বদল আনা হয়েছে। যেমন বড় অ্যালয় চাকা দেওয়া হয়েছে এই গাড়িতে। এতে গাড়ির গ্রাউন্ড ক্লিয়ার্যান্স বাড়বে বলে সংস্থার দাবি। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে সম্পূর্ণ নতুন রূপে ফিরে গাড়িগুলি।
পাশাপাশি উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এই নতুন রূপে প্রত্যাবর্তনের তালিকায় উঠে এসেছিল অ্যাম্বাসাডর।ইতিমধ্যেই, এই নতুন গাড়ির প্রোজেক্টেড ডিজাইন সকলের সম্মুখে নিয়ে এসেছে পিউজো। নব প্রজন্মের পাশাপাশি ভিনটেজ গাড়িপ্রেমীদের কাছেও এই নতুন মডেলের মডার্ন অ্যাম্বাসাডর হয়ে উঠেছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ২০০২-এর একটি বিতর্কিত ভাইরাল বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল, একটি অ্যাম্বাসাডরকে ভেঙেচুরে, তুবড়ে, এমনকী গাড়ির বনেটে হাতি পর্যন্ত বসিয়ে একটি আধুনিক মডেলের গাড়ি তৈরি করছে তারা। এবার সেই বিজ্ঞাপনই হয়তো হতে চলেছে সত্যি। বছরে প্রায় এক লক্ষ আধুনিক মানের বিদ্যুৎচালিত গাড়ি তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে কোম্পানি। দীর্ঘ ৮ বছর পর নতুন করে মার্কেটে ফিরছে হিন্দুস্থান মোটরস। গায়ে ফরাসি রং লাগিয়ে ভারতের রাস্তায় ফের বুক চিতিয়ে চলার জন্য তৈরি অ্যাম্বাসাডর, সকলের প্রিয় '‘অ্যাম্বি’। ফলে এখন জোর টক্কর নতুন ন্যানো ভার্সেস নতুন অ্যাম্বাসাডর। চিরাচরিত স্মৃতি নাকি সস্তায় স্বপ্নপূরণ, কে এগিয়ে যাবে দৌড়ে, এখন দেখার সেটাই...