ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা: কোন পথে মন জিততে চাইছেন রাহুল?

Bharat Jodo Nyay Yatra: বৃহস্পতিবার এই যাত্রার নাম আবার পরিবর্তিত করে রাখা হয়, 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'। অরুণাচলপ্রদেশ সহ ১৫টি রাজ্য জুড়ে এই যাত্রা চলবে।

সারা দেশের বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতারা গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে একটি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আলোচনার বিষয় ছিল—আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কৌশল, আসন সমঝোতা এবং মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র যাত্রার প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার এই যাত্রার নাম আবার পরিবর্তিত করে রাখা হয়, 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'। অরুণাচলপ্রদেশ সহ ১৫টি রাজ্য জুড়ে এই যাত্রা চলবে। দিল্লির এআইসিসি (অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি) সদর দফতরে দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ ঘোষণা করেছেন, যাত্রার নাম আরেকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। আগে এর নাম রাখা হয়েছিল 'ভারত ন্যায় যাত্রা'। ওইদিন দলের বিভিন্ন রাজ্যস্তরীয় নেতা থেকে এআইসিসি সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে।

বৈঠকের পর, কংগ্রেস ৬৬ দিনের 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’-র রুটম্যাপ প্রকাশ করেছে। ১৫টি রাজ্যের ১১০টি জেলার উপর দিয়ে যাবে যাত্রাটি। ১৪ই জানুয়ারি, মণিপুরের ইম্ফল থেকে শুরু হয়ে যাত্রা চলবে মুম্বই পর্যন্ত। জয়রাম রমেশ বলেন, এই যাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য ইন্ডিয়া ব্লকের (I.N.D.I.A) সমস্ত নেতাদের কংগ্রেসের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রত্যেককে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হচ্ছে। এটি একটি হাইব্রিড যাত্রা। যাত্রাপথের একটি অংশ বাসে যাবেন যাত্রাকারীরা। বাকি অংশ পায়ে হেঁটে যাওয়া হবে। মণিপুরের ১০৭ কিমি যাত্রাকারীরা অতিক্রম করবেন ১ দিনে। চারটি জেলার উপর দিয়ে যাবেন তাঁরা। নাগাল্যান্ডের ২৫৭ কিমি পথের জন্য সময় বরাদ্দ ২ দিন। পাঁচটি জেলা ছুঁয়ে এগিয়ে যাবে যাত্রা। আসামের ১৭ টি জেলা, মোট ৮৩৩ কিমি পথ পেরোতে যাত্রাটি সময় নেবে ৮ দিন। আরুণাচলের ১টি জেলা, অতিক্রম করতে হবে ৫৫ কিমি। বরাদ্দ ১ দিন। এরপর মেঘালয় হয়ে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলার পাঁচটি জেলা, ৫২৩ কিমি পথ বেছে নিয়েছে কংগ্রেস। বাংলা হয়ে বিহার। বিহার হয়ে ঝাড়খণ্ড। ঝাড়খণ্ডের ১৩টি জেলার ৮০৪ কিমি পথ অতিক্রম করতে যাত্রা সময় নেবে ৮ দিন। এরপর উড়িষ্যার ৩৪১ কিমি, সাকুল্যে চারটি জেলা যাত্রাকারীরা পার হবেন চারদিনে। ছত্তিশগড়ের ৫৩৬ কিমি পাঁচ দিনে পেরোবেন তাঁরা। এরপর উত্তরপ্রদেশ। উত্তরপ্রদেশে যাত্রার দীর্ঘতম পথ অতিক্রম করবেন যাত্রাকারীরা। ১০৭৪ কিমি। ২০টি জেলা পেরোতে সময় লাগবে ১১ দিন। উত্তরপ্রদেশের পরে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান হয়ে গুজরাট। গুজরাটে সাতটি জেলা ৪৪৫ কিমি পথের জন্য বরাদ্দ ৫ দিন। সবশেষে মহারাষ্ট্র। ৬টি জেলায় ৪৭৯ কিমি পথ অতিক্রম করে যাত্রা শেষ হবে মুম্বইতে।

route map

দলের শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্যে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, কেন্দ্র সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে স্পর্শকাতর বিষয়গুলি উত্থাপন করছে। তিনি আরও বলেন, "I.N.D.I.A ব্লকের প্রধান শক্তি আঞ্চলিক দলগুলি। যাদের বিপুল কর্মীসংখ্যা এবং আদর্শ এই জোটের ভিত্তি।" তাঁর অভিযোগ, আধুনিক ভারত গঠনে কংগ্রেসের অবদানকে অবিরত উপেক্ষা করে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এর জবাব দেওয়া প্রয়োজন বলেই মনে করছেন তিনি। সংসদীয় গণতন্ত্র এবং আধুনিক ভারতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে কংগ্রেসের অবদান আরেকবার দলীয় কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন খাড়গে।

আরও পড়ুন:ভারত ন্যায় যাত্রা: মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র, কেন এই রুটম্যাপ বাছলেন রাহুল গান্ধী?

গত বৃহস্পতিবার, ওয়াইএসআর তেলেঙ্গানা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির কন্যা, ওয়াইএস শর্মিলা কংগ্রেসে যোগ দেন। রাজশেখর রেড্ডি পরপর দু'বার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০০৮-এ সালে একটি মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। গত এক বছর ধরে শর্মিলার সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসার চেষ্টা করছিল কংগ্রেস। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই হায়দরাবাদে একটি সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তখনো পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত বোঝাপড়া না হওয়ায় সমাবেশে আসেননি তিনি। তার যোগদান নির্বাচনে প্রভূত সাহায্য করবে কংগ্রেসকে─এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

More Articles