ভারত ন্যায় যাত্রা: মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র, কেন এই রুটম্যাপ বাছলেন রাহুল গান্ধী?

Bharat Nyay Yatra: নির্বাচনকে সামনে রেখেই রাহুল গান্ধী পরিকল্পনা করেছেন 'ভারত ন্যায় যাত্রা'র। ১৪ জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ অবধি চলবে এই যাত্রা। চলবে ৬২০০ কিলোমিটার জুড়ে। ১৪ টি রাজ্য ও ৮৫টি জেলার উপর দিয়ে যাবে যাত্রাটি

শিয়রে ২০২৪-এর নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখেই রাহুল গান্ধী পরিকল্পনা করেছেন 'ভারত ন্যায় যাত্রা'র। ১৪ জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ অবধি চলবে এই যাত্রা। চলবে ৬২০০ কিলোমিটার জুড়ে। ১৪ টি রাজ্য ও ৮৫টি জেলার উপর দিয়ে যাবেন যাত্রায় অংশগ্রহণকারী মানুষ। এই বিশাল পরিকল্পনা বাস্তয়াবিত হলে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া ব্লক নির্বাচনে লাভবান হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রথমে 'ভারত জোড়ো যাত্রা' নামটিই ঠিক ছিল। পরে, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি নামটি পরিবর্তিত করে রাখে 'ভারত ন্যায় যাত্রা'। রাহুল গান্ধীকে দায়িত্ব দেওয়া হয় দেশের পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত এই মহাযাত্রা পরিচালনা করার। এই নির্দেশ মেনে নিয়েছেন কংগ্রেসের অধ্যক্ষ রাহুল গান্ধী।

আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধির নয়, এ পরাজয় আঞ্চলিক মনসবদারদের

এই যাত্রার বিষয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল জানান, "রাহুল গান্ধীর এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি 'ভারত জোড়ো যাত্রা' পরিচালনা করেছিলেন। এই যাত্রাকালীন রাহুল ও অন্যান্য দলীয় কর্মীরা আলাপ করবেন দেশের ছাত্র-যুবা, নারী ও প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে।" তিনি আরও জানান, ভারত ন্যায় যাত্রা-র উদ্বোধন করবেন মল্লিকার্জুন খারগে। যাত্রা হবে মূলত বাসেই। তবে মাঝে মাঝে হাঁটার পরিকল্পনাও রয়েছে।

এই যাত্রার মধ্যে দিয়েই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করতে চলেছে কংগ্রেস। ইন্ডিয়া জোটকে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রচেষ্টাও রয়েছে। এই যাত্রা যে রাজ্যগুলির উপর দিয়ে মহারাষ্ট্রের দিকে এগোবে, সেই রাজ্যগুলির আঞ্চলিক দলেরা ইন্ডিয়া জোটে অংশগ্রহণ করতে পারে বলেই খবর। তাদের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসাও এই যাত্রার উদ্দেশ্য।

routemap

'ভারত ন্যায় যাত্রা'র পরিকল্পিত পথ

ভারত ন্যায় যাত্রা আরম্ভ হচ্ছে মণিপুর থেকে। মুম্বইয়ে এসে যাত্রা-সমাপ্তি। ১৪টা জেলার উপর দিয়ে যাবেন যাত্রাকারীরা। নাগাল্যান্ড, আসাম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট হয়ে মহারাষ্ট্র—এই হল যাত্রার রুটম্যাপ। প্রধানত বাসযাত্রা হিসাবেই ভারত ন্যায় যাত্রা-র আয়োজন করছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য যাত্রাপথে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে সরাসরি বার্তালাপ হবে অংশগ্রহণকারীদের।

মণিপুরকেই কেন যাত্রা শুরুর জন্য বাছলেন তাঁরা? এই প্রশ্নের উত্তরে কেসি ভেনুগোপাল জানিয়েছেন, মণিপুর দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ—এই বার্তা দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য। মণিপুরের সমস্যাকে ভারতের সমস্যা হিসেবে দেখতে চাইছেন তাঁরা। পাশাপাশি, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির ক্ষত নিরাময় করতে চাইছে কংগ্রেস। সেই উদ্দেশ্যেই এই যাত্রার শুরু মণিপুরে। কুকি এবং মেইতেই কৌমের মধ্যে যে অমানবিক হিংস্র হানাহানির সাক্ষী থেকেছে মণিপুর, গোটা বিশ্বে তেমন নজির খুব কম রয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন দু'শো মানুষ। এ বছর ৩ মে, হিংসা ছড়ানোর পর থেকে বাস্তুহারা হয়েছেন প্রায় ৬০০০০ জন।

আরও পড়ুন: মোদির সংকটে ‘পাশে আছি’! দেশকে ভালোবাসার নতুন পাঠ শেখাচ্ছেন রাহুল গান্ধী

কংগ্রেসের বক্তব্য, ভারত জোড়ো যাত্রা যাত্রা-র মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্য, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ, স্বৈরাচারের দিকগুলি তুলে ধরেছিলেন রাহুল। এবার তাঁর লক্ষ সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সুবিচার আদায়। তাই যাত্রার নাম 'ভারত ন্যায় যাত্রা'। দলের প্রতিষ্ঠাদিবস পালনে নাগপুরে একটি 'হ্যায় তৈয়ার হাম' মিছিলেরও ব্যবস্থা করেছে তারা।

More Articles