২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফল কী, একবাক্যে যা জানালেন প্রশান্ত কিশোর
BJP Lok Sabha Polls 2024 : বিজেপিও ক্ষমতার জন্য যে কোনও দলকে একইভাবে ব্যবহার করতে জানে। বিজেপির এই চর্চা আরও গভীরে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল কী হবে? অনেকে এখন থেকে আন্দাজ করতে পারছেন। কেউ কেউ আন্দাজ করেও তা বিশ্বাস করতে চাইছেন না, কেউ কেউ এখনও 'মির্যাকল' প্রত্যাশী। কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ইন্ডিয়া জোট ত্যাগ করে এনডিএ-তে ফিরে যাওয়াতে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের অবস্থা যে সঙ্কটে তা সকলেই বুঝতে পারছেন। মমতা পাশে নেই, নীতীশ নেই, বাকিদলগুলির মধ্যেও যূথবদ্ধতা নেই। তাহলে কীভাবে বিজেপির বিরোধিতা সম্ভব? সম্ভব যে নয় তার ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। প্রশান্ত কিশোর জোর দিয়েই বলেছেন যে বিজেপিকে থামানো 'মুশকিল হি নেহি, না মুমকিন হ্যায়'। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিশাল মার্জিনে জিতবে।
এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর নীতীশ কুমারের নিন্দা করেন বিরোধী জোট ভেঙে বিজেপিতে চলে যাওয়ার জন্য। আরজেডি এবং কংগ্রেসকে নিয়ে গঠিত 'মহাগঠবন্ধন' ভেঙে এই মুহূর্তে চলে যাওয়া অনৈতিক বলে মনে করছেন পিকে। বিশেষ করে নীতীশের জীবনের এই 'শেষ ইনিংস'-এ। ২০২৪ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে এভাবে বিরোধীদের ঠকিয়ে বিজেপি শিবিরে যাওয়া নীতীশ কুমারকে 'ধূর্ত' বলেই মনে করছেন প্রশান্ত। প্রশান্ত কিশোরের দাবি, জেডি(ইউ) ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২০টিরও বেশি আসন জিততে পারবে না।
প্রশান্ত ওই সাক্ষাৎকারে বলছেন, "নীতীশ কুমার আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ২০টির বেশি আসনও জিততে পারবেন না, সে তিনি যে জোটের পক্ষেই লড়ুন না কেন। যদি জেডিইউ ২০টির বেশি আসন পায়, তাহলে আমি চাকরি ছেড়ে দেব।"
আরও পড়ুন- ভারতরত্ন দেওয়াতেই লুকিয়ে আসল খেল? কীভাবে কর্পুরী ঠাকুরের পথে হাঁটলেন নীতীশ কুমার?
বেশ কিছুকাল ধরেই নীতীশের টলমলে অবস্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল বিরোধী শিবিরে। অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে রবিবার নীতীশ কুমার রবিবার 'মহাগঠবন্ধন' ছিন্ন করে, আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন, নবমবার এনডিএ জোটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। জেডি(ইউ) সুপ্রিমো নীতীশ ২০২২ সালের অগাস্টেই এই মহাগঠবন্ধনে যোগ দিয়েছিলেন। সেবার তিনি বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে এই জোটে আসেন। তখন তিনি বলেছিলেন বিজেপি তাঁর জেডিইউকে ভাঙার চেষ্টা করার অভিযোগ এনেছিলেন।
বিজেপিও ক্ষমতার জন্য যে কোনও দলকে একইভাবে ব্যবহার করতে জানে। বিজেপির এই চর্চা আরও গভীরে। বিজেপির এবার, অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনে যে দাপটে আসতে চলেছে বলে তিনি মনে করছেন, তাতে জেডিইউয়ের অস্তিত্বই না সঙ্কটে পড়ে। প্রশান্ত কিশোর দাবি করছেন, জেডিইউ-বিজেপি জোট ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচন অবধিও টিকবে না। জনগণ এই মুহূর্তে নীতীশকে প্রত্যাখ্যান করেছে। অথচ নীতীশের মতো মানুষ পর ও ক্ষমতা ছাড়া বাঁচতে পারেন না, ফলে নিজের গদি বাঁচাতে তিনি এই সময় যা খুশি করতে পারেন।"
বিহারে বিজেপি সফলভাবেই বিরোধী স্বরকে গিলে ফেলতে পেরেছে। বিরোধী ইন্ডিয়া জোটকে ধ্বংস করার জন্য বিজেপির এই পদক্ষেপ সফল। তবে পিকে বলছে, বিজেপি যদি এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত, তবে ক্ষমতাসীন বিজেপির জন্যই বেশি সুবিধা হতো। "বিহারে শুধু নীতীশ কুমার নয়, বিজেপি সহ সব দলই 'পল্টুরাম'। এই বিষয়টি আখেরে বিজেপিরই," বিশ্লেষণ পিকের।