পিৎজা, পাস্তার ভিড়ে আজও সমান জনপ্রিয় বাঙালির ফুচকা, জানেন ইংরেজিতে কী বলে একে?

English Name of Fuchka : ফুচকা ছাড়াও গোলগাপ্পা, ফুলকি, টিক্কি, পানি কে বাতাসে, গুপচুপ, বাতাসি, পাকাডা, পানিপুরি কিংবা পাকোরি-সহ নানা নামে তাকে ডাকা হয় বিভিন্ন প্রদেশে। তবে এসব নামের মধ্যে ইংরেজি নাম তো একটাও নয়। জানেন...

“কাকু একটা ফাউ দাও”, কথাটা শুনলে প্রথমেই কোন খাবারের কথা মনে আসে বলুন তো? বাঙালির এমন যেচে ফাউ খাওয়ার সাধ পূরণ করতে পারে একমাত্র ফুচকাই। কোথাও গোলগাপ্পা, কোথাও আবার পানিপুরী, সারা ভারতে একাধিক নামে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই খাবারটি। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ফুচকার সূত্রপাত নিয়ে দুটি ভিন্ন মত উঠে আসে। একটি পৌরাণিক এবং অন্যটি ঐতিহাসিক।পৌরাণিক মতে, মহাভারতের সময়েও উল্লেখ ছিল ফুচকার। মহাভারতে দ্রৌপদীর হাতেই এর প্রথম শুরু।

পান্ডবরা পাশা খেলায় হেরে যখন নির্বাসনে ছিলেন এরকম একদিনের কথা। হেঁশেল বাড়ন্ত। এরকম সময় শাশুড়ি কুন্তী আগের দিনের বেঁচে যাওয়া কিছুটা আলুর তরকারি আর কিছুটা আটার মন্ড দিয়ে বৌমা দ্রৌপদীকে বললেন এমন কিছু খাবার বানাতে যা পঞ্চ-পাণ্ডবকে সমানভাবে তৃপ্ত করবে। এই কাহিনীর সূত্র ধরেই আবিষ্কার হয় চিরকালের প্রিয় খাবার ফুচকার। কুন্তীর চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে দ্রৌপদী সেই আটার মন্ডটাকে সমানভাবে ভাগ করে তার মধ্যে আলুর পুর ভরে ফুচকা বা ফুলকা আবিষ্কার করেন।

আরও পড়ুন - ‘গা-মোছা’ থেকেই কি এসেছে ‘গামছা’? ইংরেজিতে কী বলে একে? উত্তর শুনলে অবাক হবেন আপনিও

যদিও উপরিউক্ত পৌরাণিক ব্যাখ্যা ছাড়াও ইতিহাসে আরও একটি ভিন্ন মতের উল্লেখ মেলে ফুচকার আবিষ্কার নিয়ে। মনে করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে মগধ রাজ্য অর্থাৎ আজকের পশ্চিম-মধ্য বিহার অঞ্চলে প্রথম তৈরি করা হয় ফুচকা খাবারটির। অন্যদিকে বিশিষ্ট ঐতিহাসিক, পুষ্পেশ পান্থের মতে, গোলগাপ্পা উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের আশেপাশে আজ থেকে প্রায় ১০০-১২৫ বছর আগে উদ্ভূত হয়েছিল। সেসময়ের প্রচলিত পদ রাজ-কচৌরি থেকে গোলগাপ্পা তৈরি হয়েছিল বলেও মনে করেন অনেকে।

একটা সময় পর্যন্ত ফুচকা বলতে ছিল বিভিন্ন মশলা দিয়ে মাখা আলুর পুর ভরে তারপর তাকে তেঁতুল জলে চুবিয়ে পরিবেশন করা। তবে সময়ের সঙ্গে প্রচলিত সেই খাবারে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তেতুল জলের পরিবর্তে দই, বিভিন্ন ধরনের মিঠা সস অথবা অন্যান্য কিছু সহযোগে পরিবেশন করা হয় এটি। সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল অভিনব একটি ফুচকার ধরন। সেখানে আলুর পুরের সঙ্গে তেঁতুল জল অথবা দই -এর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছিল আমের পাল্প।

ফলে যতোই উৎপত্তি নিয়ে মতবিরোধ থাকুক খাবারের জনপ্রিয়তা এসবের ধার ধারে না। আজ কেবল বাংলা নয়, ভারতের সর্বত্র ভিন্ন ভিন্ন নামে স্বাদের দুনিয়ায় পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে ফুচকা। কৃষ্ণের মতো অষ্টতর শতনাম না হলেও ফুচকারও অনেকগুলি নাম প্রচলিত রয়েছে এ যাবৎ। ফুচকা ছাড়াও গোলগাপ্পা, ফুলকি, টিক্কি, পানি কে বাতাসে, গুপচুপ, বাতাসি, পাকাডা, পানিপুরি কিংবা পাকোরি-সহ নানা নামে তাকে ডাকা হয় বিভিন্ন প্রদেশে। তবে এসব নামের মধ্যে ইংরেজি নাম তো একটাও নয়। জানেন ইংরেজিতে কী বলা হয় ফুচকাকে? জনপ্রিয় এই স্ট্রিট ফুডটির ইংরেজি নাম হল ফ্রায়েড হুইটেন কেক, কোথাও আবার ফ্রায়েড পাফ-পেস্ট্রি বলস, ওয়াটারি ব্রেড অথবা ক্রিসপ স্ফেয়া ইটেন নামেও অভিহিত করা হয় এই জনপ্রিয় খাবারটিকে।

More Articles