'ভয়ংকর খেলা'র ডাক! জার্মানির রাক্ষুসে কামান এবার ইউক্রেনের ডেরায়, কতটা শক্তিশালী এটি?

Germany Leopard 2 tank Ukraine : আহ্বান জানানো হয়েছে সংঘর্ষ রোধের, কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। এবার খোদ জার্মানির পক্ষ থেকে ‘উপহার’ পৌঁছে গেল ইউক্রেনে।

‘খেলা হবে। ভয়ংকর খেলা হবে।’ বাংলার রাজ্য রাজনীতিতে এই স্লোগান এখন সবার মুখে মুখে ঘোরে। তবে এবার অবশ্য ‘খেলা হওয়ার ডাক’ এসেছে বাইরে থেকে। আন্তর্জাতিক মানচিত্র কি ২০২৩-এ বড়সড় ‘খেলা’ দেখবে? আপাতত সেরকমই ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে উত্তরে। সৌজন্যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। প্রায় এক বছর হতে চলল; এখনও কোনও পরিণতি দেখল না এই যুদ্ধ। বারবার আহ্বান জানানো হয়েছে সংঘর্ষ রোধের, কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। এবার খোদ জার্মানির পক্ষ থেকে ‘উপহার’ পৌঁছে গেল ইউক্রেনে।

জার্মানির শক্তিশালী কামান ‘লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক’ এবার পৌঁছে গেল ইউক্রেনে। সেখানকার সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার জন্য, এবং রাশিয়াকে পর্যুদস্ত করার জন্য বহুদিন ধরেই বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে ন্যাটো। বিশেষ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র সেই কাজে সবার আগে এগিয়ে এসেছে। নিজেদের অস্ত্র তারা ইউক্রেনে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে। পেন্টাগনের তরফে প্রায় ২৫০ কোটি ডলার সামরিক সাহায্যের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ৩০টি অত্যাধুনিক এম-১ আব্রামস (M1 Abrams Tank) কামানও পাঠানোর কথা। সেইসঙ্গে ব্রিটেনও ইতিমধ্যেই নিজেদের চ্যালেঞ্জার টু কামান ইউক্রেনে পাঠিয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন : যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে গিয়ে শ্যুটিং? যেভাবে ‘RRR’-র গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি

তবে আমেরিকা সহ ন্যাটোর অন্যান্য দেশের বক্তব্য ছিল, ইউক্রেনের জন্য আদর্শ কামান হল জার্মানির শক্তিশালী লেপার্ড ২। আমেরিকা নিজের অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বলীয়ান করছে ইউক্রেনকে। কিন্তু জার্মানির ওই বিশেষ অত্যাধুনিক কামান থাকলে অনেক সুবিধাই হবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু জার্মানি এতদিন সেই প্রস্তাবে সায় দেয়নি। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক। রাশিয়ার গ্যাসের ওপর জার্মান প্রশাসনের অনেকটা নির্ভরতা থাকায় তারা পা ফেলতে ভয় পাচ্ছিল।

কিন্তু ন্যাটো গোষ্ঠীভুক্ত মিত্র দেশগুলির কথা অনুযায়ী শেষমেশ রাজি হয়েছে জার্মানি। চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ জানিয়েছেন, ১৪ টি লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে পাঠানো হবে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশকেও কামান পাঠানোর আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু কেন লেপার্ড ২ কামান নিয়ে এত হইচই? কারণ, ইউক্রেন সেনাদের হাতে এই কামান এলে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে যাবে রাশিয়া।

আরও পড়ুন : দরিদ্র অন্তত ৪০ লাখ! অন্ধকার ভবিষ্যতের সামনে ইউক্রেনের একরত্তি শিশুরা

৬৭ টনের এই কামান রাশিয়ার কামানগুলির থেকে বেশ ভারী। চারজন সেনা এর ভেতর বসতে পারেন। সেইসঙ্গে রয়েছে ১২০ মিলিমিটার অ্যামুনেশন। সুরক্ষার জন্য মাল্টি লেয়ারড সিস্টেম রয়েছে। দূরপাল্লায় নিশানা করে শত্রুপক্ষকে দুরমুশ করতে পারে এই লেপার্ড ২। পাশাপাশি রয়েছে বিশেষ অটোক্যানন বা স্বয়ংক্রিয় কামান, যা যে কোনও ড্রোন, বিমান হামলা প্রতিহত করতে পারবে।

এতকিছু থাকার জন্য রাশিয়ার ড্রোন হামলাকেও প্রতিহত করা যাবে। সেইসঙ্গে রাশিয়ার কামানের প্রত্যুত্তরও দেওয়া যাবে। লেপার্ড ২-র সঙ্গে ব্রিটেনের ‘চ্যালেঞ্জার’ ও আমেরিকার ‘এম-১ আব্রামস’ একসঙ্গে হলে ইউক্রেনের পাল্লা যথেষ্ট ভারী হবে। বিপদে পড়বে রাশিয়া। তবে এভাবে একের পর এক দেশের সামরিক সাহায্য কি ভবিষ্যতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করছে? রাশিয়াকে সাহায্য করতে চিনের মতো দেশও কি ময়দানে নামতে পারে? ভয়ংকর যুদ্ধের প্রহর গোনার পালা কি শুরু? সেই ভয়ই করছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি মহল।

More Articles