পতিতাপল্লী থেকে বেতারের গান, আপন আভায় আলোকিত যে ইন্দু
Indubala: মায়ের কাছে কন্যা ইন্দুবালারও সঙ্গীতে হাতেখড়ি হল। যদিও তাঁর ইচ্ছা ছিল মেয়ে লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হবে। ইন্দুকে তিনি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন। মেয়ে লেখাপড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিখতে লাগল গান।
‘এসব কী শুনছি ? এরপর থেকে রেডিয়োতে নাকি শুধু ভদ্রলোকের মেয়েরা গান গাইবে?’ কথাটা বলে বড় একটা শ্বাস টানলেন প্রশ্নকর্ত্রী।। স্বভাব-মধুর গলা দারুণ রাগ আর বিস্ময়ে থমথমে। কথা বলতে বলতেই রেডিয়োর নতুন ডিরেক্টর জেড এ বুখারির ঘরে বিনা অনুমতিতে দরজা খুলে ঢুকে পড়লেন মহিলা। বুখারি তখন কথা বলছিলেন সহকর্মী প্রভাত মুখার্জির সঙ্গে। মহিলাকে দেখে অবাক হয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘হু ইজ সি? উনি কে?’ মুখার্জি কিছু বলার আগেই। শান্ত প্রত্যয়ী গলায় উত্তর এলো, ‘মাই নেম ইজ মিস ইন্দুবালা। রেডিয়োতে এতদিন ধরে গান গাইছি। এর দখল নিতে দেবো না কাউকে। রেডিয়ো আমাদের।‘ অবাক বুখারির সামনে ইন্দুবালা বসে পড়লেন পানের বাটা নিয়ে। বললেন, ‘আমি মহীশূর রাজের সভাগায়িকা। আমাকে বেশি ইংরেজি দেখিয়ো না সাহেব।’ সেইদিনই পান খাইয়ে, মৈজুদ্দিনের ঠুংরি শুনিয়ে বুখারিকে একেবারে মুগ্ধ করে দিলেন তিনি। তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। গণিকাসংস্কৃতির ম্লান হয়ে আসা ছোঁয়া তখনও লেগে কলকাতার গায়ে। নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন রেডিয়োতে। বুখারি চেয়েছিলেন শিল্পীদের মধ্যে থেকে ঝাড়াই-বাছাই করে এই মেয়েদের বেতারে অনুষ্ঠান বাতিল করতে। কিন্তু দারুণ প্রতিস্পর্ধায় বেঁকে বসলেন ইন্দুবালা। তিনি দেহপসারিনী। কিন্ত তিনি গায়িকাও। আর সেই পরিচয় সকলের বড়। গৃহস্থ ঘরের মেয়েদের গানের জমি ছাড়তে নারাজ ইন্দুর দাবির কাছে কাছে নত হলেন বুখারি। বেতার কেন্দ্রের দরজা এরপর আর কখনও বন্ধ হয়নি তাঁর জন্য।
কী পারতেন না ইন্দুবালা! একাধারে তিনি মঞ্চাভিনেত্রী, গায়িকা, চিত্রতারকা। অজস্র সিনেমায় অভিনয় করেছেন। আঙুরবালা , কমলা ঝরিয়ার সঙ্গে সঙ্গে গানের জগতে তাঁর নাম লোকের মুখে মুখে ফিরত । নজরুল তাঁকে নিজের গান তুলিয়ে দিতেন । অথচ যে জায়গা থেকে উঠে এসেছিলেন ইন্দু, সে বড় অন্ধকার। তাঁর দিদা পুঁটি বোষ্টমীর বিয়ে হয় মুখার্জি পরিবারের এক ব্যক্তির সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই পুঁটির স্বামী মারা যান। অসহায় পুঁটিকে আশ্রয় দেন পাথুরিয়াঘাটার মুরলী আঢ্য নামে এক ধনবান ব্যক্তি। তিনি পুঁটিকে দু'টি বাড়িও দিয়ে যান। তাঁদের ১৫টি সন্তানের মধ্যে জীবিত ছিল হরিমতী, মতিবালা, তিনকড়ি ও রাজবালা। রাজবালার যখন চারমাস, মারা গেলেন পুঁটিও। নিরাশ্রয় হয়ে পড়ল বাচ্চাগুলি। সেই সময় কলকাতায় খেলা দেখাচ্ছে দ্য গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস। পেটের দায়ে সেই তিন শিশু যোগ দিল সেখানে। এরই মধ্যে রাজবালাকে বিয়ে করলেন সার্কাসের মালিক মতিলাল বোস। মতিলাল বোস সার্কাসকে এক নতুন দিগন্ত দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক মনমোহন বসুর পুত্র। মতিলাল আগেই বিবাহিত হওয়ায় রাজবালার সঙ্গে তাঁর বিয়ে মেনে নেয়নি পরিবার। বিয়ের ঠিক ছ'মাস উনিশ দিন পরে নিতান্ত অল্প বয়সে ইন্দুবালার মা হলেন রাজবালা। সন্তান জন্মানোর পর রাজবালার সার্কাসে আর কোনও আগ্রহই রইল না। তাঁর যাবতীয় উৎসাহ তখন ছিল সঙ্গীতে। এর ফলে মতিলালের সঙ্গেও তৈরি হল দূরত্ব। অথচ গানের প্রাথমিক শিক্ষা তাঁকে দিয়েছিলেন মতিলালই।
আরও পড়ুন: বাইজি গলি থেকে মুম্বই শাসন! ভারতের প্রথম দুই মহিলা সুরকারকে ভুলেছে সিনেমা
মায়ের কাছে কন্যা ইন্দুবালারও সঙ্গীতে হাতেখড়ি হল। যদিও তাঁর ইচ্ছা ছিল মেয়ে লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হবে। ইন্দুকে তিনি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন। মেয়ে লেখাপড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিখতে লাগল গান। রাজবালা আসরে যে গান গাইতেন, মেয়ে তুলে নিত গলায় । এভাবেই কাটতে লাগল ইন্দুর শৈশব। ১৩ বছর বয়সে ওস্তাদ লছমী মিশ্রর ভাই গৌরীশঙ্করজির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে গান শেখা শুরু হল ইন্দুর। ওস্তাদ গৌরীশঙ্কর সম্পর্কে ইন্দুবালা জানিয়েছেন— ‘‘আমাদের বাড়িতে লছমী মিশ্র আসতেন। তাঁরই উদ্যোগে তাঁর ভাই শ্রীযুক্ত গৌরী শঙ্করজি, শুধু যে বড় ওস্তাদ ছিলেন তাই নয়, মেজাজেও ছিলেন বড় কড়া। অসামান্যা গওহরজানের সঙ্গে সারেঙগী বাজাতেন। সারা ভারতবর্ষ চষে বেড়াতেন। অত বড় গুণী-যিনি, তিনি কি আমার মত সামান্য বালিকাকে এক কথায় গান শেখাতে রাজী হন? আমার মা'র আমন্ত্রণে এলেন বটে, আমার গানও শুনলেন, শেখাতেও রাজি হলেন; কিন্তু আশ্চর্য এক শর্তে । মাকে বললেন, আমি তোমার মেয়েকে শেখাতে পারি। কিন্তু তোমায় আমার পৈতে ছুঁয়ে শপথ করতে হবে, আমি না বলা পর্যন্ত তোমার মেয়েকে সারেগামা সাধতে হবে, অন্য কোনও কিছু রেওয়াজ করার চেষ্টা যেন না করে।” মা শপথ করলেন। দীর্ঘদিন শুধুই সারেগামা রেওয়াজ করার পর গুরুজির কাছে প্রথম ইমন রাগ শিখলেন ইন্দু। বাঁশরি মোরী মোরা জিনা ছুঁয়ো”। সে গান আত্মায় বসে গেল গায়িকার। আরও গান শিখতে শিখতে গৌরীশঙ্করজীর বাড়িতে জন্মাষ্টমীর উৎসব চলে এল। কিন্তু সেখানে ইন্দুকে গান গাইতে দিলেন না তাঁর গুরু। বললেন রূপ দিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করার মতো রূপসী সে নয় । আর শুধু গানে মুগ্ধ করার মতো দক্ষতা এখনও হয়নি তাঁর। পরের বছর ইন্দু এই অনুষ্ঠানেই গান গাইলেন গওহরজান, আগ্রাওয়ালী মালকা, নুরজাহান, বেনজীর, লখনউওয়ালী , মনুয়াবাঈদের সামনে। গওহর জান সেই গানে এতটাই মু্গ্ধ হলেন যে তাঁকে শিষ্যা করে নিলেন। প্রথম দিনেই শেখালেন ভূপালী টপ্পা আ ‘মিলে ম্যাহরাম ইয়ার’। শুধু গান নয় গওহরের কাছে শিখলেন তওয়াইফের আদব-কায়দাও। কিন্তু এই খবর যখন গুরুজির কাছে পৌঁছল তিনি এতটাই ক্ষিপ্ত হলেন যে বাধ্য হয়ে গওহরের বাঁধা নাড়া জ্বলিয়ে দিতে হল ইন্দুকে। যদিও ততদিনে গওহরের শিক্ষা আর সান্নিধ্য গভীর প্রভাব ফেলেছে শিষ্যার ওপর। ১৯১৬ তে ইন্দুবালার প্রথম বাংলা গান রেকর্ড হল ‘ও তুমি এসো হে’ আর ‘ওরে মাঝি তরী হেথা’। দু'টি গানই প্রবল জনপ্রিয় হল। রেকর্ড হাতে পাওয়ার পর আর এক মুশকিল! তাঁর কাছে তো গ্রামাফোন তো নেই। তবে নিজের গান শুনবেন কীসে? রাগে-দুঃখে সেই রেকর্ড মাটিতে আছড়ে ভেঙে ফেললেন ইন্দু। শেষে গ্রামাফোন কোম্পানি একটা বিরাট গ্রামাফোন উপহার দেয় তাঁকে। গানের সূত্রেই পরিচয় হলো গিরীণ চক্রবর্তী, কমল দাশগুপ্ত, কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে। আগে কোনও গায়ক-গায়িকা এইচএমভি-তে হিন্দি বা উর্দু গান রেকর্ড করতে পারতেন না। এর প্রতিবাদে কোম্পানির বিরুদ্ধে অনশনে বসেন ইন্দুবালা। শেষে বাধ্য হয়ে ‘জগ ঝুটা সারা সঁইয়া’ এবং আরও একটি গান রেকর্ড করতে দেওয়া হল তাঁকে। কোম্পানি ভেবেছিল গান দু'টো ভালো ভাবে গ্রহণ করবেন না শ্রোতামহল। কিন্ত সে গান এতটাই জনপ্রিয় হল যে বিস্মিত হতে হল কর্তাব্যক্তিদের। সেই থেকে হিন্দিতে গান গাওয়ার সুযোগ পেতে লাগলেন বাঙালিরাও।
নজরুলের সঙ্গে এক আশ্চর্য রসায়ন ছিল ইন্দুবালার। বয়সে ছ'মাসের ছোটো ইন্দুকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন নজরুল। নিজের বহু গান বসে থেকে ইন্দুবালার গলায় তুলিয়েছেন তিনি। তাঁর কথা বলতে গিয়ে ইন্দু বলেছেন, ‘কাজীদা ছিলেন বাংলা গানের ট্রেনার। চুপটি করে বোস— বলেই কাজীদা যে কত তাড়াতাড়ি গান লিখে ফেলতে পারতেন তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। শুধু কি লেখা, সঙ্গে সঙ্গে সুরও দিয়ে দিতেন । এ এক অসামান্য প্রতিভা । কাজীদার গানের আমার প্রথম রেকর্ড “রুম ঝুম রুম ঝুম” আর “চেয়ো না সুনয়না” । ১৯২৬ সালে রেডিয়োয় কলকাতা কেন্দ্র থেকে যেদিন অনুষ্ঠান প্রচারিত হল, তার দ্বিতীয় দিনেই রেডিয়োতে গাইবার ডাক পেলেন ইন্দু। তাঁর কথায়, ‘সেদিন কি পাগলামিই না করেছিলাম । রেডিওয় যাব, গান গাইব; ভাবলাম, খুব বুঝি সেজে গুজে যেতে হবে। খুব করে সাজলাম। রেডিও থেকে গাড়ী এসে নিয়ে গেল। গাড়ী থেকে নাবতেই নৃপেনদার একেবারে মুখোমুখি। আমার সাজের ঘটা দেখে নৃপেন দা হো-হো করে হেসে বললেন, “ওরে ইন্দু সেজে গুজে মুজরো করতে এসেছে”।‘ এরপর দীর্ঘ সময় ধরে বেতারে তাঁর গান মাতিয়ে রেখেছে শ্রোতাদের। 'মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর', 'অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে', 'দূর দ্বীপবাসিনী' অথবা 'মোহে পনঘট পে নন্দলাল'— যে গান গেয়েছেন তিনি, তা-ই হিট হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় গান শোনানোর আমন্ত্রন জানানো হত তাঁকে। মহীশূরের রাজদরবারে তাঁর গান এতোটাই জনপ্রিয়তা পায় যে মহীশূর-রাজ তাঁকে সভাগায়িকা করে নেন।
এর সঙ্গে মঞ্চে এবং সিনেমায় অভিনয়ও করেছেন। তাঁর মা রাজবালা থেকে শুরু করে গুরুজি, ইন্দুর রূপের অভাবের কথা বলেছিন বহুবার। অথচ অতুলনীয় গুণী এই মেয়েটি বারবার দর্শককে ভুলিয়ে দিয়েছেন তার রূপের অভাবের কথা। ১৯২২ সালে 'দ্য রামবাগান ফিমেল কালী থিয়েটার'-এ তাঁর অভিনেত্রী জীবনের শুরু। এরপর স্টার বা মিনার্ভাতেও কাজ করেছেন তিনি। সিনেমাতে প্রথম অভিনয় 'যমুনা পুলিন' ছবিতে। তারপর প্রায় ৪৮টি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। যার মধ্যে ছিল 'নলদময়ন্তী', 'বিল্বমঙ্গল' 'মীরাবাই' সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবি। দেশের এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে গান গাইতে যাননি ইন্দু। পতিতাপল্লীতে বাড়ি কিনেছেন, ১৯৩৩ সাল নাগাদ। মাত্র ১৬ বছর বয়সে সন্তান প্রসব করার সময় মারা যায় শিশুটি। যে পুরুষের সঙ্গে থাকতেন, তিন বছর সংসার করার পর সেই পুরুষ পরিবারের চাপে ইন্দুকে ছেড়ে চলে যান। মা ঠাকুমা যাঁর পেশাদার গণিকা, যে মেয়ে নিজেও এক পুরুষের সঙ্গে থিতু নয়, সেই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক মানা কঠিন ছিল সেটা বুঝে, মেনে নিয়েছিলেন ইন্দু। অনেক পরে হাড়কাটা গলিতে পুলিশি ধড়পাকড় আটকাতে বহু বিখ্যাত মানুষের দোরে দোরে ঘোরেন ইন্দুবালা। কাজের কাজ কিছু না হওয়ায় তৈরি করলেন নারী সমিতি। সে যুগের দাঁড়িয়ে যা ছিল অভাবনীয়। এর আগে অবশ্য কংগ্রেসের অধিবেশনে মঞ্চে বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। বাড়ি বোঝাই বই আর নিয়মিত ডায়েরি লেখার অভ্যাস রাখা মেয়েটির কাছে কিছুমাত্র কঠিন ছিল না এই কাজ।
আরও পড়ুন: কেমন ছিল পুরীর মন্দিরের দেবদাসীদের জীবন…
ইন্দুবালা যখন যা কিছু করেছেন, তার সমালোচনা যেমন হয়েছে, প্রশংসাও হয়েছে অশেষ। এইচএমভির কাছ থেকে পুরস্কার, ভুরি ভুরি সম্মান, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির পুরস্কার কি তিনি পাননি? যেখনে গিয়েছেন সেখানকার বিববরণ দিয়েছেন নিজের লেখায়। তিনি সেই সময় নিজের সঙ্গীর কথা লিখতেন, “আমার উপস্থিত বাবু’’…। ১৯৪৯ নাগাদ এক জবাবি চিঠিতে আর এক বিখ্যাত শিল্পী আঙুরবালা ইন্দুকে লিখলেন, ‘আজকের এই বরষা দিনে তোমার সঙ্গসুখ লাভে বঞ্চিত হয়ে দুঃখিত অপেক্ষা বেশি আনন্দিত হইলাম। তোমার বাদলধারা ও বোতলধরার সম্মিলিত সংবাদে। আমার নতুন ভগিনীপতিকে প্রণাম দিলাম’। এক তথাকথিত সমাজচ্যুতার আর এক স্বগোত্রীয়কে লেখা এই চিঠিতে বোঝা যায় জীবনের প্রাচুর্যে ভরপুর ছিলেন দুই সখী। বস্তুত নিজের পরিচয়, জীবনধারা লুকানোর কোনও চেষ্টাই কোনওদিন করেন নি ইন্দুবালা। বিখ্যাত হওয়ার পর ইচ্ছা করলেই তিনি পূর্বপরিচয় মুছে কোনও অভিজাতপল্লীতে উঠে যেতে পারতেন । তাঁকে সেই পরামর্শ দিয়েও ছিল অনেকে। কিন্তু সেই চেষ্টাও তিনি করেননি। বলতেন, পাড়া বদলে নামের শেষে ‘বালা’ বাদ দিয়ে ‘দেবী’ তিনি রাখতে পারবেন না।। কারণ জন্মসূত্রে সেটাই তাঁর পরিচয়। ইন্দুর ইঙ্গিত সম্ভবত ছিল সুচিত্রা-পূর্ব যুগের বাংলা ছায়াছবির স্টার অভিনেত্রী এবং গায়িকা কানন দেবীর প্রতি। আসলে বারাঙ্গনা পাড়ায় বাঁচতে এবং সেখানেই মরতে চেয়েছিলেন তিনি। নিজের জীবন-জীবিকা সম্পর্কে খোলামেলা কিন্তু দারুণ দাঢ্যে, নিজ অবস্থানে স্থির ইন্দুবালা রামবাগানের নিষিদ্ধ পল্লীতেই জীবনের শেষ দিনগুলি কাটিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালের ৩০ নভেম্বর নিভে যায় আলোকিত সেই ইন্দু। কিন্তু সেই চন্দ্রমার আভা থেকে গেল আজীবন।