ফিলিস্তিনি কণ্ঠস্বরকে চেপে রাখছে ফেসবুক, টিকটক! কতটা সত্যি মালয়েশিয়ার অভিযোগ?
Israel-Hamas war: ইচ্ছা করেই প্যালেস্টাইনের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা করছে মেটা। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ এনেছে মালয়েশিয়ার কমিউনিকেশন মন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল।
ইজরায়েলের মারাত্মক আগ্রাসনে ছাড়খার গাজা। রাষ্ট্রপুঞ্জে ১২০টি দেশের ভোট পেয়ে পাশ হয়েছিল যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব। তবে সেই শান্তি প্রস্তাবের পরোয়া না করেই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহু সেনা। এই যুদ্ধ নিয়ে গোড়া থেকেই দ্বিধাবিভক্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি। আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো বহু শক্তিশালী দেশই প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে। এবার সেই যুদ্ধের আবহে সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট মেটার বিরুদ্ধে উঠল গুরুতর অভিযোগ। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মার্ক জুকেরবার্গের সংস্থা মেটা নাকি ফিলিস্তিনিপন্থী কনটেন্টকে ব্লক করে দিচ্ছে। ইচ্ছা করেই প্যালেস্টাইনের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা করছে মেটা। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ এনেছে মালয়েশিয়ার কমিউনিকেশন মন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল। একই অভিযোগ উঠেছে চিনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটকের বিরুদ্ধেও। ফিলিস্তিনিদের সমস্যা, তাদের পরিস্থিতির কথা চেপে রাখার চেষ্টা হচ্ছে ওই সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে। অবিলম্বে এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ না করলে সোশ্যাল মিডিয়াগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি।
আরও পড়ুন: ইজরায়েলের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব অবস্থান! কেন বলিভিয়ার পথে হাঁটছে না অন্য দেশগুলি?
ফিলিস্তিনিদের কথা ইচ্ছা করে চেপে রাখার চেষ্টা করছে এই সব সোশ্যাল মিডিয়াগুলি। এমনকী ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে কথাবার্তাকেও ব্লক করে দিচ্ছে এই সব সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্টগুলি। সোশ্যাল মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ ফাডজিল হুমকি দিয়েছেন, ব্যাপারটি যদি অবহেলা করা হয়, তারা কঠিনতর পদক্ষেপ করতে দুবার ভাবে না। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি পক্ষই সরকারের কাছে আবেদন করেছে ইতিমধ্যেই। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ফিলিস্তিনিপন্থী কনটেন্ট ব্লক করার অভিযোগ এনেছে তারাও। তবে সেই সব পক্ষ কারা, তা প্রকাশ করেননি মন্ত্রী।
আগামী সপ্তাহেই টিকটক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে মালয়েশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রীর। কিছু দিন আগেই ফাহমি জানিয়েছিলেন, মালয়েশিয়ার আইনের সঙ্গে পুরোপুরি সম্মত নয় টিকটক। ফেসবুক, টিকটকের মতো সোশ্য়াল মিডিয়াগুলিতে আপত্তিজনক এবং মানহানিকর এমন অনেক কনটেন্টই রয়েছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিপন্থী বিষয়আশয়কে আমল দেওয়া হচ্ছে না সেখানে।
যদিও মালয়েশিয়ার সমস্ত অভিযোগই উড়িয়েছে মেটা। মার্ক জুকেরবার্গের সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, তাঁদের নীতিগুলোকে এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে, যাতে সেখানে সমস্ত ব্যবহারকারী সুরক্ষিত থাকে। এবং প্রত্যেককে আলাদা করে কণ্ঠস্বর ও প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার চেষ্টা করে ফেসবুক। যদিও টিকটক এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মতামত জানায়নি।
আরও পড়ুন: গাজা, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক জুড়ে রাতভর ইজরায়েলি অভিযান, দীর্ঘ হচ্ছে শবদেহের মিছিল
মুখে যে যাই বলুক, ফিলিস্তিনি জঙ্গি সংগঠনগুলিকে কিন্তু অনেকদিন ধরেই নিষিদ্ধর তালিকায় রেখেছে তারা। মেটা এবং টিকটক, দুই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মই কিন্তু হামাসকে বিপজ্জনক সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইতিমধ্যেই। এবং হামাসপন্থি কনটেন্টকে নিষিদ্ধ করেছে। ফলে হামাসের পতাকা বা ওই ধরনের ভিস্যুয়ালগুলির ক্ষেত্রে ফেসবুক স্বয়ংক্রিয় ভাবে চিহ্নিত করে তা বন্ধ করে দেয় মেটার মতো সংস্থাগুলি। গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর ৮ লক্ষ হিব্রু আর আরবি কনটেন্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে মেটা। ওই হামলার পর থেকে ৭,৭৫০০০ ভিডিও ও ১৪ লক্ষ লাইভস্ট্রিম সরিয়ে নিয়েছে টিকটকও। মালয়েশিয়ার হুঁশিয়ারির পর এ নিয়ে সত্যিই কোনও পদক্ষেপ করে কিনা এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট সংস্থাগুলি, সেটাই দেখার।