গাজাকে ঘিরে ফেলেছে ইজরায়েল সেনা? কী অপেক্ষা করছে বাসিন্দাদের জন্য?

Israel-Palestine conflict: গত কয়েকদিনে গাজার প্রধান শহরগুলিকে ঘিরে ফেলেছে ইজরায়েলি সেনা। সমস্ত রকমের যুদ্ধবিরতির ডাক অগ্রাহ্য করেছে তারা।

গাজা ভূখণ্ডকে একেবারে শেষ করে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ইজরায়েল। রাষ্ট্রপুঞ্জে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে যে তারা শুধু অগ্রাহ্য করেছে তাই নয়, তার পরেই আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার। গত কয়েকদিনে গাজার প্রধান শহরগুলিকে ঘিরে ফেলেছে ইজরায়েলি সেনা। সমস্ত রকমের যুদ্ধবিরতির ডাক অগ্রাহ্য করেছে তারা। বরং ক্রমশ দাঁতের চাপ বাড়াচ্ছে ইজরায়েল। আর গাজায় পাহাড় চড়ছে মৃত্যুসংখ্যা।

গাজার সমস্ত প্রধান শহর এখন ইজরায়েলি সেনা দিয়ে ঘেরা। ইজরায়েলের সেনা মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছে, মোটামুটি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরেই গাজায় পরিস্থিতি ঠিক এমনই। হামাসদের ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করা ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ইজরায়েলি সেনা। আর এই পরস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির কোনও ভাবনাই নেই বলেই জানিয়েছে ড্যানিয়েল।

আরও পড়ুন: ৫০ হাজার গর্ভবতী মহিলা যুদ্ধের শিকার! প্রিম্যাচিওর শিশুদের মৃত্যু দেখবে গাজা?

গত সপ্তাহেই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুঙ্কার দিয়েছিলেন, হামাসের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধে প্রবেশ করছে ইজরায়েল। আর তার পর থেকে ক্রমাগত আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েই চলেছে তারা। ৭ অক্টোবর ইজরায়েল থেকে বহু সাধারণ মানুষকে বন্দি বানিয়েছিল হামাস সেনা। তাঁদের তুলে আনা হয়েছিল গাজায়। প্রায় ২৫০ জনের কাছাকাছি বন্দি এখনও হাতে রয়েছে হামাসদের। তাদের মুক্তির জন্য নির্বিচারে গাজাবাসী হত্যা ছাড়া এখনও তেমন কিছুই করে উঠতে পারেনি ইজরায়েল সেনা। সম্প্রতি ইজরায়েল সেনার তরফে একটি সোশ্যাল মিডিয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, হামাসের হাতে বন্দিদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাদের অগ্রাধিকার। তবে একই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে যে ভবিষ্যতে হামাস যেন আর ইজরায়েলের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস না পায়।

Israeli troops advance toward Gaza City as the Palestinian death toll rises above 9,000

 

 

হামাসও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। পাল্টা হুমকি দিয়েছে তারাও। জানিয়ে দিয়েছে গাজার ছিটমহলে যে সব ইজরায়েলি সেনা প্রবেশ করবে, তাদের দেহ ফিরবে কালো ব্যাগে। তবে দু'পক্ষের এই হুঁশিয়ারি-পাল্টা হুঁশিয়ারির মাঝে শুধু শুধু মরে যাচ্ছে অসংখ্য গাজাবাসী। দিন দুয়েক আগেই যে মৃত্যুসংখ্যা ছুঁয়েছিল আট হাজারের সীমা, তা ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে ৯ হাজার। একের পর এক আকাশপথে হামলা চালিয়েই চলেছে ইজরায়েল। এমন ভাবে গাজাকে ঘিরে রাখা হয়েছে, যেখান থেকে বাঁচার রাস্তা নেই গাজাবাসীর। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিকতম হামলায় অন্তত ৪ জন ফিলিস্তিনির নতুন করে খবর মিলেছে।

 

এরই মধ্যে ফের ইজরায়েলে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে আমেরিকা। ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছেন মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে তিন-তিন বার ইজরায়েলে গেলেন তিনি। এই গোটা যুদ্ধপরিস্থিতিতেই নেতানিয়াহুর পাশে থেকেছে আমেরিকার রিপাবলিকান সরকার। ইজরায়েলকে সব রকম সাহায্য করারও চেষ্টা করছে তারা। বাড়ানো হয়েছে সাহায্যের পরিমাণও। আর বাইডেন সরকারকে পাশে পেয়ে আরও কোমর বেঁধে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছে ইজরায়েল।

আরও পড়ুন: ইজরায়েলের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব অবস্থান! কেন বলিভিয়ার পথে হাঁটছে না অন্য দেশগুলি?

গত ৭ অক্টোবরের পর থেকেই ইজরায়েলের লাগাতার হামলায় কোণঠাসা ফিলিস্তিনিরা। এখনও পর্যন্ত ৯,০৬১ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে গাজায়। আর এই সংখ্যাটা যে এখানেই থামার নয়, তা একরকম বলে দিচ্ছে ইজরায়েলের আগ্রাসন। ৭ অক্টোবর হামাসের আচমকা হামলায় অন্তত ১৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ইজরায়েলে। তার বদলা নিতে সেই থেকে যে ভাবে যুদ্ধের পারদকে চড়িয়েছে ইজরায়েল, তা কার্যত যুদ্ধের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ঠিক কতদূরে গিয়ে যে থামবে ইজরায়েলের এই ভয়ঙ্কর খিদে, তাও বোধহয় জানা নেই কারওর।

 

More Articles