জনসনের পাউডারে লুকিয়ে শিশুর বিপদ! কেন ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে সংস্থা?
Johnson & Johnson talc Cancer: প্রায় ৬২,০০০-এরও বেশি মানুষ দাবি করেছেন যে কোম্পানির ট্যালক থেকে ডিম্বাশয় এবং অন্যান্য গাইনোকোলজিক্যাল ক্যান্সার হয়েছে তাঁদের!
জনসন অ্যান্ড জনসন। শিশুদের খিলখিল হাসির, মায়াময় সমস্ত মনভোলানো বিজ্ঞাপনে বছরের পর বছর ধরে সদ্য মায়েদের ভরসা জুগিয়ে এসেছে। শিশুর কোমল ত্বকের জন্য নাকি সবচেয়ে নিরাপদ তাদেরই পণ্য। অথচ মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো কোম্পানির পণ্যেও মিলেছে এমন সব উপাদান যা একজন শিশুর জন্য ভয়াবহ! আবারও নতুন করে প্রশ্ন জেগেছে এই বিখ্যাত কোম্পানির প্রস্তুত করা পণ্য নিয়ে। কানেকটিকাটের একজন ব্যক্তিকে ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে জনসন অ্যান্ড জনসনকে। মারাত্মক অভিযোগ করেছেন এই ব্যক্তি। বহুবছর ধরে তিনি এই কোম্পানির ট্যালক পাউডার ব্যবহার করছিলেন। অভিযোগ, এর ফলে মেসোথেলিওমা বলে ক্যান্সারের একটি বিরল রূপ দেখা দিয়েছে তাঁর শরীরে।
কানেকটিকাটের এই ভদ্রলোকের নাম ইভান প্লটকিন। এই বিরল রোগ নির্ণয়ের পরপরই, ২০২১ সালে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, জনসন অ্যান্ড জনসনের বেবি পাউডার শোঁকার ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের মধ্যে তা মিশে যাওয়াতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
কানেকটিকাটের আদালত আরও জানিয়েছে, কোম্পানিকে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই পরিমাণটি পরবর্তীতে মামলার তত্ত্বাবধানকারী বিচারক দ্বারাই নির্ধারিত হবে। প্লটকিনের আইনজীবী বেন ব্রালি বলছেন, জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানি এমন একটি বেবি পাউডার পণ্যের বিপণন এবং বিক্রয় করে চলেছিল দিনের পর দিন, যাতে অ্যাসবেস্টস রয়েছে! এবং সবচেয়ে মারাত্মক হলো কোম্পানি জেনেশুনে এই পণ্য বিক্রি করে গেছে।
আরও পড়ুন- প্রতি বছর আক্রান্ত ৫০ হাজার ভারতীয় শিশু, ছোটদের ক্যানসার নিয়ে সতর্ক হন আজই
জনসন অ্যান্ড জনসনের বিশ্বব্যাপী মামলার ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক হাস অবশ্য বলছেন, কোম্পানি বিচারকের 'ভুল' রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে কারণ বিচারকরা এই মামলায় অন্য পক্ষের তথ্য শোনেননি। তাঁদের কাছে এমন তথ্য রয়েছে যাতে এটি প্রমাণিত যে, কয়েক দশক ধরে যে বৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন চলছে তার সঙ্গে এই রায়টি যায় না। তথ্য রয়েছে যে, এই পাউডার নিরাপদ, এতে অ্যাসবেস্টস নেই এবং ক্যান্সারও সৃষ্টি করে না।
শুধু যে কানেকটিকাটের ইভান এমন অভিযোগ করেছেন তা তো নয়। বহুকাল ধরে জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৬২,০০০-এরও বেশি মানুষ দাবি করেছেন যে কোম্পানির ট্যালক থেকে ডিম্বাশয় এবং অন্যান্য গাইনোকোলজিক্যাল ক্যান্সার হয়েছে তাঁদের! এদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে কোম্পানি। অবস্থা এমনই যে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে কোম্পানিই দেউলিয়া! জনসন অ্যান্ড জনসন ২০২০ সালে আমেরিকার বাজার থেকে তাদের পাউডার ভিত্তিক পাউডার পণ্যগুলি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু বাকি দেশে? আমাদের দেশে? সচেতনতার অভাব বা আইনের ফাঁককে ব্যবহার করে জনসন অ্যান্ড জনসন কি আমাদের দেশের কোটি কোটি শিশুকে বিপদে ফেলছে না?