প্রেমপত্র লিখতেও ভারতীয়দের ভরসা এআই! ভ্যালেন্টাইনস ডে-র আগেই সামনে এল যে তথ্য
Valentines Day Love Letter AI India : এমন বিশেষ দিনে প্রেমপত্র লেখার অভ্যাস তো অনেকেরই। প্রেম থাকলে প্রেমপত্র থাকবে না, তা কি হয়!
১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইনস ডে। যদিও লেখায় বলা হয়, ভালোবাসার কোনও দিন থাকে না। তবুও এই একটি দিনের জন্য প্রেমিক প্রেমিকারা অপেক্ষা করে থাকেন। অনেকে এই বিশেষ দিনেই প্রিয় মানুষের কাছে মনের ভাব জানায়। অনেকে একসঙ্গে হাত ধরে বাকি জীবন কাটানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। আবার অনেকেরই মন ভেঙে যায়। এরকম নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই হাজির আরও একটা ফেব্রুয়ারি মাস, আরও একটা ভ্যালেন্টাইনস ডে। এমন বিশেষ দিনে প্রেমপত্র লেখার অভ্যাস তো অনেকেরই। প্রেম থাকলে প্রেমপত্র থাকবে না, তা কি হয়!
তবে ২০২৩-এর ভ্যালেন্টাইনস ডে নাকি ‘পরিবর্তন’ এনেছে! আন্তর্জাতিক সংস্থা ম্যাকআফি সম্প্রতি একটি সমীক্ষা বার করেছে। সেই সমীক্ষার বিষয়বস্তু হল ‘মডার্ন লাভ’। এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবীর প্রযুক্তির মানচিত্রে একটিই নাম আলোচিত হচ্ছে – চ্যাটজিপিটি (ChatGPT)। এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে এই চ্যাট বট মানুষের দৈনন্দিন অনেক কাজই করতে সক্ষম। নির্দেশ দিলে আস্ত একটা বইও লিখে দিতে পারে সে। ২০২২-র নভেম্বরে এই চ্যাটজিপিটি সামনে আসার পর আরও বেশকিছু অত্যাধুনিক চ্যাট বট এসে গিয়েছে। আর সেসবই নাকি দারুণ প্রভাব ফেলছে ভ্যালেন্টাইনস ডে-র মঞ্চে। কীরকম?
প্রিয় মানুষটিকে নিজের মনের ভাব, ভালোবাসার কথা বলার জন্য প্রেমপত্রই অনেকের ভরসা। পুরনো দিনে সেই প্রেমপত্র নিজে লিখতে না পারলে বন্ধুকে দিয়ে লেখানো। ‘আপম মনের মাধুরী মিশিয়ে’ লেখা সেই চিঠি বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী। কালের নিয়মে চিঠির জায়গায় হাজির হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ফেসবুক। পেন, পেনসিল বদলে গিয়েছে কি-প্যাড টাইপিংয়ে। কিন্তু মনের কানেকশন তো একই থেকে গিয়েছে।
তবে নতুন এই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, মানুষ এখন প্রেমপত্র লিখতে চ্যাটজিপিটির মতো এআইয়ের সাহায্য নিচ্ছে! নিজের মনের ভাব ব্যক্ত করে চ্যাট বটকে নির্দেশ দিচ্ছে; আর সেটিও দ্রুত সেই ‘প্রেমপত্র’ লিখে দিচ্ছে। আর ২০২৩-র ভ্যালেন্টাইনস ডে-র আগে এই অদ্ভুত ট্রেন্ডে সবার আগে এগিয়ে রয়েছে কে? আমাদের ভারতীয়রা!
ম্যাকআফি মোট ৯টি দেশকে নিয়ে এই বিশেষ সমীক্ষা চালায়। তার মধ্যে ছিল ভারতও। সেখানেই দেখা গিয়েছে এই অদ্ভুত ট্রেন্ড! কিন্তু মানুষ প্রেমপত্র লিখলে সেই চিঠিতে যে ‘ছোঁয়া’ থাকবে, একটা যন্ত্র কিংবা রোবট লিখলে কি সেটা আদৌ থাকে? লেখাটা গতে বাঁধা হয়ে যায় না? যান্ত্রিক হয়ে যায় না? এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে গিয়ে আরও অদ্ভুত তথ্য সামনে আসে! অন্তত ৭৮ শতাংশ ভারতীয়রা মানুষ আর চ্যাটজিপিটির লেখা প্রেমপত্রে তফাৎ করতে পারছেন না। বরং তাঁরা উল্টে এআই মাধ্যমে তৈরি রোবটের ‘প্রেমপত্র’ পড়েই কার্যত ফিদা হয়ে যাচ্ছেন!
এর পাশাপাশি দেখা গিয়েছে, সত্যি সত্যিই অনেকে প্রেমপত্র লেখার জন্য এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন। ভারতীয়রা সেখানে শীর্ষে! অন্তত ৬২ শতাংশ ভারতীয় ভ্যালেন্টাইনস ডে-র জন্য এআই ব্যবহার করে প্রেমপত্র লিখছেন! এমনকী, ৭৩ শতাংশ ভারতীয় এআইয়ের সাহায্যে নিজেদের ডেটিং প্রোফাইল তৈরি করছেন! তাহলে কি যন্ত্র হয়েও এতটা ভালো প্রেমপত্র লিখতে পারছে অত্যাধুনিক চ্যাট বটগুলি? সেরকমই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এর জেরে ভবিষ্যতে অনেক ক্ষতির সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে। এভাবে ভুয়ো প্রেমপত্র লিখে ফাঁদে ফেলার ঘটনা ঘটাও অস্বাভাবিক নয়। তবে এবারের ভারতে ভ্যালেন্টাইনস ডে একেবারে ‘এআই’ময়, তা বলাই বাহুল্য!