"আমার নাম সাভারকর নয়...", সাংসদ পদ খারিজের পর সাংবাদিক বৈঠক, কী বললেন রাহুল গান্ধী?
Rahul Gandhi Disqualification Press Conference : কংগ্রেসের কী পদক্ষেপ হবে, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। তার মধ্যেই শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করলেন খোদ রাহুল গান্ধী।
তাঁকে ঘিরে এখন ভারতের রাজনীতির ময়দান উত্তাল। রাতারাতি তাঁকে জেলের সাজা শোনানো হল, তারপর একদিন যেতে না যেতেই সাংসদ পদ খারিজ। কংগ্রেস নেতা এবং অন্যতম বিরোধী মুখ রাহুল গান্ধী এখন খবরে, সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার কেন্দ্রে। সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর কংগ্রেসের কী পদক্ষেপ হবে, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। তার মধ্যেই শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করলেন খোদ রাহুল গান্ধী। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের অন্যান্য নেতারা। সেই বৈঠকেই কার্যত ঝড় তুললেন তিনি।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জায়গায় জনসভায় গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। কর্ণাটকেও একটি জনসভা করেছিলেন। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করেন কংগ্রেসের এই নেতা। আক্রমণের সময় নীরব মোদি, ললিত মোদির নামও চলে আসে। সব মোদিই কেন চুরির দায়ে যুক্ত, এই প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বিপদে পড়েন তিনি। বিজেপি কার্যত উঠেপড়ে আক্রমণের রাস্তায় নামে। এই মন্তব্য করে রাহুল আদতে গোটা মোদি সম্প্রদায়কেই আঘাত দিয়েছেন, এমনটাই বক্তব্য গেরুয়া শিবিরের। অবশ্য কংগ্রেসের তরফে বারবার বলা হয়েছে, কাউকে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই কথা বলা হয়নি। তর্ক, পাল্টা তর্কের ভিড়ে রাহুল গান্ধীর নামে মামলাও দায়ের করেন গুজরাতের এক বিজেপি বিধায়ক।
আরও পড়ুন : বিজেপির ‘আচ্ছে দিন’, রাহুল গান্ধির হাতছাড়া হবে ওয়ানাড় আসন?
সম্প্রতি সেই মামলারই রায় বেরিয়েছে। চার বছর পর সুরাট আদালতের বিচারপতি রায় দেন, রাহুল গান্ধী দোষী। তাঁর দুই বছরের জেলের সাজাও শোনানো হয়। কিন্তু সেইসঙ্গে উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য একমাস জামিনও দেওয়া হয়। সেই ঘটনার একদিন যেতে না যেতেই রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও জনপ্রতিনিধি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দু’বছরের জেলের সাজা পেলে তাঁর পদ খারিজ করা হবে। এই আইনকে মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
এরপরই দেরি করেননি রাহুল গান্ধী। সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন তিনি। সেখানেই নরেন্দ্র মোদিকে ফের আক্রমণ করেন রাহুল। তাঁর দাবি, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী কণ্ঠস্বর রোধের জন্যই ইচ্ছে করে এই কাজ করা হচ্ছে। রাহুলের বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী মোদি আসলে ভয় পাচ্ছেন। সংসদে আমার প্রশ্নের মোকাবিলা করতে ভয় পেয়েছেন। ওঁরা চান না আমি সংসদে কোনও বক্তব্য রাখি, সঠিক প্রশ্ন সামনে আনি।”
আরও পড়ুন : সবই কর্মের ফল! দশ বছর আগের এই কাজের শাস্তিই এখন পাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী?
এছাড়াও তাঁর বক্তব্য, বিজেপি নেতাদের নাকি দাবি, রাহুল গান্ধী ভারত বিরোধী কাজকর্ম করছেন। এ ব্যাপারে কিছু বলার অধিকারও তাঁকে দেওয়া হয়নি সংসদে। জোর গলায় রাহুলের বক্তব্য, “আমায় জেলে ভরুন, সাংসদ পদ খারিজ করে দিন, যা খুশি করুন। আমি ভয় পাই না। আমি প্রশ্ন করে যাব, নিজের কাজ করে যাব। আমি চিন্তিত নই, বরং আরও বেশি উত্তেজিত”।
কিন্তু তিনি কি তাঁর বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন? রাহুল গান্ধীর জোর গলায় দাবি, তিনি কোনও সম্প্রদায়কে আহত করেননি। কেবল কয়েকজনের নাম নিয়েছিলেন। তারপরই তিনি বলেন, “আমি গান্ধী, আমার নাম সাভারকর নয়। আমি এভাবে ক্ষমা চাইব না।” ইঙ্গিত কোন দিকে সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। আপাতত এটা নিয়েই সরগরম ভারতের রাজনীতি। রাহুল গান্ধী কি নিজের বিরোধী ইমেজকে আরও উজ্জ্বল করবেন? বিজেপির পরবর্তী পদক্ষেপই বা কী হবে? সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।