মঙ্গলগ্রহে পাওয়া গেছে পিরামিড, দরজার আড়ালে ভিনগ্রহীরা? জেনে নিন আসল তথ্য
এই পিরামিড আসলে স্বাভাবিক এক প্রাকৃতিক গঠন। নাসার মার্স কিউরিওসিটি রোভারে ধরা পড়া যে ছবি দেখে এই দাবি করছেন ওয়ারিং, তা ট্যুইট করে কিওরিওসিটি রোভারের তরফে জানানো হয়েছে, দেখতে দরজার মতো মনে হলেও, জিওলজির সঙ্গে পরিচিতদের কা...
ভিনগ্রহের প্রাণী, বা এলিয়েন সম্পর্কে বিশ্ববাসীর কৌতূহলের কোনও অন্ত নেই। পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহে এই ধরনের প্রাণীর আদৌ কোনওরকম অস্তিত্ব রয়েছে কি না, কিংবা পৃথিবীর বুকে অতীতে তাদের যাতায়াত বা ভবিষ্যতে তাদের আসার সম্ভাবনা- ইত্যাদি প্রসঙ্গে গবেষণা, সিনেমা, কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যর অন্ত নেই। নাসা কিংবা অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সংস্থার প্রতিবেদনেও সময়বিশেষে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে, যা বিস্মিত করেছে মানুষকে। অনেকের বিশ্বাস, আমাদের সৌরমণ্ডলে কিংবা তার বাইরে এমন এক দুনিয়া রয়েছে, যেখানে এখনও পর্যন্ত বসবাস করে চলেছে এইসব ভিনগ্রহের প্রাণীরা। আবার কারও কারও দাবি, মহাজগতের অন্য কোনও গ্রহ থেকে এরা ক্রমাগত আমাদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য নিয়ে চলেছে এবং কোনও না কোনও সময় পৃথিবীর বুকে আমাদের অজান্তেই নেমে এসেছে; যার খবর বিজ্ঞানীদের কাছেও নেই।
বহুদিন ধরে আমেরিকা, ইংল্যান্ড-সহ একাধিক দেশে বিজ্ঞানীরা এলিয়েন প্রসঙ্গে একাধিক ভবিষ্যদ্বাণী করে আসছেন। প্রথম বিশ্বের দেশগুলির বৈজ্ঞানিক মহল ভিনগ্রহীদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে চলেছে। চাঁদ কিংবা মঙ্গলগ্রহে স্পেসশিপ পাঠানো থেকে শুরু করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তাদের পরিস্থিতি এবং সেখানে ঘটে চলা একাধিক ঘটনার ওপর ক্রমাগত নজর রেখে চলেছে এই দেশগুলো। উদ্দেশ্য একটাই, যদি কোনও নতুন তথ্য স্যাটেলাইট কিংবা মহাকাশযানের মাধ্যমে উঠে আসে।
আমাদের সৌরমণ্ডলে একাধিক গ্রহ উপস্থিত থাকলেও প্রধানত চাঁদ এবং মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে আমাদের কৌতূহল বহুদিন ধরে জারি। বিশেষত মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন বহু গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা। যদিও এই সম্পর্কে নিখাদ প্রমাণ কখনওই পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ইউএফওর গবেষক স্কট সি ওয়ারিংয়ের একটি গবেষণা প্রকাশ্যে এসেছে। তার মধ্যে উল্লিখিত বেশ কয়েকটি তথ্য গোটা বিশ্বে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: মানুষের নগ্ন ছবি দেখেই সাড়া দিল ভিনগ্রহীরা? কী বলছে নাসা?
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে যে, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ইউএফও নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন স্বঘোষিত গবেষক স্কট সি ওয়ারিং। সেই সূত্রেই একের পর এক নতুন তথ্য উঠে আসে তাঁর হাতে, অবশ্য কোনও ক্ষেত্রেই তাঁর দাবিকে সঠিক প্রমাণ করার মতো নির্ভরযোগ্য নথি কিংবা প্রমান ছিল না হাতে। তবে বর্তমানে এমন বেশ কয়েকটি জিনিস উঠে এসেছে, যা সত্যি চমকপ্রদ! সম্প্রতি মঙ্গলগ্রহের বুকে তিনি এক রহস্যজনক বস্তু আবিষ্কার করেছেন, যা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, এই রহস্যজনক বস্তুটির সঙ্গে আমাদের মিশরের পিরামিডের অনেক সাদৃশ্য পাওয়া গিয়েছে। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যে, পৃথিবী থেকে কয়েক লক্ষ কোটি মাইল দূরে একটি গ্রহে কীভাবে পিরামিড থাকতে পারে? এক্ষেত্রে অনেকের মতে, সম্ভবত পৃথিবীর বুকে এর আগেও নেমে এসেছে এলিয়েনরা আর এখানকার স্থাপত্য এবং নিদর্শন দেখেই তারা নিজেদের গ্রহে বানিয়ে ফেলেছে এই স্থপতি। অন্য মহলের দাবি, আমাদের চেয়ে অনেকাংশে শক্তিশালী ভিনগ্রহীরা। ফলে আমাদের অনেক আগেই তারা নিজেদের গ্রহে এহেন আবিষ্কার করে থাকতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র পিরামিডের মতো দেখতে আকৃতির আবিষ্কার করেই ক্ষান্ত থাকেননি ওয়ারিং। আরও একটি তথ্য তিনি তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে। তাঁর দাবি, মঙ্গলগ্রহের বুকে এইসব পিরামিডের মাঝে একটি রহস্যজনক দরজা দেখা গিয়েছে। ভিনগ্রহীর অস্তিত্ব থাকুক বা না থাকুক, এই দরজার পিছনে ঠিক কী প্রযুক্তি রয়েছে, তা নিয়ে ভাবার অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন স্কট সি ওয়ারিং।
এবার আসা যাক মিশরের পিরামিডের প্রসঙ্গে। কয়েক হাজার বছর ধরে এই পিরামিড তৈরির রহস্য যেমন অটুট, ঠিক তেমনভাবে এটিকে গড়ে তোলার পিছনে যে কৌশল ব্যবহার করা হয়েছিল, তা অত্যন্ত উন্নতমানের বলে দাবি করে বৈজ্ঞানিক মহল। এই পিরামিডগুলির ভেতরে মিশরীয় মানুষদের মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হতো। মমি এবং পিরামিড দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ জড়ো হয় এখানে। ফলে মঙ্গলগ্রহের বুকে এই রহস্যময় 'পিরামিড' কি সেই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বই প্রমাণ করে?
আসলে বাস্তবটা একদম আলাদা। এই পিরামিড আসলে স্বাভাবিক এক প্রাকৃতিক গঠন। নাসার মার্স কিউরিওসিটি রোভারে ধরা পড়া যে ছবি দেখে এই দাবি করছেন ওয়ারিং, তা ট্যুইট করে কিওরিওসিটি রোভারের তরফে জানানো হয়েছে, দেখতে দরজার মতো মনে হলেও, জিওলজির সঙ্গে পরিচিতদের কাছে বিষয়টি এমন কিছুই অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু বারবার ভিনগ্রহীদের নিয়ে নানারকম মনগড়া তত্ত্ব উঠে এসেছে। স্কট ওয়ারিংয়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই ধরনের তত্ত্বকে মূলত গাঁজাখুরি বলেই মনে করছে বিজ্ঞানী মহল।
Some of you have noticed this image I took on Mars. Sure, it may look like a tiny door, but really, it’s a natural geologic feature! It may just *look* like a door because your mind is trying to make sense of the unknown. (This is called "pareidolia") https://t.co/TrtbwO7m46 pic.twitter.com/VdwNhBkN6J
— Curiosity Rover (@MarsCuriosity) May 18, 2022
এই প্রসঙ্গে এরিখ ভন দানিকেনের গবেষণার কথাও উঠে আসতে পারে। দানিকেনের দাবি ছিল, পৃথিবীর ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য ভিনগ্রহীরা তৈরি করেছে। না হলে কোনওভাবেই মানুষের পক্ষে সেই সময় এই ধরনের স্থাপত্য নির্মাণ সম্ভব ছিল না, এর মধ্যে পিরামিড-সহ আরও বেশ কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শনের কথা ছিল। বিজ্ঞানীরা তা স্বীকার করেননি কখনও, এবং তার সপক্ষে সঠিক প্রমাণও পাওয়া যায়নি।