ডেলিভারি কর্মীদের জন্য বিরাট প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের! ইনস্ক্রিপ্টকে দেওয়া কথা রাখলেন রাহুল গান্ধি

Congress Yuva Nyay: মালদহে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার সময় ইনস্ক্রিপ্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাহুল গান্ধি। সম্পাদকের প্রশ্নই ছিল গিগ শ্রমিকদের নিয়ে।

রাহুল গান্ধি ন্যায় যাত্রায় প্রমাণ করে দিয়েছিলেন বিজেপির অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁর অস্ত্র একমাত্র ন্যায়। সমাজের সব স্তরের মানুষকে নিজেদের অধিকার পাইয়ে দিতে চান তিনি, চান সাধারণ মানুষ ন্যায় পাক। পশ্চিমবঙ্গে ন্যায় যাত্রার সফরে এসে রাহুল গান্ধি ইনস্ক্রিপ্টকে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন কংগ্রেস দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা গিগ শ্রমিক অর্থাৎ বিভিন্ন ডেলিভারি শ্রমিক, পোর্টারদের কথা ভাবছে। সেই কথা রেখেছেন রাহুল। লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের যুবকদের বিশ্বাস অর্জন করতে কংগ্রেস এই প্রথম লোকসভা নির্বাচনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে গিগ শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার কথা ভেবেছে। যুব সম্প্রদায়কে ন্যায় দিতে ক্ষমতায় এলে কর্মসংস্থান, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নেপথ্যে জড়িয়ে থাকা দোষীদের কড়া শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কংগ্রেস।

গিগ শ্রমিকদের অধিকার, চাকরি, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার চক্রান্ত থেকে মুক্তি- এই বিষয়গুলি কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারের অংশ হয়েছে এবার। মালদহে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার সময় ইনস্ক্রিপ্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাহুল গান্ধি। সম্পাদকের প্রশ্নই ছিল গিগ শ্রমিকদের নিয়ে। বাংলায় গিগ শ্রমিকদের নিয়ে এই প্রশ্ন একমাত্র করেছিল ইনস্ক্রিপ্টই। উত্তরও দিয়েছিলেন রাহুল। শুধু রাহুল নয়, ন্যায় যাত্রা চলাকালীন গিগ শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা জয়রাম রমেশকে, প্রশ্ন করা হয়েছিল কানহাইয়া কুমারকেও। উত্তরও দিয়েছিলেন সকলে। উত্তর দিয়েছিলেন খোদ রাহুল গান্ধিও। ইনস্ক্রিপ্টের প্রশ্ন ছিল, এক কোটির বেশি গিগকর্মী রয়েছেন আমাদের দেশে। আপনারা যখন যুবার জন্যে ন্যায় কথাটি বারবার উচ্চারণ করছেন, কেন ওদের কথা আলাদা করে বলছেন না? কেন ওদের জন্য বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভাবছেন না?

আরও পড়ুন- রাহুল গান্ধির সঙ্গে দু’ দশ মিনিট

রাহুল উত্তরে বলেছিলেন, "দেখুন, আমরা রাজস্থানে কী করেছিলাম আপনারা দেখেছেন। আমরা কাজটা পরীক্ষামূলক ভাবে কর্ণাটক, তেলেঙ্গানাতেও শুরু করতে চাইছি। আমরা চাইব সমস্ত গিগ লেবাররা ন্যূনতম মজুরি পান আর পরিকাঠামো পান। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য আপনাকে পাঠাব আমরা।"

কথা রেখেছেন রাহুল। কংগ্রেস বৃহস্পতিবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের যুবকদের জন্য 'যুব ইস্তেহার' ঘোষণা করেছে। ইস্তেহারে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত ডিপ্লোমা করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য বার্ষিক ১ লাখ প্যাকেজের চাকরির গ্যারান্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে মুক্তি পেতে কঠোর আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস, গিগ অর্থনীতিতে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা, ৩০ লক্ষ সরকারি চাকরির শূন্যপদে নিয়োগ এবং ৪০ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে স্টার্টআপ বিষয়টিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে 'যুব রোশনি'-এর সূচনার কথা বলছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধি বলেছেন, "ভারতে ৩০ লক্ষ সরকারি শূন্যপদ রয়েছে। মোদিজি সেগুলি পূরণ করেন না। বিজেপি সেগুলি পূরণ করে না। ক্ষমতায় আসার পরে, আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে এই পদগুলি পূরণ করা।"

আরও পড়ুন- রাহুল গান্ধির নয়, এ পরাজয় আঞ্চলিক মনসবদারদের

কানহাইয়া কুমার গিগ শ্রমিক বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে ইনস্ক্রিপ্টকে বলেছিলেন, রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার আসার পর সেই প্রথম, দেশের কোনও রাজ্য সরকার গিগ শ্রমিকদের নিয়ে আইন পাস করেছিল। রাজস্থানে কংগ্রেসই প্রথম এমন কাজ করে। কানহাইয়া ইনস্ক্রিপ্টকে বলেন, "এই দেশের যুবকরা কংগ্রেসের সঙ্গে জুড়ুন আমরা চাই। কংগ্রেস সরকার রাহুল গান্ধির নেতৃত্বে, মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে দেশের যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য অবিচল হয়ে কাজ করবে। যারা শ্রমিক রয়েছেন, সে গিগ শ্রমিকই হন বা অসংগঠিত ক্ষেত্রের মজুর বা সংগঠিত শ্রমিক, পেনশন স্কিম থেকে শুরু করে সমস্ত কল্যাণমূলক কাজগুলি কংগ্রেস করবে। এটা কেবল প্রতিশ্রুতি নয়। আমাদের সরকার যেখানে এসেছে গিগ শ্রমিকদের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করেছি।" কানহাইয়া জানান, ভারত জোড়ো যাত্রা যখন শুরু হয়, সেই প্রথম দফার সময়েই গিগ শ্রমিকদের প্রতিনিধি দল রাহুল গান্ধির সঙ্গে এসে দেখা করেন। রাজস্থানে তখনই কংগ্রেস সরকার এই নিয়ে আইন পাস করে।

একই কথা বলেছিলেন জয়রাম রমেশও। জয়রাম ইনস্ক্রিপ্টকে বলেছিলেন, "মোদি সরকার শ্রমিকদের দাবি দাওয়া শোনে না, মোদিজি হাজারও শ্রমিক সংগঠনগুলির কণ্ঠরোধ করছেন। জয়রাম রমেশ বলছেন, গিগ অর্থনীতির ফলে লক্ষ লক্ষ গিগ শ্রমিক পেয়েছে এই দেশ, অথচ এই শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীন। শ্রমিকদের ন্যায়ের মধ্যে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গিগ ইকোনমির লক্ষ্য লক্ষ্য শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার বিধি বলবৎ করা"।

সেই সামাজিক ন্যায় রক্ষাই এখন কংগ্রেসের শপথ। দেশজুড়ে ধর্মীয় মেরুকরণ, ঘৃণার রাজনীতির মধ্যে সাধারণ মানুষের হকের কথা বলছেন রাহুল গান্ধি। দেশজুড়ে অসংগঠিত অসংখ্য ডেলিভারি শ্রমিকরা যাতে মর্যাদা পান, সামাজিক ন্যায় পান তা নিশ্চিত করতে মাঠে নামছে কংগ্রেস। কথা রেখেছেন রাহুল গান্ধি।

More Articles