NEET পরীক্ষার রেজাল্ট বাতিল! নতুন সংকটের মুখে ১,৫৬৩ জনের ভবিষ্যৎ

NEET-UG 2024: বাতিল হয়ে গেল নীট-ইউজি ২০২৪ প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসা ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর রেজাল্ট। ওই ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়েছিল ক্ষতিপূরণ হিসেবে।

ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা। যার উপরে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার চিকিৎসকের ভবিষ্যৎ, এবার প্রশ্নের মুখে পড়ল সেই নীট পরীক্ষাই। সুপ্রিম কোর্টে বাতিল হয়ে গেল নীট-ইউজি ২০২৪ প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসা ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর রেজাল্ট। ওই ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়েছিল ক্ষতিপূরণ হিসেবে। গত ৫ মে ওই পরীক্ষা হয়। কেন দেওয়া হয়েছিল ওই গ্রেসমার্কস? সূত্রের খবর, ওই ১,৫৬৩ জনের যে কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়, সেখানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পূর্ণ সময় উত্তর দেওয়ার জন্য পাননি পরীক্ষার্থীরা। এর পরেই আদালতের নির্দেশে তাদের অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

কিন্তু এবার সেই সিদ্ধান্ত রদ হয়ে গেল। বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে ওই পড়ুয়াদের স্কোর কার্ড জমা দিয়েছে। এবং জানানো হয়েছে, সেটির আর কোনও মূল্য নেই। ওই ১,৫৬৩ জন পড়ুয়ার নতুন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী ২৩ জুন সেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। যার ফলাফল বেরোবে আগামী ৩০ জুন। ৬ জুলাই থেকে তাদের কাউন্সেলিং শুরু হবে।

আরও পড়ুন: সাফল্য পেতে ছাড়েনি খেলাধুলা, কীভাবে JEE পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ নম্বর পেল বাংলার ছেলেটি?

একই সঙ্গে ওই পরীক্ষার্থীদের গ্রেস নম্বর ছাড়া পুরনো আসল মার্কসটি জানানো হবে। এবার তাঁরা ঠিক করতে পারেন, পুনরায় পরীক্ষা দেবেন নাকি গ্রেস মার্কস ছাড়া পুরনো নম্বরের ভিত্তিতেই পরবর্তী প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে চাইবেন তাঁরা। সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁদের হাতেই বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

পূর্ণসময় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় তাঁদের সঙ্গে বঞ্চনা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পড়ুয়ারা। এরপরেই ন্যাশানাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA) নিয়ন্ত্রিত কমিটি নির্দেশ দেয় ওই গ্রেস নম্বর দেওয়ার। এই NTA-ই নীট পরীক্ষার দায়িত্বে রয়েছে। এর পরেই অভিযোগ ওঠে, পরীক্ষার্থীদের দেওয়া গ্রেস মার্কস বিধিবহির্ভূত এবং তা স্বচ্ছতাহীন। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বহু পরীক্ষার্থী। এর বিরুদ্ধে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হন। 

সর্বভারতীয় নীট পরীক্ষা, যেখানে মূলত এমসিকিউ টাইপের ১৮০টি প্রশ্ন থাকে। সব মিলিয়ে পূর্ণমান থাকে ৭২০। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য পরীক্ষার্থী পান চার নম্বর। ভুল উত্তর প্রতি কেটে নেওয়া হয় একটি করে নম্বর। পরে অবশ্য এনটিএ-র তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে এ ধরনের গ্রেস নম্বর আদতে পরীক্ষা পদ্ধতিতে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। তবে শুধু এই গ্রেস মার্কসই নয়, এবারের নীট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে ভুল ওএমআরশিট ও প্রশ্নপত্র দেওয়া এবং প্রযুক্তিগত বিলম্বের অভিযোগও রয়েছে। যা নিয়েও মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁস-সহ অন্য মামলাগুলির শুনানি এখনও বাকি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।

আরও পড়ুন:পরীক্ষার হলে ৫০০ মেয়ের মধ্যে একমাত্র ছেলে! এরপর কিশোরের ‘কীর্তি’ দেখে হতভম্ব সোশ্যাল মিডিয়া

এই সব ঘটনায় এনটিএ-র দক্ষতাও প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এই সব অভিযোগের তদন্তে এনটিএ চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তবে শেষপর্যন্ত সব দিক খতিয়ে দেখে ওই সব পরীক্ষার্থীর পুরনো রেজাল্ট যেখানে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়েছিল ক্ষতিপূরণ হিসেবে, সেই রেজাল্টটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। তবে পড়ুয়াদের হাতে সুযোগ থাকছে, অতিরিক্ত গ্রেসমার্কস ছাড়া পুরনো পরীক্ষাটি বহাল রাখার। সেই সিদ্ধান্ত পরীক্ষার্থীদের হাতেই বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

More Articles