জি এন সাইবাবাকে যেভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হলো...

G.N. Saibaba Death: সাইবাবাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এই নতুন দেশে বিরুদ্ধ কণ্ঠস্বরের কোনও জায়গা নেই।

জি এন সাইবাবা প্রয়াত। নব্বই শতাংশ প্রতিবন্ধী, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক, অধিকার আন্দোলনের অগ্রণী যোদ্ধা, কবি, কমিউনিস্ট বিপ্লবীর মাত্র ছাপান্ন বছর বয়সে অকালে চলে যাওয়া হৃদয় বিদারক কিন্তু এক অর্থে দেখতে গেলে এই মৃত্যু অনিবার্য ছিল। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রের কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায়, সমস্ত রকমের চিকিৎসার সুযোগ বঞ্চিত করে, ধারাবাহিকভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে সরকার তাঁকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। গান্ধিবাদী সমাজকর্মী হিমাংশু কুমার সাইবাবার এই মৃত্যুকে 'রাষ্ট্র কর্তৃক সংঘটিত হত্যা' আখ্যা দিয়েছেন। এই মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে, ভীমা-কোঁরেগাও মামলায় বন্দি অশীতিপর স্ট্যান স্বামীর কথা, যাঁকে জেল কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছিল। সাইবাবার গ্রেফতারি, জেল যাপন, প্রথমবার হাইকোর্ট কর্তৃক জামিন হওয়ার পর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ছুটির দিনে আদালত খুলিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারা জামিন নাকচ, আবার কয়েকমাস আগে নির্দোষ প্রমাণ হওয়া— সবটা আসলে এক দর্পণ যার মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে অহরহ বিজ্ঞাপিত ভারত রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোর আসল চেহারাটা দেখতে পাই। এক হুইলচেয়ার বন্দি প্রতিবন্ধী মানুষের হার না  মানা লড়াই, সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা, মানবিক মূল্যবোধ ও দু'চোখ ভরা পাল্টে দেবার স্বপ্নের সামনে নতজানু হয় রাষ্ট্রের যাবতীয় কৃৎকৌশল।

এক বিজ্ঞ বিচারপতি নিদান দিয়েছিলেন সাইবাবার মগজ দখল করার, কারণ তা না হলে কর্পোরেট পুঁজির লুন্ঠন, আদিবাসী মানুষের জল-জমি-সম্পদের নীল নকশার রূপায়ণ বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। সেই বিচারক সাইবাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে সদর্পে বলেছিলেন, আইনে সুযোগ থাকলে এই মানুষটিকে তিনি ফাঁসির সাজা শোনাতেন। এ দেশে রাম রহিম বা আশারাম বাপুর মতো ধর্ষক নিয়মিতভাবে প্যারোলে মুক্তি পান কিন্তু সাইবাবা তাঁর মা মারা যাবার পরেও প্যারোলে মায়ের অন্তিম কাজে যাওয়ার অনুমতি পাননি।

আরও পড়ুন- সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছরের, তাও কেন বিনা বিচারে ৪ বছর বন্দি উমর খালিদ?

অন্ধ্রপ্রদেশের আমলাপুরমে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে সাইবাবার জন্ম। ছোটবেলায় পোলিও আক্রান্ত হওয়ার কারণে শারীরিকভাবে ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তাঁকে বাঁচতে হয়। এই প্রতিকূলতাকে জয় করে তিনি হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পিএইচডি করেন। দিল্লির রামলাল আনন্দ কলেজে তাঁর শিক্ষকতার জীবন শুরু। এটা সাইবাবার জীবনের একটা দিক মাত্র। অন্যদিকে, ছাত্রাবস্থা থেকেই কমিউনিস্ট রাজনীতির মতাদর্শে দীক্ষিত হন। সমাজের প্রান্তিক মানুষদের লড়াইতে তাঁর অংশগ্রহণ, অধিকার আন্দোলনে তাঁর সক্রিয়তা, বিশেষ করে অপারেশন গ্রিন হান্টের নামে কেন্দ্রীয় সরকার যখন দেশের একটা অংশের নাগরিকদের প্রতি যুদ্ধ ঘোষণা করে তখন তার বিরুদ্ধে প্রচার সাইবাবাকে জনমানসে এক পরিচিত নাম করে তোলে। কিন্তু সাইবাবার উপর নেমে আসা রাষ্ট্রের সন্ত্রাসের খতিয়ান তৈরি করতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ২০১৩-১৪ সময়পর্বে।

২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রথমবার মাওবাদী সন্দেহে সাইবাবার দিল্লির বাসগৃহে এনআইএ অভিযান চলে এবং কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক, পেনড্রাইভ সহ তাঁর সমস্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। তল্লাশির খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্ররা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দেশে বিদেশে বহু মানুষ এই হানার নিন্দা করেন। আসল ঘটনা ঘটে প্রায় এক বছর পরে। সাইবাবার স্ত্রী বসন্তা কুমারীর বয়ান থেকে আমরা জানতে পারি, ২০১৪ সালের ৯মে দুপুর একটায় অধ্যাপক তাঁকে জানান যে তিনি দুপুরের খাবার খেতে বাড়িতে আসছেন। আড়াইটে পর্যন্ত যখন সাইবাবা বাড়িতে এলেন না, তখন বসন্তা সাইবাবাকে ফোন করলে দেখা যায় ফোন সুইচড অফ! বসন্তা তখন স্থানীয় থানায় মিসিং ডায়েরি দায়ের করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে এক আধিকারিক ফোন করে জানান যে, মাওবাদী যোগাযোগের কারণে পুলিশ সাইবাবাকে গ্রেফতার করেছে এবং তাঁকে দিল্লির বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরবর্তীকালে এই গ্রেফতারির যে ছবি আমরা পাই তা এক অপহরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়িতে আসার পথেই সাইবাবাকে তুলে নেওয়া হয়, বস্তুতপক্ষে হুইলচেয়ার থেকে তুলে পুলিশের গাড়িতে তাঁকে ছুঁড়ে দেওয়া হয়। হুইলচেয়ারটি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনই সাইবাবার বাঁ হাতের স্নায়ু ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুতে পরবর্তীকালে সংক্রমণ হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে দুটো হাতই অকেজো হয়ে যায়। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে সাইবাবা বলেছিলেন, জেলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত পোলিও ছাড়া আর কোনও বৈকল্য তাঁর শরীরে ছিল না, দশ বছরের কারাবাসই তাঁর অনেক অঙ্গকে নষ্ট করে দিয়েছে।

২০১৪ সালে কুখ্যাত ইউএপিএ আইনে সাইবাবার গ্রেফতারি, মাঝে দু'বছরের জামিন পর্ব, শেষে ২০২৪ সালে সমস্ত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়ে মুক্তি— এই গোটা পর্বে সাইবাবার প্রতি জেল কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রের ব্যবহার আদতে নিপীড়ন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের এক অমানবিক জিঘাংসু আখ্যান। সাইবাবার গ্রেফতারির পর তাঁকে প্রথমে চোদ্দ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। তাঁর স্থান হয় নাগপুর সেন্ট্রাল জেলের কুখ্যাত 'আন্ডা সেলে'। ১০০০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে ১০ ফুট বাই ১০ ফুটের কতগুলো কম্পার্টমেন্ট। হাই সিকিউরিটি জোনে প্রত্যেক কম্পার্টমেন্টে একজন বন্দি থাকার ব্যবস্থা। আন্ডা সেল এমন একটা কুঠুরি যেখানে শুধু যে পর্যাপ্ত আলো- বাতাসের ব্যবস্থা নেই তা নয়, একজন বন্দির জেলে থাকার সময় যে সামান্য সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য, সেটাও উপলব্ধ নয়। এরকম একটা প্রায়ান্ধকার, নির্জন সেলে একজন চলাফেরায় অসমর্থ, এমনকী যিনি নিজে শৌচাগার পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁকে ফেলে রাখার অর্থ নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। ২০১৪ সালের ১২ মে ভাই দেখা করতে গেলে, সাইবাবা তাঁকে জানান যে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাঁকে রাখা হয়েছে যে তিনি ৭২ ঘণ্টা শৌচালয় ব্যবহার করতে পারেননি। উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণে তাঁকে নিয়মিত ওষুধ খেতে হত, জেল কর্তৃপক্ষ সেই ওষুধের ব্যবস্থাও পর্যন্ত করেনি। প্রতিবাদে, ১৫ মে থেকে সাইবাবা জেলের মধ্যে অনশন শুরু করেন। এই সময় জেলের এক চিকিৎসকের বয়ান থেকে জানা যায়, যদি সাইবাবার দ্রুত অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি না করা হয় তবে তাঁর বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এরপর ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট স্বাস্থ্যজনিত কারণে সাইবাবাকে জামিন দেয়। জামিনের পর প্রথমে এইমস ও পরে দিল্লি হাসপাতালে তাঁর দীর্ঘ চিকিৎসা চলে। দেখা যায়, হৃদযন্ত্রের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গল ব্লাডার স্টোন, প্যানক্রিয়াস ও অস্থি সন্ধির সমস্যা। পরিস্থিতি সেসময় এতই খারাপ হয় যে, তাঁকে আইসিসিইউতে ভর্তি করতে হয়। ২৩ মাসের কারাবাস, বিনা চিকিৎসা তাঁকে শারীরিকভাবে শেষ করে দেয়। এরপর ২০১৭ সালে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁকে আবার জেলে যেতে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে জানা যায়, প্রতিদিন বুকে ভর দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে সাইবাবাকে শৌচালয়ে যেতে হত। অথচ আমরা জানি যে অসামর্থ্যের অধিকার নিয়ে যে আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়েছিল, ভারত তাতে স্বাক্ষরকারী।

জেলে প্রতিদিন মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা বহু আলোচিত হলেও সাইবাবার মামলায় বিচার ব্যবস্থার অতি সক্রিয়তা একজন নাগরিকের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়ে বহু প্রশ্নের জন্ম দেয়। নিম্ন আদালতে বিচার চলাকালীন সাইবাবার ডিফেন্স কাউন্সিলের কোনও বক্তব্য শোনা হয়নি বলে বারবার অভিযোগ করেন বসন্তা কুমারী। নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সাইবাবা সহ পাঁচজন (একজন আগেই জেল বন্দি অবস্থায় মারা যান) মুম্বই হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই কেসে শুনানির পর ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর মুম্বই হাইকোর্ট সাইবাবা সহ পাঁচজনকে এই মামলায় ডিসচার্জ করে। আদালত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই মামলা ও তদন্ত প্রক্রিয়াকে অবৈধ ও বাতিল (null and void) ঘোষণা করে। আদালত বলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে আইনের যথেচ্ছাচারে সম্মতি দেওয়া যায় না (ill afford sacrificing the procedural safeguards)। এই রায়ের পর সারা দেশের অধিকার কর্মীরা যখন সাইবাবার মুক্তির অপেক্ষায় তখন এমন এক অলীক কুনাট্যরঙ্গের অনুষ্ঠান হল যার কোনও উদাহরণ ভারতের বিচার ব্যবস্থায় নেই। মহারাষ্ট্র সরকার সাইবাবা সহ বাকিদের আটকে রেখে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ অনুমতি নিয়ে শনিবার ছুটির দিনে আদালত খুলিয়ে দুই সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ মুম্বই হাইকোর্টের রায় 'সাসপেন্ড' করে এবং সাইবাবাদের মুক্তি স্থগিত করে। হাইকোর্টের এই ধরনের রায়কে এক শুনানিতেই সাসপেন্ড করার রায়ের বিরুদ্ধে সারা দেশের বিশিষ্ট আইনজীবীরা সরব হন। শেষ পর্যন্ত এবছর সাইবাবাদের মুক্তি ঘটে, তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার কোনও অভিযোগই আদালতে প্রমাণিত হয় না। দশটা বছর জেলে বন্দি থেকে, শেষে নিরপরাধ হয়ে মুক্তি হওয়ার প্রক্রিয়ায় শুধু নিশ্চিত হয়ে যায় সাইবাবার মৃত্যু।

আরও পড়ুন- ৯০% অক্ষম, হুইলচেয়ার ছাড়া নড়তে পারেন না! ১০ বছর জেলে কেন কাটাতে হলো শিক্ষক সাইবাবাকে?

জি এন সাইবাবার পরিণতি আসলে ২০১৪ সাল পরবর্তী ভারতের এক সূচনা সংগীত। সাইবাবাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এই নতুন দেশে বিরুদ্ধ কণ্ঠস্বরের কোনও জায়গা নেই। আজকের শাসকরা যে নতুন ভারত গড়তে চায়, তা চরিত্রগতভাবে এক কর্তৃত্ববাদী, এককেন্দ্রিক, ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরাষ্ট্র। বহুত্ববাদী, গণতান্ত্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাবাদর্শে গড়ে ওঠা ভারত ভাবনার বিপ্রতীপে এই নতুন ভারতের অবস্থান। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস নেই বলে এই নতুন ভারত কোনও বিরুদ্ধ স্বর সহ্য করতে পারে না। এই শাসকেরা কলমকে রাষ্ট্রের প্রধান শত্রু ঘোষণা করে, তাদের বহু আলোচিত চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধের লক্ষ্য খোলাখুলি নাগরিক সমাজ। আমাদের সংবিধান বলছে, গণতন্ত্র হল জনগণের শক্তি, কখনওই তা রাষ্ট্রশক্তি নয়। আর আজকের শাসকদের মতে, এদেশের মানুষ আসলে প্রজা (সাবজেক্ট), রাষ্ট্রের আদেশ মান্য করাই তার একমাত্র কাজ, অথচ সংবিধান বলছে নাগরিককে তার অধিকার দিতে রাষ্ট্র দায়বদ্ধ। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, মানুষের জন্য ন্যায়ের লড়াইয়ে আগ্রহী সাইবাবা শাসক প্রকল্পিত হুকুম বরদার হতে রাজি ছিলেন না তাই তাঁর এই পরিণতি।

সাইবাবার এই আখ্যান বসন্তা ছাড়া সম্পূর্ণ হবে না। কলকাতা ও দিল্লিতে সাইবাবার মুক্তির দাবিতে আহূত কয়েকটি সভায় উপস্থিত থেকে দেখছি কী পরম প্রত্যয়ে, দৃঢ় কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন সাইবাবা সহ সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের দাবি। রাষ্ট্রের কোনও হুমকির কাছে মাথা না নুইয়ে বসন্তা হয়ে উঠেছেন ভারতের অধিকার আন্দোলনের এক হার না মানা মুখ। বিজ্ঞ বিচারপতির সাইবাবার মগজে কার্ফিউ বসানোর নিদান পরাজিত, সাইবাবা বেঁচেছেন এক প্রতিস্পর্ধা হয়ে। আর সেই অদম্য জেদ, লড়াকু মেজাজ আমাদের মধ্যে থেকে যাবে তাঁর কবিতায়:

আমার মৃত্যু স্পর্শহীন হাসিতে ক্ষিপ্ত হয়ে / আমাকে আবারও তারা পাঠাল কারাগারে/ কিন্তু আবার আমি একগুঁয়ের মতো মৃত্যুকে প্রত্যাখান করলাম / দুঃখের বিষয় হল এই যে/ তারা বুঝতেই পারছিল না কীভাবে/ আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে/ কারণ আমি যে বেড়ে ওঠা ঘাসের শব্দ শুনতে বড্ড ভালোবাসি। (ভাষান্তর- মৃন্ময় চক্রবর্তী)

More Articles