সৌরভের নতুন চালে রাজনীতি কি সত্যিই নেই?

Sourav Ganguly: বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর সৌরভ! আসলে কোন সত্যি লুকিয়ে আছে এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে?

কখনও জনপ্রিয় টিভি শো’র হোস্ট, কখনও আবার তেল, সবান অথবা বিস্কুটের বিজ্ঞাপন! পুরো দমে খেলা ছাড়ার পর বাংলার মহারাজ এখনও পুরো দমে টিভির পর্দার ‘ফেস’! অবশ্য বিজ্ঞাপন অথবা কোনও অনুষ্ঠান ছাড়াও বারবার শিরোনামে এসেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তফাৎ কেবল এবারকার কারণটা খেলা নয়, রাজনীতি! গেরুয়া নাকি সবুজ, কোন দলের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে সম্পর্ক গভীর, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সকলেই। সৌরভ অবশ্য দিব্যি পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন এতদিন। তবে এবার সেই প্রশ্নে নতুন করে উস্কানি দিল সাম্প্রতিক ঘটনা। বাংলার সৌরভ হলেন ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। আর তারপর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।

ত্রিপুরার পর্যটন দফতরের শুভেচ্ছা দূত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগেই মহারাজকে প্রস্তাব দিয়েছিল ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। আলোচনার পর সেই প্রস্তাব গ্রহণও করেছেন সৌরভ। ত্রিপুরার পর্যটনকে বাড়ানোর লক্ষ্যে সে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী, সুশান্ত চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেন ইতোমধ্যে। তবে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে জল্পনা তুঙ্গে। যদিও সূত্রের খবর, এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন দাদা। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এবার বিজেপির দিকে পা বাড়ালেন?

কিন্তু এই প্রশ্ন তো নতুন নয়, মহারাজকে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তো আগে থেকেই ছিল। সৌরভকে রাজনীতিতে টানার চেষ্টা এর আগেও বহুবার হয়েছে। অবশ্য সৌরভ খুব গা বাঁচিয়ে খেলেছেন বলা চলে। সৌরভকে না পেয়ে এমনকি স্ত্রী ডোনা গাঙ্গুলিকেও দলে টানার চেষ্টা করেছিল বিজেপি সরকার। বিজেপির রাজ্য সম্পাদিকা সংঘমিত্রা চৌধুরী এর আগে প্রকাশ্যে ডোনা গাঙ্গুলিকে দলে টানার ইচ্ছের কথা বলেছিলেন, যদিও সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তেই পা বাড়ায়নি গাঙ্গুলি পরিবার। তাহলে আজ কেন বেছে নিলেন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার প্রস্তাব? সৌরভ গাঙ্গুলি কি নিজেও জানতেন না এই প্রস্তাবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হবে! অবশ্য এ বিষয়ে সৌরভের অকাট্য যুক্তি, "শাহরুখও তো কলকাতার ব্র‍্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিল। কই তিনি তো রাজনীতিতে আসেননি। শচীন টেন্ডুলকার, ঋষভ পান্থ, কাউকে নিয়েই তো এমন প্রশ্ন ওঠে না! তাহলে কেন কেবল সৌরভ গাঙ্গুলির ক্ষেত্রেই বারবার খোঁজা হয় রাজনীতি?"

অন্যদিকে বিজেপি সরকার সৌরভকে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন এই জল্পনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনে সৌরভের উগড়ে দেওয়া রাগ তো অন্য কথা বলছে। তাঁর বক্তব্য, “কেন বারবার আমার যে কোনও পদক্ষেপকে ঘিরেই রাজনীতির খোঁজা হয়? অন্যদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ায় যদি এইসব প্রশ্ন না ওঠে তবে আমার ক্ষেত্রে কেন?” কারোর সঙ্গে দেখা করা বা কোথাও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়া মানেই যে রাজনীতির অঙ্গ হিসেবে নিজেকে যুক্ত করা নয়, এমনটাই জোর দিয়ে বলেছেন সৌরভ। এদিকে তৃণমূল সরকারের তরফেও পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, খেলা ছাড়ার পর সৌরভ গাঙ্গুলি বিজ্ঞাপন করেই কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন ফলে এই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার সিদ্ধান্ত তো কেবল পয়সার জন্য! তোপ দেগেছেন একাংশ! যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তির এই মতবিরোধ এখনও পুরোটা কাটেনি, সৌরভের আগামী পদক্ষেপই একমাত্র স্থির করতে পারবে আদৌ কোনও রাজনৈতিক রং লাগল কিনা সাম্প্রতিক ঘটনায়!

More Articles