পশু চিকিৎসকরা ব্যর্থ! পোষ্য কুকুরের রোগ নির্ণয় করল চ্যাটজিপিটি
ChatGPT Vet: বর্তমানে GPT-4 দ্বারা চালিত, ChatGPT ইতিমধ্যেই দাবি করেছে প্রায় খান বিশেক পেশার কাজ সে একাই করে ফেলতে পারে।
বিখ্যাত সব কলেজ থেকে পড়াশোনা করে, দীর্ঘ দীর্ঘ বছর ধরে চর্চা করে চিকিৎসকরা যা পারলেন না তা করে দেখাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স! মানুষেরই তৈরি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের চ্যাটবট হারিয়ে দিয়েছে মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে চর্চার শীর্ষে থাকা চ্যাটজিপিটি যা করেছে চিকিৎসকরাও তা পারেননি। একটি কুকুরের দীর্ঘদিনের রোগ নির্ণয় করে ফেলেছে চ্যাটজিপিটি। এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। OpenAI-এর ChatGPT ইতিমধ্যেই কঠিন বেশ কিছু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কুকুরের মালিক টুইটারে পোস্ট করেছেন, পশুচিকিত্সকও তাঁর পোষ্য প্রাণীর স্বাস্থ্যসমস্যা নির্ণয় করতে পারেননি। কিন্তু যখন তিনি তাঁর পোষ্য অসুস্থ কুকুরের দেহের লক্ষণগুলি টাইপ করেন, তখন চ্যাটজিপিটি তাঁকে এই রোগের নিখুঁত সমাধান খুঁজে দেয়।
বর্তমানে GPT-4 দ্বারা চালিত, ChatGPT ইতিমধ্যেই দাবি করেছে প্রায় খান বিশেক পেশার কাজ সে একাই করে ফেলতে পারে। এইসব কাজে আর মানুষের দরকার নেই। তবে চ্যাটজিপিটি যে পশুচিকিত্সকের চাকরিও বিপদে ফেলে দেবে এতটাও আশা করা যায়নি! এই ঘটনার পরে চ্যাটজিপিটির ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। সত্যিই কি মানুষের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবার মানুষের অস্তিত্বই সঙ্কটে ফেলবে?
আরও পড়ুন- ChatGPT: পথের পাঁচালির সমালোচনা থেকে যোগীর মূল্যায়ন! যে পথে অসাধ্যসাধন
টুইটারে ওই কুকুরের মালিক কুপার জানিয়েছেন কীভাবে এই এআই চ্যাটবট তাঁর পোষ্য কুকুরের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছিল। কুপারের কুকুর, স্যাসি, প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত চিকিত্সায় ভালোই সাড়া দিচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি হয় এবং কুকুরটির রক্তাল্পতার সমস্যা আরও খারাপ দিকে যেতে থাকে। একাধিক পশুচিকিত্সকদের সঙ্গে পরামর্শ করা সত্ত্বেও কেউই কুপারকে পোষ্যের সঠিক রোগ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি। সকলেই কুপারকে বলেন অপেক্ষা করতে, স্যাসির অবস্থা কোনদিকে যায় তা খেয়াল রাখতে।
“#GPT4 আমার কুকুরের জীবন বাঁচিয়েছে। আমার কুকুরের টিকবর্ন রোগ ধরা পড়ার পর, পশুচিকিত্সক তার যথাযথ চিকিৎসা শুরু করেন এবং গুরুতর রক্তাল্পতা থাকা সত্ত্বেও তার অবস্থা ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে বলেই মনে হতো আমাদের। তবে, কিছু দিন পর, বিষয়টা আরও খারাপের দিকে বাঁক নেয়," কুপার তার ট্যুইটার পোস্টে লিখেছেন।
চিকিৎসকদের থেকে কোনও যুৎসই উত্তর না পেয়ে, কুপার তাঁর পোষ্য কুকুরের লক্ষণগুলিকে বিশদভাবে বর্ণনা করেন ভাষা মডেল চ্যাটিজিপিটিতে। সেখানেই এই সম্ভাব্য রোগ নির্ণয়ের পরামর্শও চান তিনি। এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি নিজেকে পশুচিকিত্সক বলে দাবি করেনি ঠিকই, তবে জানিয়েছে, স্যাসির রক্তের কাজ এবং লক্ষণগুলি দেখে মনে হচ্ছে পোষ্যটির ইমিউন-মেডিয়েটেড হেমোলাইটিক অ্যানিমিয়া (IMHA) হয়ে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন- সৃজনশীল মানুষ আর বুদ্ধিমান মেশিনের লড়াই! ঠিক কতটা এগিয়ে ChatGPT?
এই নতুন তথ্য জেনেই কুপার অন্য একজন পশুচিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করেন। ওই চিকিৎসক জানান AI এর রোগ নির্ণয় এক্কেবারে সঠিক! তিনি স্যাসির যথাযথ চিকিত্সা শুরু করেন। কুপারের মতে, দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য স্যাসি প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। তবে পোষ্যের ক্ষেত্রে কাজ করে গেলেও, মানুষ যদি সবসময়ই শরীরের রোগের মতো বিষয়ে চ্যাটজিপিটির উপর নির্ভর করতে থাকে তাহলে বিপদ বাড়তেও পারে। নিজের শারীরিক পরীক্ষা এখনও রোগ নির্ণয়ের সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। তাই প্রথমেই ডাক্তারের সঙ্গেই পরামর্শ করা শ্রেয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভালো ঠিকই তবে সবসময় সর্বোত্তম উপায় নাও হতে পারে।
এআই-কে অতিরিক্ত সাহায্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশ কিছু কঠিন ক্ষেত্রে এটি বিশেষ সাহায্য করতেও পারে। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে পশুচিকিৎসায় এআই-এর ভূমিকা বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে। পশুপ্রেমীদের জন্য খুশির খবর হলেও, পশুচিকিৎসকদের কাজ আর বিশ্বাসযোগ্য থাকবে কিনা সেই প্রশ্ন বেশ জাঁকিয়ে বসছে।