কবে কাটবে রেমাল-মেঘ? যা জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর

Weather Update: হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী কাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার উন্নতি হতে চলেছে। তবে বৃষ্টি বাড়বে উত্তরবঙ্গে।

রবিবার পশ্চিমবাংলা হয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রেমালের প্রভাবে রবিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত তাণ্ডব দেখেছে দুই বাংলারই বিস্তীর্ণ অংশ। তবে বাংলাদেশে আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শক্তি হারাতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। তবে তাতেও ক্ষয়ক্ষতি কিছু কম হয়নি বাংলাদেশে। রবিবার সন্ধে থেকে যে দুর্যোগ আরম্ভ হয়েছিল বাংলায়, তা চলেছে প্রায় সোমবার সারা দিনটাই। সোমবার সকাল থেকেই ভারী বৃষ্টিতে ভিজেছে বাংলা। এ দিন সারাদিনটাই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল হাওয়া অফিস। তবে বিকেল থেকে কিছুটা হলেও কমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী কাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার উন্নতি হতে চলেছে। তবে বৃষ্টি বাড়বে উত্তরবঙ্গে। তবে একেবারে আবহাওয়ার হাল ফিরতে ফিরতে ২ জুন। তেমনটাই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।

রেমালের পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। সে নিয়ে জারিও হয়েছিল সতর্কতা। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল রবিবার বাংলা দিয়ে ক্রমে প্রবেশ করে বাংলাদেশে। তার পর রবিবার রাতে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং এপার বাংলার সাগরদ্বীপে মধ্যবর্তী অংশে আছড়ে পড়ে সেটি। এরপরপূর্বাভাস মতই উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল ঘূর্ণিঝড়টি। সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি দূর্বল হয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হয়ে যায়। এরপরেও তা উত্তর দিকেই অগ্রসর হচ্ছিল। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদও তা ঘূর্ণিঝড়ই ছিল। তার অবস্থান ছিল বাংলাদেশের উপকুলবর্তী অঞ্চল এবং পশ্চিমবাংলার উপকূলবর্তী অংশে। তবে গত ছয় ঘণ্টায় পনেরো কিলোমিটার বেগে এগোতে শুরু করে সেটি। সোমবার বিকেল থেকেই সেটি উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং দূর্বল হয়ে ফের গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কথা তার।

আরও পড়ুন: বাংলা জুড়ে তাণ্ডব সুপার সাইক্লোন ‘রেমালে’র! কোথায় কত ক্ষয়ক্ষতি?

আবহাওয়া দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, আগামীকাল থেকেই আবহাওয়ার উন্নতি হতে শুরু করবে দক্ষিণবঙ্গে। তবে বৃষ্টি এখনই থামছে না। আগামী কাল অর্থাৎ মঙ্গলবারও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বঙ্গে। দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া-হুগলির পাশাপাশি মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। জারি হয়েছে কমলা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে দুই মেদিনীপুর,পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এও। অতিভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে।

ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে দার্জিলিং এবং কালিম্পং-য়ে। একই সঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার এলাকায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। বঙ্গের উপকূল সংলগ্ন এলাকাতেও ঝোড়ো হাওয়া আশি থেকে নব্বই কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। সঙ্গে হতে পারে দমকা হাওয়াও। প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর।

আরও পড়ুন:শক্তি কমলেও আজও তাণ্ডব রেমালের! কোথায় কোথায় তুমুল ঝড়-বৃষ্টি?

আগামী কয়েকদিনে পাল্লা দিয়ে বাড়বে উত্তরবঙ্গের দুর্যোগ। আগামী ২৯মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের উপর দিকের পাঁচ জেলা তথা দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে খবর। মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দমক বাড়লেও দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদেরা। এর মধ্যেই কলকাতা-সহ বাংলার একাধিক আসনে ভোট রয়েছে আগামী ১ জুন। ইতিমধ্যেই রেমালের প্রভাবে প্রভূত ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের একাধিক এলাকায়। মৃত্যু হয়েছে পর্যন্ত মানুষের। সেই চোট সারিয়ে কবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বাংলা, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য।

More Articles