বিক্রির নিরিখে একসময় ছিল শীর্ষে, কেন বন্ধের পথে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই সংবাদপত্রটি?

Oldest Newspaper : বন্ধ হতে চলেছে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সংবাদপত্র, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল উইনার জিইটাং সংস্থা?

হাতে হাতে মোবাইল এসে গিয়ে অভ্যাসে খানিক বদল হয়ে ঠিকই তবে একটা সময় পর্যন্ত কম বেশি সব বাড়িতেই ঘুম ভাঙতো সংবাদপত্রের হেডলাইন পড়েই। কোন জিনিসের দাম কতটা বাড়ল, কোথায় জালিয়াতি ধরা পড়ল, খুনখারাপি, রাহাজানি সব কিছুর হদিশ মেলে ওই কয়েক পাতার নথিতেই। খবরের কাগজের সঙ্গে সম্পর্ক তাই অতি প্রাচীন। আজ মোবাইলে ই পেপার এসে অবশ্য অনেকটাই থাবা বসিয়েছে অফলাইন কাগজের বাজারে। বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে তাই জনপ্রিয় কাগজের অফিসগুলোও অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে খবর সরবরাহ শুরু করেছে। কিন্তু জানেন কি আজকের দিনে ইতিউতি গজিয়ে ওঠা অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের যে যাত্রাপথ তার একবারে সূচনা পর্বে ছিল বিশ্বের কোন সংবাদ পত্র?

worlds one of oldest newspapers to end daily print run and to move online

বিশ্বের প্রাচীন সংবাদপত্রগুলির মধ্যে একটি হল, ‘উইনার জিইটাং’। গত ২০০৪ সালের হিসাব বলছে সে সময় সারা বিশ্বের নিরিখে সর্বাধিক বিক্রি জয়া কাগজ হিসেবে শীর্ষে ছিল এই কাগজটি। যদিও এর পর ক্রমেই অনলাইন মিডিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়ায় পিছু হটতে থাকে এককালে সর্বাধিক বিক্রি হওয়া এই কাগজটিও। এমনকী বর্তমানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার এই সংবাদপত্রটির ছাপা বন্ধ হতে চলেছে বলেই সূত্রের খবর। ওই দেশের সংসদে ইতোমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। হালফিলে গজিয়ে ওঠা একাধিক মাধ্যমের মতো উইনার জিইটাংও একই পথে পা বাড়াতে চলেছে এবার। তাই ছাপা বন্ধ হয়ে গেলেও অনলাইনে প্রকাশনা শুরু করা হবে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই সংবাদ পত্র উইনার জিইটাং। অর্থাৎ এবার চাপার অক্ষরে নয়, অনলাইনে দেখা যাবে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই সংবাদপত্রটি

আরও পড়ুন - কেন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর দরকার পড়ল নতুন সংসদ ভবনের?

ইতিহাস বলছে, ১৭০৩ সালে প্রথম পথচলা শুরু করে উইনার জিইটাং। শুরুর সময় অবশ্য এই নামেই পরিচিত ছিল না কাগজটি। সে সময় এর নাম ছিল, ‘উইলারিসচেস দিয়ারিয়াম’। এর প্রায় ৭৭ বছর পর অর্থাৎ ১৭৮০ সালে এটির নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় ‘উইনার জিইটাং’। একসময় বিশ্বের নিরিখে দুর্দান্ত বাজার ছিল প্রাচীন সংবাদপত্রটির। বিক্রির দিক থেকে ২০০৪ সালেও ছিল শীর্ষ স্থানে। কিন্তু পরবর্তীতে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ক্রমেই বাজার পড়তে থাকে এটির। যার ফল স্বরূপ আজকের এই সিদ্ধান্ত। এতদিন ধরে নিজেদের জায়গা থেকে কিছুতেই সরতে চায়নি তারা, এই বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে অফলাইন কাগজটিকে টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ছাপা বন্ধ হচ্ছে উইনার জিইটাং-এর।

প্রসঙ্গত চলতি বছরের জুলাই মাসের এক তারিখ থেকেই অনলাইনে পথচলা শুরু হবে এই সংবাদপত্রটির। যদিও প্রায় ৩২০ বছর আগে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক এই সংবাদপত্রটির ছাপা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুশি নন, প্রশাসন থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের অনেকেই। উইনার জিইটাং ব্র্যান্ডটির এতো বছরের ইতিহাস অফলাইন থেকে সরে এসে অনলাইনেও একই ভাবে বজায় রাখা সম্ভব কিনা সেটি নিয়েই এখন চলছে জোর তরজা।

More Articles