ভূমিকম্পের ১২৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার দু'মাসের শিশু! যে ঘটনায় অবাক উদ্ধারকারীরাও

Turkey Earthquake: এখনও অবধি তুরস্ক এবং সিরিয়া জুড়ে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৬,২১৭। শুধু তুরস্কেই মৃতের সংখ্যা ৩১,৬৪৩-এ পৌঁছেছে।

১২৮ ঘণ্টা! গুঁড়িয়ে যাওয়া বাড়ির নিচে জলহীন, খাবারহীন, উষ্ণতাহীন ১২৮ টি ঘণ্টা! দিনের হিসেবে ৫ দিনের কিছু বেশিই! প্রাণ কতক্ষণ দেহকে আঁকড়ে থাকে? যতক্ষণ বাঁচার জেদ! জেদের বয়স যদি হয় দুই মাস? একরত্তি প্রাণ ভূমিকম্পের বীভৎস আবহে বেঁচে থাকার, টিকে থাকার কোনও রসদ ছাড়াই কাটিয়েছে ৫ টা দিন! তুরস্কের আন্তাকিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই মাসের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে, ১ দিন, ২ দিন নয়, প্রায় ১২৮ ঘণ্টা পরে। এই অঞ্চলে শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রায় ৫ দিন পর এক শিশুর বেঁচে থাকা তাজ্জব করেছে উদ্ধারকারীদেরও।

মুখ ধুলো-ময়লায় মাখা। চোখে বিস্ময় আর বাঁচার তীব্র জেদ! শিশুটির ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল। আর তাঁর বেঁচে থাকার অত্যাশ্চর্য ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষকে আস্থা জুগিয়ে চলেছে। উদ্ধারের একদিন পরেই আরেকটি ভিডিও মানুষের মোবাইলে মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুটিকে স্নান করিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। পরম তৃপ্তির সেই দৃশ্য মানুষকে চরম দুর্ভোগেও বেঁচে থাকার সাহস জোগাচ্ছে।

আরও পড়ুন- তুরস্কের মতোই ভয়ংকর ভূমিকম্পের সামনে ভারত? কোন সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছেন এই ‘ভবিষ্যদ্বক্তা’

 

এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প শেষ কবে পৃথিবীতে ঘটেছে ভাবতে গেলেও সময় লাগছে বেশ। তুরস্ক ও সিরিয়াতে বীভৎস ভূমিকম্পের পর ৭ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও অবধি তুরস্ক এবং সিরিয়া জুড়ে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৬,২১৭। শুধু তুরস্কেই মৃতের সংখ্যা ৩১,৬৪৩-এ পৌঁছেছে। সিরিয়ায় নিশ্চিত মৃত্যুর সংখ্যা ৪,৫৭৪। এই মৃত্যুস্তূপের মধ্যে ২ মাসের শিশুর বেঁচে থাকার ঘটনা তাই তোলপাড় করেছে এই গ্রহকেই! শুধু ভূমিকম্প নয়, শৈত্যপ্রবাহের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে তুরস্কে। বারেবারে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে উদ্ধারকাজ। প্রকৃতির কারণে উদ্ধারে দেরি হওয়ায় বেড়েছে মৃতের সংখ্যা।

আর এই সব ঘটনার মধ্যেই, চরম প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ে গিয়েছে দুই মাসের প্রাণ! ১২৮ ঘণ্টা ধরে প্রিয় কোল ছাড়া, খাবার ছাড়া, ভয়ে আতঙ্কে, যন্ত্রণায় বেঁচে থেকেছে সে। ৫ দিন পরে স্নান করে খেয়ে যে হাসি ফুটেছে সেই শিশুর মুখে, তার চেয়ে কোনও কিছুই মূল্যবান হতে পারে না সম্ভবত। তুরস্ক এবং সিরিয়ায় এমন বিপর্যয়, সমস্ত যন্ত্রণা আর আতঙ্কের মাঝে প্রাণের আশা জাগানোর জন্য শিশুটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিশ্বের সব মানুষ।
এই একরত্তিকে ছাড়াও উদ্ধারকর্মীরা জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে দুই বছরের এক কন্যাকে, একজন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং চার বছরের এক শিশু এবং তার বাবাকেও উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপ থেকে।

জাতিসংঘের মতে, তুরস্ক এবং সিরিয়া জুড়ে কমপক্ষে ৮৭০,০০০ মানুষের খাদ্য প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ভূমিকম্পে প্রায় ২৬ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

More Articles