তুরস্কের মতোই ভয়ংকর ভূমিকম্পের সামনে ভারত? কোন সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছেন এই 'ভবিষ্যদ্বক্তা'
India Facing Earthquakes soon : এবার নাকি ‘লক্ষ্য’ ভারত? খুব শীঘ্রই ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, আফগানিস্তানও ভয়ংকর ভূমিকম্পের কবলে পড়তে চলেছে?
চোখের পলক পড়তে না পড়তেই সংখ্যাটা বেড়ে যাচ্ছে। কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন, এখনও চারিদিকে ধ্বংসস্তূপ। তুরস্ক ও সিরিয়ার ভয়াবহ ছবিটা এখনও বদলায়নি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৫,০০০-এর গণ্ডি। তুরস্ক প্রশাসনের আশঙ্কা, এখানেই শেষ নয়। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভেঙে যাওয়া বাড়ি, রাস্তার বিপুল ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক দেহ পড়ে রয়েছে। শতাব্দীর ভয়ংকর ভূমিকম্পগুলির মধ্যে অন্যতম এই ঘটনায় গোটা পৃথিবীই এগিয়ে এসেছে তুরস্ক, সিরিয়ার দিকে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে চারবার ভূমিকম্প, তথ্য আর ছবি দেখে ভয়ে শিউরে উঠছেন অনেকেই।
ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে গিয়েছে ভারতও। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তুরস্ক, সিরিয়ার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। এর মধ্যেই ফের একবার শিউরে ওঠার মতো খবর সামনে এল। তুরস্কের এই ভূমিকম্পের রেশ নাকি এখনও শেষ হয়নি! এরকমই বড়, বীভৎস ভূমিকম্পে ফের কাঁপতে চলেছে পৃথিবী। আর এবার নাকি তার ‘লক্ষ্য’ ভারত? খুব শীঘ্রই ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, আফগানিস্তানও ভয়ংকর ভূমিকম্পের কবলে পড়তে চলেছে? এমনই ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করলেন নেদারল্যান্ডের এক বিজ্ঞানী, ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস।
আরও পড়ুন : তুরস্কের ভূমিকম্পের তিনদিন আগেই করেছিলেন ভবিষ্যদ্বাণী, কে এই ‘রহস্যময় বিজ্ঞানী’?
তুরস্কের ভূমিকম্প হওয়ার পরই সংবাদ শিরোনামে আসেন ফ্রাঙ্ক। এই ডাচ গবেষকের একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে, ‘সোলার সিস্টেম জিওমেট্রি সার্ভে’। মূলত ভূতাত্ত্বিক বিষয় নিয়েই কাজকর্ম হয় এখানে। এই প্রতিষ্ঠানেই ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের নিজস্ব কিছু তত্ত্ব রয়েছে। তার মতে, মহাবিশ্বের সমস্ত বস্তুর অবস্থান, জ্যামিতিক অঙ্ক, প্রভাব পর্যালোচনা করে আগে থেকে ভূমিকম্পের ব্যাপারে বলা যায়।
সেই তত্ত্বকে হাতিয়ার করেই গত ৩ ফেব্রুয়ারি টুইটারে ভবিষ্যদ্বাণী করেন ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস। তাঁর বক্তব্য ছিল, শীঘ্রই তুরস্কে ভূমিকম্প আসবে। তিনদিন পর, ৬ ফেব্রুয়ারির দিন ঠিক সেটাই হল। ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ছবিটা ঠিক কীরকম, সেটা নতুন করে বলে বোঝাতে হবে না। তারপরই ফের নতুন ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ নিয়ে হাজির হলেন ফ্রাঙ্ক। টুইটারে একটি বিশেষ ভিডিও আপলোড করেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, এই ভূমিকম্পের তীব্রতা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ভূ-ভাগের তলদেশ এখনও নাকি অশান্ত রয়েছে। খুব শীঘ্রই সেই প্রভাব ফের পড়তে চলেছে পৃথিবীতে।
Dutch researcher @hogrbe who anticipated the quake in #Turkey and #Syria three days ago had also predicted seismic activity anticipating a large size earthquake originating in #Afghanistan, through #Pakistan and #India eventually terminating into the Indian Ocean. @AlkhidmatOrg pic.twitter.com/qdg4xxREGf
— Muhammad Ibrahim (@miqazi) February 6, 2023
কী বলেছেন ফ্রাঙ্ক? তাঁর বক্তব্য, তুরস্কের ভূমিকম্পের পর সিসমিক তরঙ্গ ক্রমশ পূর্বদিকে সরছে। এরপর খুব শীঘ্রই আফগানিস্তানে আছড়ে পড়তে চলেছে। তারপর সেই ভূমিকম্পের তীব্রতা সরে যাবে ভারত মহাসাগরের দিকে। সেজন্য সেই প্রভাব পড়বে ভারত, পাকিস্তানের ওপরও। তুরস্কের মতোই ভয়ংকর বিপদের মুখে নাকি পড়তে পারে ভারতও। ফ্রাঙ্কের বক্তব্য, এই অঞ্চলের পরিবেশের অস্থিরতা, ওঠা-নামা, অতিরিক্ত ঠাণ্ডার পাশাপাশি ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই গরম বাড়ছে। এসবই ভয়ানক অস্থিরতার দিকে অঙ্গিত করছে। তবে হুগারবিটস এই কথাও বলেছেন যে, এটা কেবল ধারণামাত্র। তাঁর নির্দিষ্ট তত্ত্বের ভিত্তিতে গণনা করে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। হয়তো ভয়ানক ভূমিকম্প নাও হতে পারে। কিন্তু আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : লাশের সংখ্যা ১৫,০০০! তিন দিন পরেও কেন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা যাচ্ছে না মানুষদের?
তুরস্কের ভূমিকম্পের আগেও ঠিক এমনই কথা বলেছিলেন ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস। ফের একবার সেই ভূমিকম্পের ভবিষ্যদ্বাণী করায় সেই দিকেই নজর নেট নাগরিকদের। বিজ্ঞানীরা অবশ্য এই তত্ত্বে খুব একটা পাত্তা দিতে নারাজ। কারণ, ফ্রাঙ্কের এই থিয়োরি এখনও সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। এভাবে আগেভাগে ভূমিকম্পের ভবিষ্যদ্বাণীও করা যায় না। মাঝে মাঝে একটা-দুটো কাকতালীয় ঘটনা ঘটে যেতে পারে, কিন্তু সবসময় যে সেই কথা ফলে যাবে, তার মানে নেই। আপাতত এই ইস্যু নিয়েই দ্বিধাবিভক্ত সোশ্যাল মিডিয়া। সত্যিই কি ভয়াবহ তীব্রতার ভূমিকম্প ধেয়ে আসতে চলেছে ভারতের দিকে? হুগারবিটসের ভবিষ্যদ্বাণী কি সত্যিই ফলে যাবে? আপাতত সময়ের অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।