২০২৪: যে ন'টি আত্মজীবনী পড়তেই হবে
2024 Must Read: বইপ্রেমীদের অবসর উপভোগ্য করে তোলার একমাত্র উপায় চমৎকার কিছু বই। তাই আপনাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি ন'টি অনন্য আত্মজীবনীর সন্ধান, যা আপনাদের নতুন বছর আরও রঙিন করে তুলবে।
২০২৪ আসন্ন প্রায়। কেমন কাটতে চলেছে নতুন বছর? বইপ্রেমীদের অবসর উপভোগ্য করে তোলার একমাত্র উপায় চমৎকার কিছু বই। তাই আপনাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি ন'টি অনন্য আত্মজীবনীর সন্ধান, যা আপনাদের নতুন বছর আরও রঙিন করে তুলবে। আসুন এক ঝলক দেখে নিই সেই বইগুলি—
এডুকেটেড
টারা ওয়েস্টওভারের প্রাথমিক জীবন কেটেছে আইডাহোর পাহাড়ি অঞ্চলে। জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে বাস করত তাঁদের পরিবার। হাসপাতালে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। টারার বসন্ত কাটত মায়ের সঙ্গে আয়ুর্বেদিক গাছগাছড়া সংগ্রহ করে। শীতকালে বাবার পরিত্যক্ত ভগ্নস্তূপ থেকে চলত জিনিসপত্র সংগ্রহ। এরই মধ্যে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় অঙ্ক আর ব্যকরণ শিখতে থাকেন টারা। অবশেষে ১৭ বছর বয়সে শিক্ষা শুরু হয় তার। সেখান থেকে ব্রিগহ্যাম ইয়ং ইউনিভার্সিটি হয়ে ক্রমে হাভার্ড, কেমব্রিজ। সেখান থেকে ফিরে দেখা নিজের বাস্তুভিটে। 'এডুকেটেড' এক প্রান্তিক মেয়ের নিজেকে আবিষ্কারের কাহিনি।
বর্ন আ ক্রাইম
কমেডিয়ান ট্রেভর নোয়া, তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে 'দ্য ডেলি শো'য়ের টেবিলে পৌঁছানোর যাত্রাটির কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন একটি অপরাধকে। তাঁর জন্মানোর অপরাধ। ট্রেভরের বাবা ছিলেন শ্বেতাঙ্গ সুইস। মা একজন কৃষ্ণাঙ্গ কোজা মহিলা। যে সময় তাঁদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, সে সময় এজাতীয় প্রেম নিষিদ্ধ ছিল। ফলে প্রারম্ভিক জীবনে দীর্ঘদিন ট্রেভরকে লুকিয়ে রেখেছে তাঁর পরিবার। ভয়, সরকার টের পেলেই ছিনিয়ে নিয়ে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের অত্যাচারী রাজত্ব যখন শেষ হল, ঠিক সেই মুহুর্ত থেকে এক মুক্তির পথচলা ট্রেভর ও তাঁর মায়ের। 'বর্ন আ ক্রাইম' এক দুষ্টু শিশুর দায়িত্বশীল, স্বাধীন ও বিখ্যাত যুবা হয়ে ওঠার কাহিনি।
লং ওয়াক টু ফ্রিডম
নেলসন ম্যান্ডেলার কাহিনি কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু তা মোটাদাগে। এই বই ধরে রাখে উত্তমপুরুষে জগদ্বিখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গ নেতার জীবনের খুঁটিনাটি। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রাম্য ছেলেবেলা থেকে ২৭ বছর দীর্ঘ কয়েদের অভিজ্ঞতা আবেগঘন রূপ পায়। ব্রিটিশ-বিরোধী লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে উঠে আসেন দেশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি। এই বই সেই ঘটনাবহুল জীবনযাত্রার সাক্ষী।
আরও পড়ুন: ২০২৩: বর্ষশেষে ফিরে দেখা পাঁচটি বাংলা বই
মালালা'জ ম্যাজিক পেন্সিল
মালালা ইউসুফজাই বিশ্বের কনিষ্ঠতম নোবেল প্রাপক। এই বইতে তিনি তাঁর বিচিত্র জীবন তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানে নারীশিক্ষা নিয়ে তাঁর লড়াই, তালিবান হামলায় মরতে মরতে বেঁচে যাওয়া, মানবিক অধিকার গুলি নিয়ে ক্রমাগত আন্দোলন—ভিন্ন রঙে রঙিন জীবন উঠে এসেছে তাঁর কলমে। একটি সামান্য জীবন, ছোট্ট জীবনও যে পথিবীটা খানিক বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে, তাই ফুটে ওঠে বারবার এই আত্মজীবনীতে।
আই নো হোয়াই দ্য কেজড বার্ড সিংস্
মায়া অ্যাংলো-র এই আত্মজীবনী তাঁর ছোটবেলায় দেখা জাতিবিদ্বেষ তুলে ধরে সপাট। তুলে ধরে অত্যাচারিত হওয়ার কথা। ক্রমাগত লড়ে যেতে কতটা শক্তি লাগে—ফুটে ওঠে তাও। প্রতিরোধ কি খুঁজে পায় কালের কণ্ঠ? হয়ে ওঠে প্রতিবাদ প্রকাশ্য রাস্তায়? জাতিবিদ্বেষের জটিলতা, নিজস্ব পরিচয়ের খোঁজ এবং নিজেকে ব্যক্ত করার তাগিদ পরতে পরতে বুনে চলেছে এই আত্মজীবনীকে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ বর্ষশেষের সেরা ভারতীয় সিনেমা, এখনও দেখেননি?
দ্য গ্লাস ক্যাসেল
জিনেট ক্যাসেলের এই বই সাহিত্যের আত্মজীবনী ধারার মধ্যেও বেশ স্বতন্ত্র। এ জীবনী ব্যক্তিমাত্রের নয়। এ এক অদ্ভুত পরিবারের গল্প। যৌথ যাপনের স্মৃতি। জিনেটের বাবা যখন নেশায় থাকতেন না, তখন সন্তানদের ফিজিক্স, জিওলজি শেখাতেন। মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখাতেন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তিনিই আবার চূড়ান্ত অসৎ, অত্যাচারী। মা স্বাধীনচেতা, পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাননি কখনও। ওয়ালস পরিবারের ছোটরা নিজেই নিজেদের খেয়াল রাখত। তারপর একদিন, বহু ঝঞ্ঝা পেরিয়ে নিউ ইয়র্কে আসার উপায় হল তাদের। বাবা-মা এলেন সন্তানদের পিছন পিছন। ভিটেমাটি ছেড়ে। এক যৌথ বোঝাপড়ার স্বাদ দেয় আত্মজীবনীটি পাঠককে।
ম্যান'স সার্চ ফর মিনিং
ভিক্টর ফ্র্যাঙ্কের আত্মজীবনী। কে এই ভিক্টর ফ্র্যাঙ্ক? সেই সব মানুষদের একজন, যাঁরা হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন। জীবনের দীর্ঘ এক সময় কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে কাটিয়ে এসেছেন যে যুদ্ধপীড়িত মানুষেরা, তাঁদেরই একজন ভিক্টর ফ্র্যাঙ্ক। কিন্তু পার্থক্য, তিনি সেখানেই থেমে থাকেননি। নিজের যন্ত্রণাময় অতীতকে ব্যবহার করেছেন, প্রতিষ্ঠা করেছেন লোগোথেরাপি নামে এক মনোবিজ্ঞানের শাখা, যা দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা পেরিয়েও জীবনের মানে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। মানবতার ক্ষমতা কী, কতদূর প্রতিরোধ মানুষের পক্ষে সম্ভব—তারই এক জীবন্ত দলিল এই বইটি।
শিওরলি ইউ আর জোকিং মিঃ ফেইনম্যান
পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রিচার্ড ফেইনম্যানের আত্মজীবনী। একদিকে যেমন তাঁর বিজ্ঞানচেতনা ফুটে উঠেছে, অন্যদিকে এক কৌতুহলী শিশু কীভাবে বিশ্ববরেণ্য বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠলেন, এ বই সেই গল্প বলে।
দ্য ডায়রি অফ আ ইয়ং গার্ল
আনা ফ্র্যাঙ্কের ডায়রি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের ভয়ে লুকিয়ে থাকা ইহুদি কিশোরীর দিনলিপি। ভয়, আশা, আনন্দ, যন্ত্রণার এক অদ্ভুত মিশেল। কীভাবে জীবন কাটত সে সময় গৃহবন্দি ইহুদিদের? এই বই তার সন্ধান দেয় পাঠককে।