উদ্ধার কোটি টাকার বিরল বোয়া সাপ, যেভাবে পাচারের অভিসন্ধি ভন্ডুল করে দিল বনবিভাগ

Extinct species of snake red sand boa : প্রথমে দেশ থেকে পাচার, তার পর কোটি কোটি টাকায় বিক্রি, ঠিক এমনটাই অভিসন্ধি ছিল পাচারকারীদের। শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেল সবটাই। বনকর্মীদের সহায়তায় উদ্ধার হল বিরল প্রজাতির সাপ রেড স্য...

পাচারের ঠিক আগেই হাতেনাতে ধরা পড়েছে পাচারকারীরা, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযানে নেমেছিল বনদপ্তর। সঠিক মুহূর্তে দুষ্কৃতীদের আটক করে দার্জিলিং থেকে নেপালের পথে বিরল প্রজাতির সাপ রেড স্যান্ড বোয়া পাচারের চক্রান্ত ভন্ডুল করেছে বনদপ্তরের কর্মীরা। সম্প্রতি এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এমনিতেই প্রায় বিলুপ্তির তালিকায় নাম লিখিয়েছে এই রেড স্যান্ড বোয়া সাপের দল, তার ওপর এই পাচারের কান্ড গোটা ঘটনায় যেন ঘৃতাহুতি দিয়েছে ইতিমধ্যেই।

প্রথমে দেশ থেকে পাচার, তার পর কোটি কোটি টাকায় বিক্রি, ঠিক এমনটাই অভিসন্ধি ছিল পাচারকারীদের। শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেল সবটাই। বনদপ্তরের তরফে প্রাথমিকভাবে আটক করা হয় চার পাচারকারীকে। গতকাল ধৃতদের জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। ধৃতরা হল অরিন্দম সরকার, পাসাং লামা শেরপা, আনোয়ার মিঞা, জগদীশচন্দ্র রায়। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, সে বিষয়েও খতিয়ে দেখছে বন বিভাগ। এদিকে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিলিগুড়িতে। জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া এই বিরল প্রজাতির সাপটির কালোবাজারে মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা বলে।

আরও পড়ুন - আঁশে ঢাকা, দাঁতহীন নিরীহ প্রাণী! ভারতের প্যাঙ্গোলিন কেন হু হু করে পাচার হচ্ছে বিদেশে?

সাপ পাচার নিয়ে একটা গোপন খবর প্রথমেই কানে আসে বন বিভাগের। সোমবার বনদফতরের বৈকন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের এনপিপি এক নম্বর রেঞ্জের কাছে খবর আসে, ওই এলাকাতে একটি বাড়িতে বিহার থেকে রেড সেন্ড বোয়া নামে প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির সাপ নিয়ে এনে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। গোপন সূত্রে পাওয়া এই খবরের ভিত্তিতেই বেলাকোবার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্তের নেতৃত্বে শিলিগুড়ি পৌরনিগমের শাস্ত্রীনগর এলাকাতে অভিযান চালায় উত্তরবঙ্গের বনকর্মীরা৷ জানা গিয়েছে, ওই এলাকারই বাসিন্দা পাষাং লামার বাড়িতে অভিযান চালালে উদ্ধার হয় সাপটি।

লম্বায় প্রায় চার ফুট পাঁচ ইঞ্চি, ওজন সাড়ে চার কেজি। পেল্লাই সাইজের এই বিরল সাপটিকে বিহার থেকে উত্তর বঙ্গে আনা হয়েছিল। ধৃতদের যেটা করে জন্য যায়, কালো বাজারে এক কোটি টাকা দাম রাখা হয়েছিল এই সাপটির। এমনকী তার মধ্যে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা অগ্রিম দাবিও নাকি করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, কোনও ভাবেই যেন ঠেকানো যাচ্ছে না বন্যপ্রাণী পাচার। আইন, আদালত, গ্রেফতার, শাস্তি কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। উপরন্তু বর্তমানে দেশি পাচারকারীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক চক্রও। অর্থলোভী মানুষের লোভেই ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে বিরল প্রজাতির প্রাণীরা। নানান জায়গা থেকে বন্যপ্রাণী পুলিশ ও বন দফতরের চোখে ধুলো দিয়ে এনে এই শিলিগুড়ি বা উত্তরবঙ্গ করিডর হয়ে দিনের পর দিন পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বিপন্নদের। জানা যাচ্ছে, বন্যপ্রাণী পাচারে শিলিগুড়ি এখন আন্তর্জাতিক রুট হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে আরও করা পদক্ষেপ নিচ্ছে এবার বন বিভাগ। আজকের রেড স্যান্ড বোয়া সাপ উদ্ধার তাই সত্যিই দারুণ সাফল্য।

More Articles