ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল'! ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নিয়ে যা জানাল হাওয়া অফিস
Cyclone Remal Update: আবহাওয়া দফতরের প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে একটি ঘূর্ণাবর্ত। সেটি সোজা উত্তর দিকে শক্তি বাড়াবে।
সেটা ২০২০ সালের মে মাস। করোনার ধাক্কার মধ্যেই এসে পড়েছিল সুপার ঘূর্ণিঝড় আমফান। সেই আমফানের স্মৃতি আজও টাটকা বঙ্গবাসীর মনে। সেই স্মৃতি উসকেই ফের মে মাসে আছড়ে পড়তে চলেছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। যার নাম রাখা হয়েছে 'রেমাল'। তেমনই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
মে মাসের শেষ সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। মাঝখানে একটু বৃষ্টিবাদলা হওয়ায় বেশ ঠান্ডা ছিল আবহাওয়া। সোমবার থেকেই গরম বাড়তে শুরু করেছে কলকাতা-সহ দক্ষিণ বঙ্গে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এবার তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়বে। উপকূল ও পশ্চিমের জেলাগুলিতে গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া বাড়তে থাকবে আগামী সপ্তাহ থেকেই। ফের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে তাপমাত্রা।
আরও পড়ুন:ইয়াস, আমফানের চেয়েও বীভৎস! ১০০০ জনের সলিল সমাধি হয় কলকাতার যে ঘূর্ণিঝড়ে
তবে তার আগে বৃষ্টির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহবিদেরা। মঙ্গল ও বুধবার রাজ্যের কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলবে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির মতো উপরের পাঁচ জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে বিক্ষিপ্তভাবে।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এমনিতে ১৯ মে নাগাদ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করবে। এরই মধ্যে আগামী ২০ মে নাগাদ আন্দামন সাগরে একটি সিস্টেম তৈরি হবে। ওই সিস্টেমে ফলে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। ২৫ মে সন্ধ্যার পর সেটি পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করতে পারে। তবে এর গতিপথ ও অভিমুখ কোনদিকে হতে পারে তা এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে অনুমান আমফানের মতোই বিধ্বংসী হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে সেটি কতটা শক্তিশালী হবে বা আদৌ সুপার সাইক্লোনের রূপ নেবে কিনা তা পরবর্তী সময়ে আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখেই বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
বঙ্গোপসাগরে এই নতুন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে, সেটির নাম রাখা হবে রেমাল। আবহাওয়া দফতরের প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে একটি ঘূর্ণাবর্ত। সেটি সোজা উত্তর দিকে শক্তি বাড়াবে। ২৪ মে সেটি ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে। ২৫ মে সন্ধের পর ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের দিকে যেতে পারে।
আরও পড়ুন:আমফান, বুলবুল অথবা মোকা, কেন বারবার বঙ্গোপসাগরেই জন্ম নেয় মারণ ঘূর্ণিঝড়
২০২০ সালের মে মাসে আমফানের তাণ্ডব দেখেছিল বাংলা। যার ফলে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয় গোটা দক্ষিণবঙ্গে। এর আগেও একাধিক সাইক্লোন এই মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছে। ফলে এই ঘূর্ণিঝড়টির শক্তিশালী রূপ ধারণ করার সম্ভবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদি তা হয়, কতটা ভয়ঙ্কর হতে চলেছে রেমাল। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঝড়ের কেন্দ্রে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার হতে পারে। যার জেরে উপকূল এলাকায় কিছু ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৪ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ মে পর্যন্ত। তবে ঘূর্ণাবর্ত পুরোপুরি তৈরি হওয়ার আগে সাইক্লোনের গতিপথ ও শক্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস করা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। এখন থেকেই সেটির উপর নজর রেখে চলছে হাওয়া অফিস।