মন বসে না শহরে? এক ছুট্টে চলে আসুন নির্জনতম এই সৈকতে
Mousuni Island: সমুদ্র ভালোবাসেন? ভালোবাসেন নীল জলে পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দেখতে চান। তবে আপনার সপ্তাহান্তের ডেস্টিনেশন হতে চলেছে মৌসুনি আইল্যান্ড।
শহরের ব্যস্ততম দিনে মন বসছে না কাজে। কিন্তু হাতে ছুটিছাটা তেমন নেই। সপ্তাহান্তের দিন দুয়েক জোগাড় করতে পারেন বড়জোর। কুছ পরোয়া নেই। হাতের কাছেই রয়েছে নিরিবিলিতে সময় কাটানোর নিশ্চিন্ত ঠিকানা। কোথায় যাবেন ভাবছেন তো। কলকাতা থেকে দুই পা ফেলেই পৌঁছে যেতে পারেন আপনার গন্তব্যে।
সমুদ্র ভালোবাসেন? ভালোবাসেন নীল জলে পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দেখতে চান। তবে আপনার সপ্তাহান্তের ডেস্টিনেশন হতে চলেছে মৌসুনি আইল্যান্ড। একদিন-দুদিনের ছুটিই যথেষ্ট। কলকাতা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এই নির্জন নিরিবিলি দ্বীপ। তিন দিকে চেনাই নদী, একদিকে সাগর, সেই মোহনাতে টলটলে জলের মাঝে কাটতে চলেছে আপনার আগামী কয়েকটা দিন।
আরও পড়ুন: সস্তায় বিশ্বদর্শন! এক যাত্রাতেই মিটবে পাহাড়-জঙ্গল-সমুদ্রের স্বাদ
এখানে সমুদ্র দারুণ শান্ত এবং নির্জন। পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ওই শান্ত সফেদ সমুদ্র। জোয়ারের সময় সমুদ্র উঠে আলে হাতের নাগালে। সমুদ্রস্নানের নেশা থাকলে এই মৌসুমী দ্বীপের সমুদ্র আপনার জন্য আদর্শ। এখানকার বালিও খুব মিহি। তাই বিচে কোনও রকম দুর্ঘটনার ভয় নেই। তার সঙ্গে উপরি পাওনা এখানকার সমুদ্র সৈকতের নির্জনতা, দ্বীপের গাছ-গাছালির সতেজতার গন্ধ।
পর্যটকদের ভিড় নেই, হুড়োহুড়ি নেই, নেই কেনাকাটার সুযোগও। তবে সমুদ্রের আমেজ পেতে এর চেয়ে ভালো আর কী-ই বা হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের নির্জনতম দ্বীপ হিসেবে পরিচিত এই মৌসুনী দ্বীপ যেন দূষণের থেকে শতমাইল দূরে।
কলকাতা থেকে মাত্র চার-পাঁচ ঘণ্টা দূরেই এই দ্বীপ। যেতে পারেন ট্রেনে। পৌঁছতে পারেন সড়কপথেও। যারা বাসে যেতে চান তারা ধর্মতলা থেকে বাস ধরে নামখানা বাসস্ট্যান্ডে আসবেন। বাস ভাড়া ৮৩টাকা। ট্রেনে গেলে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নামখানা যেতে হবে। ট্রেনে ঘন্টা ৩ সময় লাগে। ট্রেন থেকে নেমে মৌসুনি দ্বীপে দুভাবে যাওয়া যায়। আসলে মৌসুনি দ্বীপে যেতে একটা নদী পারাপার করতে হয় যার নাম চেনাই নদী। এই নদীর দুটো ঘাট একটা হুজ্জুতের ঘাট এবং আর একটি বাগডাঙা ঘাট। হুজ্জুতের খেয়াঘাট হয়ে যেতে চাইলে নামখানা স্টেশন থেকে টোটো করে হুজ্জুতের ঘাট যাবেন। ভাড়া মাত্র ৫০টাকা। আর যদি বাগডাঙা হয়ে যেতে চান তাহলে নামখানা স্টেশনে নেমে টোটোয় করে নামখানা বাসস্ট্যান্ডে যাবেন। এখান থেকে ম্যাজিক গাড়ি করে যেতে হবে বাগডাঙা খেয়াঘাট বা দুর্গাপুর খেয়াঘাট। যারা অবশ্য গাড়িতে আসবেন তারা হুজ্জুত ঘাট হয়ে আসবেন কারণ এখানে রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা। সেখান থেকে নদীপথে মৌসুনি দ্বীপ।
আরও পড়ুন: নদী-জঙ্গল মাখা রোদের আদর! এই শরতে ডাকছে পাহাড়ি মায়া-গ্রাম
পাঁচ তারা হোটেলের সুবিধা না থাকলেও থাকার জন্য রয়েছে টেন্ট এবং মাটির বাড়ি। অ্যাডভেঞ্চার যদি পছন্দের হয়, তাহলে মৌসুনি দ্বীপ হতে পারে আপনার স্টপ। এখান থেকে নৌকা করে চলে যেতে পারেন জম্বুদীপেও। সন্ধ্যের সময় এখানকার সমুদ্রের এক অপরূপ সৌন্দর্য। সন্ধ্যে হয়ে গেলে সমুদ্রতটে টর্চ নিয়ে হাঁটলে দেখা যায় মাটিতে জ্যান্ত শামুক, ঝিনুক চলাফেরা করছে। এছাড়াও ক্যাম্পে বন ফায়ারের ব্যবস্থা করা হয়। এখানকার বেশিরভাগ মানুষের জীবিকাই মাছ ধরা। তাদের জীবনযাপনেও রয়েছে তার ছাপ। তার ছোঁয়া পেতে ঘুরে দেখতে পারেন আশপাশের জনবসতিগুলোও।