কে বলেছে ভিনগ্রহীরা নেই! কেন হঠাৎ এমন দাবি ইউএফও গবেষকের?

'Alien' Corpses in Mexico: সম্প্রতি মেক্সিকো কংগ্রেসের আসরে এক ইউএফও বিশেষজ্ঞ ও গবেষক পেশ করেছেন দু'টি কঙ্কাল। যা অনেকটা মানুষের মতোই দেখতে, কিন্তু পুরোটা নয়। যা দেখেশুনে ওই বিজ্ঞানী ও তাঁর সতীর্থদের দাবি, এ আদতেও পৃথিব...

ভিনগ্রহীরা কি আদৌ আছে? নাকি শুধুই কল্পনা। এ নিয়ে যুক্তি-তর্ক-গল্প কোনওটারই শেষ নেই। আজও কোথাও কোথাও মধ্যরাতে 'অ্যাং'-য়েরা যে নেমে এসে 'মিলিপিপ্পিক খ্রুং' বলে ওঠে না, এমন কথা খুব হলফ করে বলা যায় না। ঈশ্বর বা ভূতের মতোই বিশ্বাসীরা বলেন আছে। আর বিশ্বাসে যে মেলায় বস্তু, এ কথা কে না জানে! তবে সবটাই যে তর্কসাপেক্ষ, তা যে নয়, তার প্রমাণ এবার মিলল হাতেনাতে। যা দেখে অবিশ্বাসীরা বিশ্বাস করবেন, তারা আছে। আলবাৎ আছে।

এমনই এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গিয়েছে সম্প্রতি মেক্সিকো কংগ্রেসের আসরে। সেখানে এক ইউএফও বিশেষজ্ঞ ও গবেষক পেশ করেছেন দুটি কঙ্কাল। যা অনেকটা মানুষের মতোই দেখতে, কিন্তু পুরোটা নয়। যা দেখেশুনে ওই বিজ্ঞানী ও তাঁর সতীর্থদের দাবি, এ আদতেও পৃথিবীর কোনও মানুষ বা প্রাণীর কঙ্কাল নয়। যেসব উড়ে আসা জিনিসদের এই পৃথিবীর বলে শনাক্ত করা যায় না, ধরে নেওয়া হয় সেসব সম্ভবত ভিনগ্রহ থেকে আগত। সেই আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্টের উপরেই গবেষণা করেন জেইম মওসন নামে ওই ব্যক্তি। আজ থেকে নয়, প্রায় কয়েক দশক ধরে এই বিষয়টি নিয়ে নানাবিধ গবেষণা করে চলেছেন জেইম। ভিনগ্রহীরা যে আছেই, তা প্রমাণ করতে তৎপরতার অভাব নেই জেইণের। সম্প্রতি তিনিই মেক্সিকো কংগ্রেসের আসরে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন ওই কঙ্কাল দু'টি। স্বভাবতই এই ঘটনাটি ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে। অনেকেই আবার একে ভিনগ্রহী গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বড় মোড় বলেও মনে করছেন।

আরও পড়ুন: ভিনগ্রহীর যান, না শত্রুদের নজরদারি? অবশেষে বিজ্ঞানের হাত ধরেই ইউএফও-র রহস্যভেদ?

জেইম জানান, পেরুর কুসকো শহরের একটি খনি থেকে উদ্ধার হয় ওই দুটি কঙ্কাল। পরীক্ষানিরিক্ষায় নাকি দেখা গিয়েছে, ওই দুটি কঙ্কালের জিনের গঠন মানুষের থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ আলাদা। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মেক্সিকো ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির সহায়তায় কার্বন পরীক্ষা করা হয় ওই দু'টি জিনের। যা দেখে বোঝা গিয়েছে, কম করে হলেও অন্তত এক হাজার বছরের পুরনো তো হবেই ওই দু'টি কঙ্কাল। মেক্সিকোর নৌবাহিনীর সচিবালয়ের অধীন সায়েন্টিফিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথের ডিরেক্টর ওই কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছন যে কোনও ভাবেই ওই কঙ্কালগুলি মানুষের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়।

After the US Congress hearing on UFOs, a man unveils 'alien' corpses in front of Mexico Congress

তবে শুধুমাত্র জেইম একাই নন। ভিনগ্রহীদের অস্তিত্ব সম্পর্কে এর আগে মার্কিন কংগ্রেসের মঞ্চে সাক্ষ্য দিয়েছেন মার্কিন নেভি পাইলট লেফটেন্য়ান্ট ব়্যান গ্রেভস। তিনি জানিয়েছেন, আরও দুই সঙ্গীর সঙ্গে একবার এমনই এক উড়ন্ত জিনিস উড়তে দেখেছিলেন তিনি ভার্জিনিয়া সৈকত উপকূলের কাছে। সেটা ২০১৪ সালের ঘটনা। F-18 বিমান ওড়ানোর সময় হঠাৎ করেই মাথার উপরে তিনি আরেকটি বিমানের মতো উড়ন্ত জিনিস দেখতে পান। একটা স্বচ্ছ্ব গোলকের ভিতরে যেন একটি ধূসর রঙের ঘনক, কতকটা বা কালো। তবে ব়্যানের দৃঢ় বিশ্বাস, ওই ব্যাপারটি মোটেও এই গ্রহের জিনিস নয়।

After the US Congress hearing on UFOs, a man unveils 'alien' corpses in front of Mexico Congress

ব়্যানের পরে জেইমের ভিনগ্রহী প্রসঙ্গে এমন আশ্চর্য এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে দুনিয়া জুড়ে। মেক্সিকো কংগ্রেসের মঞ্চে ওই কঙ্কাল দু'টি প্রদর্শনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ওই সংক্রান্ত ভিডিও-ও সকলের সামনে নিয়ে আসেন তিনি। জেইমের দাবি, ওই কঙ্কাল দু'টির একটিও এই পৃথিবীর কোনও স্থলচর প্রাণীর আদিম রূপ নয়।

After the US Congress hearing on UFOs, a man unveils 'alien' corpses in front of Mexico Congress

তবে জেইমের দাবি ঘিরে উঠে এসেছে একগুচ্ছ বিরোধী দাবিও। অ্যারন ওয়াকার নামে এক নেটিজেনের দাবি, জেইম যে কঙ্কাল দু'টি সামনে এনেছেন, তা আদতেই এলিয়েন বা ভিনগ্রহীদের নয়। বরং নাজকা শিশুদের মৃতদেহ। যা লুঠ করা হয়েছিল সম্ভবত। এমন দাবির কারণও রয়েছে সঙ্গত। ২০১৮ সালেও এমন কয়েকটি কঙ্কাল পেশ করেছিলেন জেইম। সেগুলিকেও এলিয়েনের দেহ বলে দাবি করেন তিনি। তবে পরে জানা যায়, সেগুলি আদতে নাজকা শিশুর কঙ্কাল। তবে কেউ কেউ আবার সমর্থন জানিয়েছেন জেইমের বক্তব্যেই। তাঁদের মতে এই মহাবিশ্বে কোথায় কার অস্তিত্ব লুকিয়ে রয়েছে, তা কি বলা যায়। ফলে জেইম যা বলছেন, তা মোটেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না একেবারে।

আরও পড়ুন: এবার কি সত্যিই আসতে চলেছে ভিনগ্রহীরা? আকাশের ‘রহস্যময় আলো’ নিয়ে তুলকালাম বিশ্ব

ফলে বিশ্বাস- অবিশ্বাসের চিরন্তন খেলা সেই চলছেই জেইমের দাবি ঘিরে। তাঁর আবিষ্কৃত ওই কঙ্কাল দু'টি যে দেখতে বেশ অন্য়ধরনের, এবং মানুষের সঙ্গে তাঁর আকারগত মিল থাকলেও অমিলই বেশি, তা কিন্তু এক বাক্যে মেনেছেন প্রায় সকলেই। তবে সে কঙ্কাল সত্যিই ভিনদেশীর নাকি এক হাজার বছর আগে বসবাসকারী কোনও আদিম প্রজাতির প্রাণীর, তা নিয়ে সন্দেহ নিরশন করা যায়নি এখনও। তবে নতুন করে একটি বিতর্ক উস্কে দিয়েছে যে এই ঘটনা, তা কিন্তু বলাই যায়।

More Articles