৩১ ঘণ্টার বদলে মাত্র ১০ ঘণ্টায় ত্রিপুরা থেকে কলকাতা! কীভাবে সম্ভব?

Agartala-Akhaura railway link: এই রেল পরিষেবা চালু হলে ঢাকা হয়ে আগরতলা-কলকাতা রুটে যাতায়াতের সময় ৩১ ঘণ্টা থেকে কমে ১০ ঘণ্টা হবে।

ত্রিপুরা থেকে যদি রেলপথে কলকাতায় আসতে চান, পাক্কা ৩১ টি ঘণ্টা লাগবে আপনার। বেশিও হতে পারে, তবে দেড়দিনের ঝক্কি অবধারিত! এবার আগরতলা থেকে কলকাতা আসতে পারবেন অর্ধেক দিনেরও কম সময়ে! বিমান নয়, ট্রেনপথেই সম্ভব। ভারতের আগরতলা এবং বাংলাদেশের আখাউড়ার মধ্যে রেল যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। এই মাস থেকেই চালু হবে যাতায়াত। যার ফলে ত্রিপুরা কলকাতার সময়ের দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ১০ ঘণ্টা মাত্র!

ত্রিপুরার পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানিয়েছিলেন উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে রেল পরিষেবা এবং পরিকাঠামোর উন্নয়নের বিষয়ে রাজধানী দিল্লিতে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা করে বিশদ আলোচনা করেছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগের নির্মাণে অতিরিক্ত ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার জন্য DoNER (উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক) মন্ত্রককে অনুরোধ করেন।

এই রেল পরিষেবা চালু হলে ঢাকা হয়ে আগরতলা-কলকাতা রুটে যাতায়াতের সময় ৩১ ঘণ্টা থেকে কমে ১০ ঘণ্টা হবে। ইন্দো-বাংলা রেলপথ সফরে নিশ্চিন্তপুরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন স্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আখাউড়াকে জোড়া হবে। ব্রিটিশ আমলে আগরতলার রেল যোগাযোগ ছিল আখাউড়ার সঙ্গে। ব্রিটিশ আমলের আখাউড়া রেল জংশনটি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের দিকে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বড় যোগাযোগ কেন্দ্রও হবে। ভারত ১,১০০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করেছে এই প্রকল্পে।

আরও পড়ুন- পরিবহন দফতরের উপহারের ঝুলিতে ৯টি নতুন বন্দে ভারত : কোথায় ছুটবে এই ট্রেনগুলি?

ভারতীয় রেলের অংশটি হচ্ছে ব্রডগেজ। বাংলাদেশের আখাউড়ার অংশে ঢুকেই তা মিটারগেজের মধ্যে পড়বে৷ ব্রডগেজে রেলের দু'টি ট্র্যাকের মধ্যে দূরত্ব হয় ১.৬৭৬ মিটার। মিটার গেজে এই দূরত্ব হয় ১ মিটার।

১৫-কিমি-দীর্ঘ এই প্রকল্প ২০০৩ সালে অনুমোদিত হয়েছিল। ভারত আর বাংলাদেশ ২০১৩ সালে রেল প্রকল্পের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক বা মউ স্বাক্ষর করেছিল। ১০.৫ কিলোমিটার পথে মালবাহী ট্রেন চালিয়ে রেলপথের ট্রায়ালের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। যাত্রীবাহী ট্রেন কবে থেকে চলবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা হয়নি। এই রেলপথটি হতে চলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ষষ্ঠ চালু রেল সংযোগ। সপ্তমটি হবে অসমের সঙ্গে।

এই রেলপথের লক্ষ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও পর্যটন বাড়ানোর পাশাপাশি ঢাকার মাধ্যমে আগরতলা এবং কলকাতার মধ্যে যাতায়াতের সময় কমানো। ২০১৬ সালে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৩৩.৫২ শতাংশ (৫.০৫ কিলোমিটার) ভারতে এবং বাকি ১০.০১৪ কিলোমিটারই বাংলাদেশে। প্রকল্পটি ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারী সহ বিভিন্ন কারণে তা পিছিয়ে যায়।

 

More Articles