জালিয়াতি করে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি? গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যে মারাত্মক অভিযোগ সামনে এল
Gautam Adani Fraud Allegation : কয়েকশো কোটির সাম্রাজ্যের ভিত্তি নাকি জালিয়াতি, লোক ঠকানো! স্রেফ কারচুপি করেই আদানিদের সাম্রাজ্য তৈরি হয়েছে!
তিনি এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। বিশ্বের প্রথম পাঁচ ধনী ব্যক্তিদের মধ্যেও তাঁর নাম আসে। গোটা ভারতেই তাঁর সাম্রাজ্য; দেশের বাইরেও রয়েছে তার বিস্তার। কথা হচ্ছে গৌতম আদানিকে নিয়ে। তিনি এবং তাঁর আদানি গ্রুপ এই মুহূর্তে ভারতের শিল্প মানচিত্রে উঁচু জায়গায় রয়েছে। তবে সম্প্রতি সেই ভাবমূর্তির ওপরই আঘাত পড়ল। এই বিরাট, কয়েকশো কোটির সাম্রাজ্যের ভিত্তি নাকি জালিয়াতি, লোক ঠকানো! স্রেফ কারচুপি করেই আদানিদের সাম্রাজ্য তৈরি হয়েছে! এমন খবর সামনে আসার পরই রীতিমতো ঝড় শুরু হয়েছে।
আমেরিকার একটি গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সম্প্রতি একটি রিপোর্ট সামনে এনেছে। এই পুরো রিপোর্টের ভিত্তিই হল আদানি গ্রুপ এবং গৌতম আদানি। ওই গবেষণা সংস্থার দাবি, বিগত দুই বছর ধরে তারা এই গবেষণা চালিয়েছে। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত, তথ্যপ্রমাণ ও উপযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে তারা। তারপরই কঠোর সিদ্ধান্তে এসেছে তারা। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের দাবি, প্রায় ২১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আদানি গ্রুপের সাম্রাজ্যই তৈরি হয়েছে কারচুপি করে। কীসের কারচুপি? সংস্থার বক্তব্য, বিগত কয়েক বছর ধরে আদানি গ্রুপ নিজেদের শেয়ারের দাম কারচুপি করে বাড়িয়ে চলেছে। সেইসঙ্গে হিসেবের খাতাতেও জালিয়াতি করেছে তারা।
NEW FROM US:
— Hindenburg Research (@HindenburgRes) January 25, 2023
Adani Group – How The World’s 3rd Richest Man Is Pulling The Largest Con In Corporate Historyhttps://t.co/JkZFt60V7f
(1/x)
এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতের বিজনেস টাইকুন ও আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সম্পত্তি তৈরি হয়েছে শেষ তিন বছরে। হিন্ডেনবার্গের দাবি, এই বিপুল সম্পত্তি তৈরিই হয়েছে কারচুপি ও জালিয়াতি করে, শেয়ারের দর বাড়িয়ে। শুধু তাই নয়, গৌতম আদানির দুই ভাই, বিনোদ আর রাজেশ আদানিও এই জালিয়াতির কাজের সঙ্গে যুক্ত। কর ফাঁকি দেওয়ায় রাজেশ আদানিকে দু’বার গ্রেফতারও করা হয়েছিল। এছাড়াও জালিয়াতির নানা অভিযোগ তাঁদের ওপর এসে পড়েছে। তা সত্তেও, আদানি গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন বিনোদ ও রাজেশ।
আরও পড়ুন : গৌতমকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন তাঁর ভাই! এবার বিশ্বসেরা ধনী হবেন বিনোদ আদানি?
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের বক্তব্য, দীর্ঘ এই তদন্তে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বক্তব্য উঠে এসেছে। তাঁরা আদানি গ্রুপের অত্যন্ত কাছের, কেউ কেউ অত্যন্ত উচ্চপদেও রয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এই কোম্পানি আসলে ‘পারিবারিক ব্যবসা’ ছাড়া আর কিছু নয়। এবং বছরের পর বছর অন্যায্যভাবে নিজেদের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে চলেছে তারা। এছাড়াও অভিযোগ, মরিশাস, আরবের মতো বেশকিছু দেশে আয়কর ছাড়ের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে, ওই দেশগুলোয় ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করেছে আদানি গ্রুপ। বেআইনি কাজ, অবৈধ লেনদেন, করফাঁকির মতো একাধিক বিষয়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সেই সংস্থাগুলি।
এরকমই বেশ অনেকগুলিই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে এই গবেষণা সংস্থাটি। অবশ্য আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে সরাসরি এই অভিযোগ নস্যাৎ করা হয়েছে। আদানিদের বক্তব্য, এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাজারে তাদের বিরুদ্ধে বদনাম ছড়ানোর জন্য এসব করা হচ্ছে। অবশ্য হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এই বিশাল রিপোর্ট ইতিমধ্যেই প্রভাব ফেলেছে মার্কেটে। শেয়ার বাজারে আদানিদের শেয়ারের দর হু হু করে কমে যায়। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় তৃতীয় থেকে চতুর্থ স্থানে নেমে এলেন গৌতম আদানিও। মাত্র একটি রিপোর্টে একদিনের মধ্যেই এই অবস্থা! তবে এই দাবি সত্যি কিনা, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হবে।