জয় বাংলা বাতিল বাংলাদেশে? রইল আসল সত্য
Bangladesh Joy Bangla: জয় বাংলাকে স্লোগানটিকে ২০২০ সালে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করা হয়। সেই সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
খবর আসছে পড়শি দেশ থেকে। আসছে ছবি, ভিডিও। যত না সত্য, অপসত্য ঢের বেশি। সংবাদমাধ্যমগুলিতে একের পর এক 'বিস্ফোরক' খবর পেশের তাড়াহুড়োতে উস্কানিমূলক প্রোপাগান্ডা প্রচারই প্রধান হয়ে উঠছে যেন। একাধিক তথ্য সত্য অনুসন্ধান না করেই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে দুই দেশেরই আমজনতার বিভ্রান্তি বাড়ছে। বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্কের তিক্ততা বাড়তে বাড়তে মৃত্যু হচ্ছে সত্যের। যেমন, ব্যাপকভাবে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বলা হচ্ছে, জয় বাংলা স্লোগান নাকি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বাংলাদেশে! সত্যিই কি তাই?
জয় বাংলাকে স্লোগানটিকে ২০২০ সালে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করা হয়। আসল সত্য হচ্ছে, সেই সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সর্বত্র বাধ্যতামূলকভাবে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার আইন বদলে যাচ্ছে। ঠিক যেমন ভারতের সিনেমাহলে বাধ্যতামূলকভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আইন বদল জরুরি, তেমনই৷ বাস্তবে কিন্তু জয় বাংলা স্লোগান দিতে কোনও বাধা নেই। বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক জানিয়েছেন, জয় বাংলা স্লোগানটিকে সেই দেশে হাইকোর্ট জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করে ২০২০ সালের ১০ মার্চ। এই রায়ের দুই বছর পর স্লোগানটি বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়। সংবিধানে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় প্রতীকের কথা বলা হলেও জাতীয় স্লোগানের কথা নেই। তিনি বলছেন, বিষয়টি আদালতের বিচার্য নয়, নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। যে কারণে জনগণের মতামত নিয়েই কাজ করতে হবে, যা পারে জাতীয় সংসদ। আদালতের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন- ভারত বাংলাদেশের সুসম্পর্ক ফেরাতেই হবে! পদক্ষেপ শুরু হলো দুই তরফেই
শুধু জাতীয় স্লোগান নিয়ে নয়, ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়েছে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ নিয়েও। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ বাতিল করা হয়েছে। আসল সত্য হচ্ছে, বিজয় দিবসকে উৎসবমুখর করতে সারা দেশে বিজয় মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, "বিজয় দিবস আমাদের জাতির জন্য অনন্য দিন। ৯ মাস যুদ্ধ করে জাতি এই বিজয় অর্জন করেছে। সারা দেশের মানুষ যুদ্ধে সম্পৃক্ত ছিল। একসময় গ্রামে ও সারাদেশেই এই বিজয় উৎসব হতো। ধীরে ধীরে এই উৎসব নিষ্ক্রিয় হচ্ছিল। এবার সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিজয় মেলা হবে।”
ফারুক-ই-আজম আরও বলছেন, বিজয় মেলাতে "চারু, কারুমেলার সঙ্গে কৃষিপণ্যের মেলা হবে। তার সঙ্গে দেশিয় পণ্য পরিবেশন করা হবে। মেলায়, শিশু, নারী, পুরুষ সবার অংশগ্রহণ থাকবে। এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। সবাই আনন্দ উপভোগ করবে। পাশাপাশি স্কুলগুলোতে অনুষ্ঠান হবে।” তাঁর দাবি, আগে যে প্রচলিত কুচকাওয়াজ হতো, তাতে জনগণের সম্পৃক্ততা থাকত না, সেখানে স্কাউট ও স্বেচ্ছাসেবকরাই থাকতেন, অন্যান্য বাহিনী থাকত। এবার সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
উপদেষ্টা বলছেন, "জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে এবার কুচকাওয়াজ হচ্ছে না। কারণ সেনাবাহিনী এখন সারাদেশে ব্যস্ত। এটার জন্য একটা প্রস্তুতির বিষয় আছে। তাই এবার প্যারেড স্কোয়ারে কুচকাওয়াজ হচ্ছে না। এটার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি প্রয়োজন। আগে প্রশাসন করত কুচকাওয়াজ, এখন প্রশাসন মেলার আয়োজন করবে। সেখানে স্ব স্ব এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় সব পর্যায়ের জনগণ অংশ নেবেন।”