নৈহাটিতে মিছিলে ঢুকে মেয়েদের পোশাক ছেঁড়া, স্লোগানে বাধা! নেপথ্যে তৃণমূল?
RG Kar Protest Naihati: আন্দোলনকারীরা বলছেন, মিছিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ ছিল না। যে দুষ্কৃতীরা ঢুকে যান মিছিলে সেখানে বহু মহিলাও ছিলেন
রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর। সারা রাজ্যজুড়ে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে। শুধু তো রাজ্য নয়, সারা বিশ্ব তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে পথে নেমেছিল রবিবার। অথচ প্রতিবাদে নেমে নৈহাটিতে যে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘট, ন্যক্কারজনক বললেও সম্ভবত তার সঠিক ব্যাখ্যা হয় না। রবিবার রাতে আর সমস্ত জায়গার মতোই নৈহাটিতেও প্রতিবাদ মিছিল ছিল। কয়েকজন দুষ্কৃতী মিছিলে ঢুকে গিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, কয়েকজন দুষ্কৃতী মাইকের তার ছিঁড়ে দেয়। স্লোগানে বাধা দেয়। এর আগে ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছিল মাথাভাঙাতেও।
নৈহাটিতে রবিবার বেশ কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা মিছিল করেন। নরেন্দ্র বিদ্যানিকেতনের প্রাক্তনীরাও সামিল হন তাতে। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, নৈহাটির ফেরিঘাট থেকে মিছিল শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, ওই মিছিল যখন রামকৃষ্ণ মোড়ে প্রবেশ করে, তখন দুষ্কৃতীরা মিছিলে জোর করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। প্রতিবাদকারীদের অভিযোগ, লাথি ঘুষি মারতে থাকে ওই দুষ্কৃতীরা। টোটোগুলিকে আটকে দেয় তারা, সরাসরি মিছিল করতে বারণ করা হয় আন্দোলনকারীদের। সঙ্গে চলতে থাকে অকথ্য গালিগালাজ। আন্দোলনকারীদের দাবি, হঠাৎই মিছিলে কয়েকজন দুষ্কৃতী ঢুকে যায়। মাইকের তার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। প্রতিবাদে সামিল মহিলাদের উপরেও আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, মিছিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ ছিল না। যে দুষ্কৃতীরা ঢুকে যান মিছিলে সেখানে বহু মহিলাও ছিলেন। প্রতিবাদে সামিল হওয়া শিক্ষকদের মিছিলের মধ্যে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে, হামলা চালাল কারা? ভয় দেখাতেই কি হামলা? তাহলে নেপথ্যে রয়েছে কারা? গত ১৪ অগাস্ট প্রথম কলকাতা শহরসহ সারা রাজ্যেই ‘রাতদখল’-এর ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা। মধ্যরাতে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মানুষ। আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে স্লোগান তুলেছিলেন। তিলোত্তমার ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের একমাসের মাথায় আবারও রাতদখলের ডাক ওঠে। ৯ তারিখ সুপ্রিম শুনানি ও ঘটনার একমাস পূর্তির প্রেক্ষাপটেই সারারাজ্য এমনকী বিদেশেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছিল। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে বিক্ষোভে নেমে যে হামলার মুখে পড়ল সাধারণ মানুষ, তাতে আবারও প্রশ্ন উঠছে তাই, তবে কি ধামাচাপা দিতে মরিয়ে হয়ে গেছে একপক্ষ?
অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডারাই এই মিছিলে ঢুকে হেনস্থা করেছে, বাধা দিয়েছে, মারধর করেছে। তাই পুলিশও এই গোটা ঘটনায় নিষ্ক্রিয় ছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা অবশ্য বলছেন, আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে তারাও মিছিল করছিলেন। সেইসময়ই নাকি ধাক্কাধাক্কি করা হয়। এই ঘটনায় সিপিআইএমকে টেনে এনেছে তৃণমূল। যদিও এই পাল্টা অভিযোগকে নজর ঘোরাতে চাওয়ার মরিয়া চেষ্টা হিসেবেই দেখছেন সাধারণ মানুষ। মহিলাদের পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া, মাইক ছিনিয়ে নেওয়ার পিছনে শাসকের মদত না থাকলে পুলিশ কেন নিষ্ক্রিয় ছিল সেই সওয়াল উঠছেই।