প্রাণ ফিরেছে হাজার হাজার বছরের ‘মৃত’ জীবের, যে ঘটনা শুনলে চমকে উঠবেন আপনিও

Bdelloid Rotifers : সাইবেরিয়ায় তুষারাবৃত অবস্থায় চাপা পড়ে থাকা এক অনুবিক্ষণিক জীব টানা ২৪ হাজার বছর পর হঠাৎ প্রাণ ফিরে পেয়েছে

টিভির পর্দায় অথবা গল্পের বইয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের নন জানা অজানা প্রাণীর অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারলে চমক লাগে। এমন অনেক প্রাণীই রয়েছে যাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে আজও অধরা বিজ্ঞানীরা। এমনকী কোনও জীব হারিয়ে যাওয়ার পর আবার যে ফিরে আসতে পারে সে নিয়েও কোনও ধারণা ছিল না আগে। পৃথিবী চিরকালই রহস্যময়ী, বিভিন্ন প্রান্তে লুকিয়ে আছে নানা জানা অজানা অদ্ভুতুড়ে জিনিস। অনেকেই জানেন না তার পরিচয়, সন্ধান পেতেই তাই রীতিমত চোখ কপালে। সম্প্রতি এরকমই একটি ঘটনার সাক্ষী থেকেছে গোটা বিশ্ব। ‘কারেন্ট বায়োলজি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে নয়া গবেষণার কথা।

কী আছে সেই গবেষণায়? জানা গিয়েছে, সাইবেরিয়ায় তুষারাবৃত অবস্থায় চাপা পড়ে থাকা এক অনুবীক্ষণিক জীব টানা ২৪ হাজার বছর পর হঠাৎ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এ ঘটনা রহস্য ছাড়া আর কিই বা। তবে ঘটনাটি সত্যি। মাটির গভীর অন্ধকার থেকে পাওয়া এই অজানার আলোর নাম অর্থাৎ প্রাণীটির নাম ‘ডেলয়েড রটিফার’।

আরও পড়ুন - রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন কি মৃত?

বিজ্ঞান এক বিষম বস্তু, কত কিছুই না পারে সে। সাম্প্রতিক গবেষণা পত্রটিই তার প্রমাণ। বরফের চাদরের নিচে মাটির গভীরে চাপা পড়ে থাকা সেই অদৃশ্যপ্রায় প্রাণকণাদের কেবল বাঁচিয়ে তোলাই হয়নি, গবেষণাগারে তারা নিজেরাই উৎপন্ন করেছে নিজেদের ক্লোনও। নাম ডেলয়েড রটিফার, বহুকোষী আণুবীক্ষণিক প্রাণী। মুখের কাছে রয়েছে চাকার মতো গোল আকৃতির চুল। এই কারণে একে ‘চাকা প্রাণী’ও বলে। জানা গিয়েছে, মূলত জলেই থাকে এই প্রাণী। গভীর ঠান্ডায় থাকতে পারে এরা। এমনকী মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও দিব্যি বেঁচে থাকে ডেলয়েড রটিফার। গবেষণা আরও জানা গিয়েছে, গত ৫ কোটি বছর ধরেই এরা পৃথিবীতে রয়েছে। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তো বটেই এমনকী গবেষকরা জানাচ্ছেন, সম্ভবত মানুষের অবললুপ্তির পরেও পৃথিবীতে টিকে থাকবে আণুবীক্ষণিক ডেলয়েড রটিফার।

তবে সবকিছুর মধ্যে আশ্চর্যের বিষয় হল এই যে, বিগত ২৪ হাজার বছর ঘুমিয়ে থাকার পর আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে এরা। শুধু যে নিদ্রাভঙ্গ করেই ক্ষান্ত দিয়েছেন উত্তর-পূর্ব সাইবেরিয়ার এই বাসিন্দারা তাই নয়, পাশাপাশি শুরু করেছে বংশবিস্তারও। অযৌন জনন পদ্ধতিতে নিজেদের ক্লোন উৎপাদন করেছে তারা। বহুকোষী প্রাণী হয়েও এত বছরেও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পেরেছে তাও আবার সাইবেরিয়ার অত কম উষ্ণতায় এই ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমন একটি প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁরাও আশাবাদী, এখনও চলছে গবেষণা।

More Articles