নোটবন্দির আগেই হয়েছিল কয়েনবন্দি! কেন পুরনো মোটা পাঁচ টাকার কয়েন তৈরি বন্ধ করে দেয় RBI?

Five rupees coin : নোট জাল হওয়া ঠেকাতে রাতারাতি বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয় পুরনো নোটগুলি। কিন্তু জানেন কি তারও বেশ কিছু বছর আগে ৫ টাকার মোটা কয়েন তৈরি করা বন্ধ করে দেয় RBI।

নোটবন্দি নিয়ে প্রায়শই তরজা শোনা গেলেও কয়েন বন্দি হয় শুনেছেন কি কখনও? না এমনটা শোনা যায় না। আসলে প্রযুক্তির সাহয্যে জাল নোটের উপদ্রব বাড়লেও জাল কয়েন বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে এমনটা হয়নি। কিন্তু তাও আধুনিক যুগে অনেক পরিবর্তন এসেছে কয়েন প্রস্তুতিতে। পুরনো ধাঁচের কয়েন বাজার থেকে বাতিল হয়নি ঠিকই তবে তার বদলে বাজারে এসেছে এক, দুই এবং পাঁচ টাকার নতুন কয়েনের মডেল। পাশাপাশি চালু হয়েছে দশ, কুড়ি, পঞ্চাশ, একশ এমনকী দেড়শ টাকার কয়েনও। ২০১৬ সালে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বন্ধ করে দেয় রিজার্ভ ব্যাংক। নোট জাল হওয়া ঠেকাতে রাতারাতি বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয় পুরনো নোটগুলি। কিন্তু জানেন কি তারও বেশ কিছু বছর আগে ৫ টাকার মোটা কয়েন তৈরি করা বন্ধ করে দেয় RBI। তার বদলে পাতলা কয়েন তৈরি শুরু হয়। কিন্তু কয়েন তো জাল হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাহলে কেন পুরনো কয়েন তৈরি বন্ধ করে দিল রিজার্ভ ব্যাংক?

এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে একটি বিশেষ কারণ। সরাসরি কয়েন জাল করা না হলেও কয়েন দিয়ে চোরাবাজারি করবার শুরু করে একদল। খবর আসে, পুরনো মোটা ৫ টাকার কয়েন গলিয়ে সেই কয়েন দিয়ে দেদার শেভিং ব্লেড তৈরি করে বিভিন্ন সংস্থা। একটি কয়েন গলিয়ে তৈরি করা হতো ছটি ব্লেড অর্থাৎ ৫ টাকার কয়েনের বদলে রোজগার আসত প্রতি ব্লেড ২ টাকা দরে মোট ১২ টাকা। ফলে দেদার কারবার শুরু হয় এর।

আরও পড়ুন - DA থেকে শুরু করে বাড়তি EMI, মার্চ মাস থেকে যে পরিবর্তনগুলি প্রভাব ফেলবে আমজনতার পকেটে

আসলে পুরনো ৫ টাকার কয়েনটি বেশ মোটা ছিল সুতরাং এর মধ্যে ধাতব পরিমাণও ছিল বেশ বেশি। তাই সেই ধাতুর ব্যবহারে অন্য বস্তু নির্মাণে যেহেতু লাভের পরিমাণ বেশি তাই বাজার থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে পাঁচ টাকার কয়েন। পাঁচ টাকার কয়েন গলিয়ে অন্য জিনিস নির্মাণ হতে থাকায় পাঁচ টাকার কয়েনের কোষাগারে চাপ পড়ে। সরকার এই গন্ডগোল ধরতে পারার পর ৫ টাকার কয়েন বেশ পাতলা করে দেয়। এমনকী তার রংও বদলে দেয়। শুধু তাই না, বর্তমানে এমন ধাতু দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়েনগুলো যাতে বাংলাদেশীরা সেই থেকে ব্লেড না বানাতে পারে।

পুরনো ৫ টাকার মোটা কয়েনের ব্যবহৃত ধাতুটি ছিল নিকেল, এই নিকেল থেকেই তৈরি করা হতো সেভিং ব্লেড। তাই একটি কয়েনের বদলে ছটি সেভিং ব্লেড তৈরির চাহিদা বাড়তে থাকে। এই চোরা বাজারে কারবার মূলত বেশি তো হয় বাংলাদেশে। এখনও বাজারে এই কয়েন গুলি দেখা যায় ঠিকই, তবে সংখ্যায় কম। নতুন করে আর তৈরি করা হয় না এই কয়েন। তাই একটু লক্ষ্য করে যদি দেখেন কয়েনের সালের দিকে তাহলেই ধরতে পারবেন একটি কয়েনও সম্প্রতি তৈরি নয়।

More Articles