বন্ডে ১,৩৬৮ কোটি টাকার অনুদান কেবল একজনেরই! কী এই ফিউচার গেমিং কোম্পানি?
Future Gaming Electoral Bond Donor: ফিউচার গেমিং সিকিম এবং নাগাল্যান্ডে সংগঠিত লটারির একমাত্র পরিবেশক।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা এসবিআই-কে নির্বাচনী বন্ড বিষয়ক সমস্ত তথ্য দিতে বলেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। এসবিআই সেই তথ্য জমা দেওয়ার পর সমস্ত তথ্যই আপলোড করেছে দেশের নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী বন্ড বা ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি এবং সংস্থা যে কোনও রাজনৈতিক দলকে অনুদান দিতে পারে। গত সন্ধ্যায় সেই দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ্যে আসার পর সাধারণ মানুষের ঘুম ছুটে যাওয়ার জোগাড়! এত টাকা! বিজেপিসহ দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল যা পরিমাণ অঙ্কের অনুদান পেয়েছে তাতে একটাই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে নানা পোশাক বদলে সামনে আসে। এত টাকা দিল কে? এই তালিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কোয়েম্বাটোরের ফিউচার গেমিং হচ্ছে এই নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পে সবচেয়ে বড় দাতা।
ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনী বন্ডে ১,৩৬৮ কোটি দান করেছে! ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস আসলে কারা চালায়? এত এত টাকা কীভাবে এল তাঁদের? কোন রাজনৈতিক দলকে তারা এই টাকা দিলেন? ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেসের আগে নাম ছিল মার্টিন লটারি এজেন্সি লিমিটেড। এর মালিক হচ্ছেন ভারতের স্বনামধন্য 'লটারি কিং' সান্তিয়াগো মার্টিন।
ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেসের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, সান্তিয়াগো মার্টিন মাত্র ১৩ বছর বয়সে লটারির ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে সারা ভারত জুড়ে লটারির ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের এক বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন মার্টিন সান্তিয়াগো। ফিউচার গেমিংই ভারতের প্রথম লটারি কোম্পানি যারা তাদের মাধ্যমে বিতরণ করা লটারির জন্য বিভিন্ন সরকার কর্তৃক পরিচালিত লাকি ড্র টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারের সুবিধা করে দেয়। ফিউচার গেমিং সিকিম এবং নাগাল্যান্ডে সংগঠিত লটারির একমাত্র পরিবেশক।
আরও পড়ুন- কে কাকে টাকা দিয়েছে গোপনই, তবু ইলেক্টোরাল বন্ডের যে তথ্যে ঝড়
ফিউচার গেমিং এশিয়া প্যাসিফিক লটারি অ্যাসোসিয়েশনের (APLA) সদস্য। ২০০১ সাল থেকে ফিউচার গেমিং ওয়ার্ল্ড লটারি অ্যাসোসিয়েশনের (WLA) সদস্য। ২০০৯ সালে, WLA 'ডব্লিউএলএ রেসপন্সিবল গেমিং ফ্রেমওয়ার্ক'-এর লেভেল ১-এর মাপকাঠি পেরনোয় ফিউচার গেমিংকে স্বীকৃতি দেয়।
ফিউচার গেমিংয়ের ওয়েবসাইট অনুসারে, মার্টিন লাইবেরিয়ার কনসাল জেনারেলও ছিলেন। সেখানে তিনি এক লটারি শিল্পও স্থাপন করেছিলেন। মার্টিন সান্তিয়াগো অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ লটারি ট্রেড অ্যান্ড অ্যালাইড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি। এটি লটারি ডিস্ট্রিবিউটর, স্টকিস্ট এবং এজেন্টদের একটি লবি। এই ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস লিমিটেডের মোট ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড রয়েছে৷
ফিউচার গেমিং কোম্পানি এবং মার্টিন সান্তিয়াগোর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তও চলেছে। অর্থ তছরুপের মামলায় সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের দায়ের করা চার্জশিটেও মার্টিনের নাম ছিল। গত বছর, ইডি ৪৫০ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল। গত সপ্তাহেই, ইডি অর্থ তছরুপের তদন্তের জন্য মার্টিনের জামাইয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায়।