জলের গভীরে 'ঐশ্বরিক' অভিজ্ঞতা! ভোটের আগে দ্বারকায় কেন ডুব মোদির?

Narendra Modi in Dwarka : গোমতী নদী এবং আরব সাগরের ধারে অবস্থিত দ্বারকাধীশ মন্দির বৈষ্ণবদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান।

বন্যায় ডুবে গিয়েছিল আস্ত শহরটাই। মথুরা ছেড়ে যাদবদের নিয়ে দ্বারকাতেই বসবাস গড়েছিলেন নাকি কৃষ্ণ। নির্বাচনের আগে শুধু রাম নয়, কৃষ্ণকেও সঙ্গে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই প্রাচীন দ্বারকা শহরটি যেখানে ডুবে গেছে বলে বিশ্বাস করে মানুষ, গুজরাতের সেই গভীর সমুদ্রে নেমে প্রার্থনা জানিয়েছেন মোদি। বলা হয়, কৃষ্ণের মৃত্যুর পর ঋষিদের অভিশাপে, এক ভয়ঙ্কর বন্যায় দ্বারকা শহরটি ডুবে যায়। প্রধানমন্ত্রী মোদি গভীর সমুদ্রে ডুব দিয়ে যে স্থানে নিমজ্জিত দ্বারকা শহরের ধ্বংসাবশেষ আছে বলে বিশ্বাস করা হয়, সেইখানে গিয়ে ময়ূরের পালক দিয়ে এসেছেন। রাম মন্দিরেই দেশের ভক্তি জাগরণের কাজ যে শেষ হয়নি তা প্রমাণ করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন, জল নিমজ্জিত দ্বারকা শহরে প্রার্থনা করার অভিজ্ঞতা তাঁর কাছে ঐশ্বরিক। ওই জলতল দর্শনেই নাকি ভক্তির এক প্রাচীন যুগের সঙ্গে নিজের যোগ অনুভব করছেন তিনি। ওই অতল জলে মোদি সেই সব মুহূর্ত নাকি অনুভব করেছেন যার ব্যাখ্যা মেলে না। মোদি লিখছেন, "প্রাচীন দ্বারকা শহর দর্শন করেছি। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জলের নিচে লুকিয়ে থাকা দ্বারকা শহর নিয়ে অনেক কিছু লিখেছেন। আমাদের ধর্মগ্রন্থেও দ্বারকা সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে, দ্বারকা সুন্দর দ্বার ও সুউচ্চ অট্টালিকা দিয়ে সাজানো একটি নগরী ছিল। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই এই শহরটি তৈরি করেছিলেন... যখন আমি সমুদ্রের গভীরে যাই, আমি দেবত্ব অনুভব করেছি... আমি দ্বারকাধীশের সামনে মাথা নত করেছিলাম। আমি আমার সঙ্গে একটি ময়ূর পালক নিয়ে গেছিলাম, তা শ্রীকৃষ্ণের পায়ের কাছে রাখলাম"।

আরও পড়ুন- এক তপস্বীর কৃচ্ছসাধন কাহিনি

মন্দিরভ্রমণে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কতখানি আগ্রহ তা এতদিনে আম জনতার জানাই। কখনও দুর্গম পাহাড়ের গুহায় ধ্যান করেন, কখনও দক্ষিণ ভারতের মন্দির মন্দিরে ঘুরে বেড়ান। রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে ১১ দিন উপোস করেন। মণিপুরে না গেলেও, দেশের জ্বলন্ত সমস্যা গুলি থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলেও, সাংবাদিক সম্মেলন এড়িয়ে চললেও 'ভগবানের ডাক' উপেক্ষা করতে পারেন না তিনি। এখানে জনতাই আর জনার্দন থাকে না। মন্দিরের জনার্দনকেই দরকার পড়ে ভোটের কাজে। তাই গুজরাতের বিখ্যাত মন্দির দ্বারকাধীশে গিয়েছেন মোদি। গুজরাতের গোমতী নদী এবং আরব সাগরের ধারে অবস্থিত দ্বারকাধীশ মন্দির বৈষ্ণবদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। বিশেষ করে কৃষ্ণভক্তদের কাছে দ্বারকাধীশ মন্দিরটি হচ্ছে চর ধামের মধ্যে একটি। হিন্দু ধর্মের বৈষ্ণব ধারাটিকেও সঙ্গে নিয়েই হাঁটতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি।

শুধুই ধর্ম না, মোদি কি গ্যারান্টি মেনে উন্নয়নও চাই। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদি ৯৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের দীর্ঘতম কেবল সেতু সুদর্শন সেতু উদ্বোধন করেন, এটি প্রায় ২.৩২ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। আগে এই সেতুর নাম ছিল 'সিগনেচার ব্রিজ'। সেতুটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে সুদর্শন সেতু। ওখা মূল ভূখণ্ড এবং গুজরাতের বেত দ্বারকাকে সংযুক্ত করছে এই সেতু। বেত দ্বারকা হচ্ছে ওখা বন্দরের কাছের একটি দ্বীপ, দ্বারকা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি। এখানেই কৃষ্ণের বিখ্যাত দ্বারকাধীশ মন্দির অবস্থিত। গুজরাত মোদিক্ষেত্র। নির্বাচনের আগে রাজ্যবাসীকে ধর্ম ও উন্নয়নময় এই উপহার দিলেন মোদি।

 

More Articles