ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা: বাংলায় কোথায় কোথায় হাঁটবেন রাহুল গান্ধী?

Rahul Gandhi's Yatra through Bengal: অরুণাচল পেরিয়ে আগামী ২৫ জানুয়ারি বাংলায় প্রবেশ করবে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। বাংলায় ঠিক কোন পথে হাঁটতে চলেছেন রাহুল?

২০২৪-এর নির্বাচন আসন্নপ্রায়। মন্দির রাজনীতির বাড়বাড়ন্ত থেকে দূরে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন রাহুল গান্ধী। শুরু করেছেন 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'। মণিপুর থেকে শুরু এই যাত্রা চলবে মহারাষ্ট্রের মুম্বই পর্যন্ত। মণিপুর, নাগাল্যান্ড পেরিয়ে বর্তমানে আসাম পার হচ্ছেন রাহুল। এরপর অরুণাচল পেরিয়ে আগামী ২৫ জানুয়ারি বাংলায় প্রবেশ করবে এই যাত্রা। বাংলায় ঠিক কোন পথে হাঁটতে চলেছেন রাহুল?

আগামী ২৫ জানুয়ারি সকাল আটটায় কোচবিহার জেলার বক্সিরহাটে প্রবেশ করবে যাত্রা। সে'খান থেকে আলিপুরদুয়ার হয়ে ২৮ তারিখ ফালাকাটা। এরপর জলপাইগুড়ির উপর দিয়ে ২৯ তারিখ শিলিগুড়ি পৌঁছবেন রাহুল। কিষণগঞ্জ হয়ে বিহারের খানিক ছুঁয়ে ফের ৩১ তারিখ মালদায় প্রবেশ করবে যাত্রা। এরপর মুর্শিদাবাদ বীরভূম হয়ে বিহারে প্রবেশ করবেন যাত্রাকারীরা। বিহার হয়ে ঝাড়খণ্ড। ঝাড়খণ্ডের ১৩টি জেলার ৮০৪ কিমি পথ অতিক্রম করতে যাত্রা সময় নেবে ৮ দিন। এরপর উড়িষ্যা-ছত্তিশগড় হয়ে উত্তরপ্রদেশ। উত্তরপ্রদেশে যাত্রার দীর্ঘতম পথ অতিক্রম করবেন যাত্রাকারীরা। ১০৭৪ কিমি। ২০টি জেলা পেরোতে সময় লাগবে ১১ দিন। উত্তরপ্রদেশের পরে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান হয়ে গুজরাট। গুজরাটে সাতটি জেলা ৪৪৫ কিমি পথের জন্য বরাদ্দ ৫ দিন। সবশেষে মহারাষ্ট্র। ৬টি জেলায় ৪৭৯ কিমি পথ অতিক্রম করে যাত্রা শেষ হবে মুম্বইতে।

 

সারা দেশে সাম্প্রদায়িকতার হাওয়া এখন। অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রতিষ্ঠা হল। পাল্লা দিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী প্রতি মঙ্গল হনুমান চালিশা পাঠ শুরু করেছেন। ওড়িশায় তৈরি হয়েছে পুরীর মন্দিরের সম্মুখে বিরাট করিডোর। পশ্চিমবঙ্গেও গঙ্গারতি শুরু হয়েছে গত বছর থেকে। পুরীর মন্দিরের আদলে বিরাট জগন্নাথ মন্দির প্রস্তুত হচ্ছে দিঘাতে। সে'খানে হবে রথযাত্রাও। রাম মন্দিরের প্রতিবাদে মিছিল বেরোচ্ছে, কিন্তু কালীঘাটে পুজো দিয়ে সেই মিছিল শুরু হচ্ছে। সদগুরু বলছেন, আটশো বছরে মুসলমানরা যে রক্ত ঝরিয়েছে, তার নজির নেই। ফলে রামমন্দির হওয়াটা খুবই প্রয়োজন ছিল। তারকারা হাজির হয়েছেন রামমন্দিরে। শশী থারুর ফেসবুকে রামলালার বিগ্রহের ছবি দিয়ে লিখেছেন, “সিয়াবর রামচন্দ্র কি জয়'। দেশ জুড়ে এই হাওয়ার মাঝে একমাত্র মানুষের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে আমজনতার কথা শুনতে চাইছেন রাহুল গান্ধীই। মানুষের সাধারণ সমস্যার কথা শুনতে চাইছেন তিনি। মণিপুরের হিংসাপীড়িত মানুষের সঙ্গে বার্তালাপ করেছেন রাহুল।

আরও পড়ুন: “দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্য…” পশ্চিমবঙ্গ নয়, রাহুলের ন্যায় যাত্রার নিশানায় যে রাজ্য

এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, 'আপনারা জানেন মণিপুর থেকে রাহুল গান্ধীজি শুরু করেছেন তাঁর দ্বিতীয় দফার ভারত জোড়ো যাত্রা, যার নামকরণ করা হয়েছে, ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। এই ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা মণিপুর থেকে শুরু, যার সমাপ্তি মহারাষ্ট্রের মুম্বইতে। আগামী ২৫ তারিখ, রাহুল গান্ধীজির সেই ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার বক্সিরহাটে প্রবেশ করবে। তারপর আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ হয়ে ফিরে যাবে বিহারের পথে।' অধীর আরও বলেন, 'বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের ও সেই সঙ্গে বাংলার আপামর মানুষকে রাহুল গান্ধীজির নেতৃত্বে এই যে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা, তাকে সমর্থন সহযোগিতা ও তাতে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।'

দেশজোড়া মন্দির রাজনীতির বিপক্ষে মানুষের একমাত্র ভরসা এই ইন্ডিয়া ব্লকের যাত্রা। রাহুল গান্ধীর যাত্রা। মানুষের ন্যূনতম দাবি তুলে ধরতে সক্ষম হবেন রাহুল? প্রশ্ন থাকছেই।

More Articles