শেয়ার বাজারে তাঁর ভবিষ্যৎবাণী ছিল অব্যর্থ, যে পথ দেখিয়ে গেলেন দালাল স্ট্রিটের বিগ বুল
শেয়ার বাজার বিনিয়োগে কখনওই ভুল করতেন না রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। শেয়ার বাজারে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার বিনিয়োগ মানেই তা ছিল অব্যর্থ, এমনটাই বিশ্বাস করতেন ব্যবসায়ীরা।
সম্প্রতি শুরু হয়েছিল তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি আকাশা এয়ারলাইন্সের স্বপ্নের উড়ান। আর ঠিক এক সপ্তাহের ব্যবধানে যেন একটা ঝড় এসে পড়ল ভারতের শেয়ার মার্কেট জগতে। আচমকাই ৬২ বছর বয়সে থামল ভারতের ওয়ারেন বাফেটের দৌড়। চলে গেলেন ভারতের 'বিগ বুল' ধনকুবের রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট অনুযায়ী, রবিবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে জীবনাবসান হয় ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের সবথেকে বড় খেলোয়াড়ের।
মুম্বইয়ের অন্যতম বড় হাসপাতাল ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এই ধনকুবেরকে। কিন্তু সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ২-৩ সপ্তাহ আগে এই হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। সেই সময় হাসপাতালের চিকিৎসকরা বুঝতে পেরেছিলেন, রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার কিডনিতে কিছু বড় সমস্যা রয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর হৃদযন্ত্রেও কিছু সমস্যা ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ঠিক কোন অসুখে বিগ বুলের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
তাঁর মৃত্যুতে দালাল স্ট্রিটে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দালাল স্ট্রিটে যারা নিত্য বিনিয়োগ করেন, তাঁরা রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার নাম জানেন না, এমনটা অসম্ভব। আর যাঁরা সদ্য বিনিয়োগ করছেন, তাঁদের কাছে অনেকটা শিক্ষকের মতো ছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। তাঁর দেখানো পথেই বিনিয়োগ করে আজ কোটি কোটি টাকা রোজগার করেছেন অনেকে। দালাল স্ট্রিটে জনপ্রিয় একটি প্রবাদ ছিল, "রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার ভবিষ্যৎবাণী কোনওদিন ভুল হয় না।" তিনি যে স্টকে বিনিয়োগ করে থাকেন- ধরে নেওয়া হয়, সেই স্টক ওপরে যাবেই। তাঁর দৌলতে বাজার কাঁপিয়েছে ভারতের বেশ কিছু বড় বড় কোম্পানির শেয়ার। কিন্তু সেই সমস্ত ভবিষ্যৎবাণী আজ অতীত।
আরও পড়ুন: এককালে ভারতের সর্বোচ্চ ধনী, একা হাতে মুম্বইয়ের চেহারা বদলে দিয়েছিলেন পালোনজি মিস্ত্রি
দেশের অন্যতম ধনী এই শিল্পপতি তথা বিনিয়োগকারীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সর্বত্র। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে লিখেছেন, "রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা অদম্য। একইসঙ্গে অত্যন্ত রসিক এবং প্রাণবন্ত। আর্থিক জগতে তাঁর অবদান সত্যিই অনস্বীকার্য। ভারত আর্থিকভাবে এগিয়ে যাক, এটা তিনি সবসময় চাইতেন। ভারতের প্রত্যেকটি মানুষের জন্য তাঁর মৃত্যু বেদনাদায়ক।"
সফলতার কাহিনি
৫ জুলাই, ১৯৬০ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদে জন্ম হয় রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার। একটি রাজস্থানী পরিবারে তাঁর বড় হয়ে ওঠা। পরবর্তীকালে তাঁর পরিবার চলে আসে মুম্বইয়ে। স্কুলজীবন শেষ করে মুম্বই সিডেনহ্যাম কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। এরপরেই বাবার ধরেই এই শেয়ার মার্কেটের জগতে পরিচিতিলাভ। কলেজে পড়ার সময় থেকেই শেয়ার মার্কেটের প্রতি তাঁর একটা আলাদা আকর্ষণ ছিল, যা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা।
বাবা দেখিয়েছিলেন পথ
রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার পিতা নিজে ছিলেন আয়কর দফতরের একজন আধিকারিক এবং তিনি নিজেও শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতেন। পিতার মাধ্যমেই শেয়ার মার্কেটের এই জগতের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বাণিজ্য বিভাগ নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৮৫ সালে ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট অফ ইন্ডিয়া থেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কোর্স করেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পরেই শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের দিকে অগ্রসর হন রাকেশ। সেই সময় মাত্র ৫০০০ টাকা নিয়ে শেয়ার মার্কেটে পা রেখেছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। শেয়ার মার্কেটে প্রবেশ করার সময় নিজের বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা চেয়েছিলেন রাকেশ। কিন্তু, তাঁর পিতা এই টাকা দিতে অস্বীকার করেন। তিনি চাইলেই এই টাকা দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি রাকেশকে বলেন, আগে নিজে টাকা রোজগার করে তারপরেই শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ শুরু করো। এখান থেকেই জীবনটা পরিবর্তিত হতে শুরু করে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার।
শেয়ার মার্কেটে প্রথম পা রাখা
১৯৮৫ সালে মাত্র ৫,০০০ টাকা হাতে নিয়ে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ শুরু করেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। ১৯৮৬ সালে তিনি হাতে পান নিজের প্রথম মুনাফা। ৪৩ টাকা প্রতি শেয়ার দামে টাটা টি-এর শেয়ার কিনে মাত্র তিনমাসের মধ্যেই ১৪৩ টাকা দামে এই শেয়ার বিক্রি করেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। তারপর থেকে শেয়ার মার্কেটের দুনিয়ায় আর কোনদিন পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রাকেশকে। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯-এর মধ্যে শুধুমাত্র শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের মাধ্যমে তিনি ২.৫ কোটি টাকা মুনাফা লাভ করেছিলেন। এরপরে সেসা স্টারলিট কোম্পানির ১ কোটি টাকার ৪ লক্ষ শেয়ার ক্রয় করে এই নিবেশে একটা মোটা টাকা রোজগার করেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা।
টাইটান করেছিল কোটিপতি
২০০৩ সালে টাটা গ্রুপ অফ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন বিগ বুল রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। প্রথমে এই গ্রুপ অফ কোম্পানি-র টাইটান কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। যে-সময় তিনি এই শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন, সেই সময় এই কোম্পানিটি খুব একটা লাভজনক ছিল না। কিন্তু রাকেশের বিনিয়োগের পর যেন একেবারে ভাগ্য ফিরে গেল টাইটান কোম্পানির। ২০০৫ সালের মধ্যেই ভারতের ঘড়ির জগতে ধ্রুবতারা হয়ে উঠল টাইটান। আর তার সঙ্গেই রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার ভাগ্যও যেন রীতিমতো পাল্টে গেল একটি বিনিয়োগের ওপর ভর করে। তিনি সেই সময় শেয়ারপিছু ৩ টাকা দরে ওই কোম্পানির ৬ কোটি শেয়ার তিনি কিনেছিলেন। আজ পর্যন্ত ওই বিনিয়োগটিকে ভারতের অন্যতম ভালো শেয়ার বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয়।
আজকে ওঁর পোর্টফোলিওতে বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। এইগুলির মধ্যে সেল, টাটা মোটরস, টাটা কমিউনিকেশন, লুপিন, টিভি এইট্টিন, ডিবি রিয়েলিটি, ইন্ডিয়ান হোটেলস, ইন্ডিয়াবুলস হাউজিং ফাইন্যান্স, ফেডারেল ব্যাংক, কারুর বৈশ্য ব্যাংক, এসকর্টস লিমিটেড, ক্রিসিল, প্রজ ইন্ড, অরবিন্দ ফার্মার মতো বহু সংস্থার মাল্টিব্যাগার স্টক রয়েছে।
এয়ারলাইন্স সেক্টরে প্রবেশ
শেয়ার বাজার থেকে অর্থ উপার্জনের পর এয়ারলাইন্স সেক্টরে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। তাঁর নতুন এয়ারলাইন্স কোম্পানি আকাশা এয়ারে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। ৭ অগাস্ট থেকে এই কোম্পানি কাজ শুরু করেছিল। মূলত টাটা গ্রুপকে টক্কর দেওয়ার জন্যই রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা তাঁর নিজের এয়ারলাইন্স কোম্পানি চালু করেছিলেন। টাটা কোম্পানি এই মুহূর্তে এয়ার ইন্ডিয়া-র সম্পূর্ণ দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। সেক্ষেত্রে যদি রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা নিজের বিমান সংস্থা নিয়ে আসেন তাহলে টাটা কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি টক্কর হবে তাঁর। যে টাটা কোম্পানির শেয়ার একদিন তাঁর ভাগ্য বদলে দিয়েছিল, সেই টাটা কোম্পানিকেই টক্কর দেওয়ার ভাবনা নিয়েছিলেন বিগ বুল।
হর্ষদ মেহতার জালিয়াতির সময় কামিয়েছেন কোটিতে
নয়ের দশকে স্টকমার্কেটে হর্ষদ মেহতা একটি অন্যতম বড় নাম ছিল। তবে ১৯৯২ সালে যখন হর্ষদ মেহতার সমস্ত জালিয়াতির কথা সামনে আসে, সেই সময় রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা হয়ে ওঠেন স্টকমার্কেটের সব থেকে বড় খেলোয়াড়। ভারতীয় স্টকমার্কেটের সেই বিপন্ন অবস্থায় নিজের স্টক শর্ট করে বেশ মোটা টাকা রোজগার করে নিয়েছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি সেই সময় বিয়ার গ্রুপের সদস্য ছিলেন এবং সেই স্টকের শর্ট সেলিং করে তিনি কয়েক কোটি টাকা রোজগার করে নিয়েছিলেন।
রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা জানিয়েছেন, তিনি এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি টাকা শেয়ার বিক্রি করেই কামিয়েছেন। যে-সময় হর্ষদ মেহেতার ঘটনাটি সামনে আসে, সেই সময় শেয়ার মার্কেটে একটা গভীর মন্দা নেমে আসে। কিন্তু সেই সময়ও শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ৩০-৩৫ কোটি টাকা রোজগার করেছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। সেই সময় তিনি মার্কেটের রিয়েলটি দেখতেন। মার্কেট কোনদিকে এগোবে, সেই হিসেব করে তিনি নিজের টাকা বিনিয়োগ করতেন। সেই সময়ই তাঁর প্রায় ৪০ কোটি টাকার পোর্টফোলিও তৈরি করা ছিল। সেই পোর্টফোলিওর ওপর ভর করেই তিনি মন্দার সময়েও শেয়ার বিক্রি করার কথা চিন্তা করতে পেরেছিলেন। আর এই মন্দার সময় দারুণ কামাই-এর কারণেই ভারতীয় স্টকমার্কেটের বিগ বুল হয়ে ওঠেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা।
কত সম্পত্তি রেখে গেলেন? আর কোথায় কত বিনিয়োগ?
রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার আয়ের প্রধান উৎস কিন্তু শেয়ার বাজার। মাত্র ৫০০০ টাকা দিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন তাঁর এই সাফল্যের যাত্রা। আর এই মুহূর্তে তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই সাফল্যের কারণে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালাকে স্টক মার্কেটের 'বিগ বুল' বলা হতো। যখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অর্থ হারাচ্ছেন, সেই সময়েও তিনি শেয়ার মার্কেটের মাধ্যমেই অর্থ উপার্জন করতে পেরেছিলেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের গণনা অনুযায়ী তাঁর নেট ওয়ার্থ ছিল ১১ হাজার কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটে দুনিয়ায় রাকেশের উত্থান ছিল চোখধাঁধানো। একের পর এক সাফল্যের মুকুট তাঁর মাথায় উঠেছে। ২০২২ সালের জুলাই মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের ৩৬তম বিত্তবান ব্যক্তিত্ব ছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। ২০২২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত রাকেশের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৫৩০ কোটি মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। রাধাকৃষ্ণ দামানি-র কাছ থেকে শেয়ার বাজারের খুঁটিনাটি শিখে আজ এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। করোনা অতিমারীর সময়ও তাঁর উপার্জনের অঙ্ক ছিল চোখে পড়ার মতো। করোনাকালে তাঁর উপার্জন ছিল প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা।
২০১৭ সালে ট্রেডিং-এর একটি মরশুম থেকে রাকেশ উপার্জন করেছিলেন প্রায় ৮৭৫ কোটি টাকা। রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার নিজস্ব একটি স্টক ট্রেডিং ফার্ম রয়েছে। সেই ট্রেডিং ফার্মের নাম তিনি দিয়েছিলেন রেয়ার এন্টারপ্রাইজ। নিজের এবং নিজের স্ত্রী-র নামের প্রথম দু'টি করে অক্ষর যোগ করে RARE Enterprise নামটি দিয়েছিলেন তিনি। এই সংস্থাটি ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের প্রথম সারির বেশ কিছু সংস্থার মধ্যে অন্যতম।
কিছুদিন আগে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা একটি জুতো সংস্থার শেয়ার কিনেছিলেন। কিছুদিনের মধ্যে সেটিও তার সর্বোচ্চ দরে পৌঁছে গিয়েছিল। সেই শেয়ার থেকে তিনি একদিনে লাভ করেছিলেন ২২১ কোটি টাকা। তবে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বড় বিনিয়োগ তিনি করেছেন টাইটান সংস্থায়। সেই বিনিয়োগ থেকে তিনি লাভ উঠেছিলেন ৭,২৯৪.৮ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড থেকে ১৭৬ কোটি টাকায় মালাবার হিলে রিজওয়ে অ্যাপার্টমেন্টের ৬টি ইউনিট কিনেছিলেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। ২০১৭ সালে এইচএসবিসি ব্যাংক থেকে ১৯৫ কোটি টাকায় আরও ৬টি এপয়েন্টমেন্ট কেনেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। অন্যদিকে, ২০২১ সালে সাত হাজার বর্গফুটের ১৪ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন এই ধনকুবের। কিন্তু সেই বাড়িতে থাকা আর হলো না এই বিগ বুলের। তবে সমাজসেবামূলক কাজেও তাঁর ভূমিকা ছিল সক্রিয়। সম্পত্তির ২৫ শতাংশ তিনি দান করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন এই সমাজসেবামূলক কাজের জন্য। হিসেব করে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বিশ্বাসী হলেও জীবনে ঝুঁকি নিতে ভালবাসতেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা।
ভারতের 'ওয়ারেন বাফেট'
ভারতীয় শেয়ার মার্কেটে তাঁর দারুণ ট্র্যাক রেকর্ডের কারণে শেয়ার বাজারের জগতে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা পরিচিত হতেন ভারতের ওয়ারেন বাফেট নামে। বলা হয়, শেয়ার বাজার বিনিয়োগে কখনওই ভুল করতেন না রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। শেয়ার বাজারে রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার বিনিয়োগ মানেই তা ছিল অব্যর্থ, এমনটাই বিশ্বাস করতেন ব্যবসায়ীরা। রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা বলতেন, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য আগে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। থাকতে হবে আশাবাদী। শ্বশুর এবং বাবার টাকায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন না। নিজের কামানো টাকায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করুন। তাহলে কিন্তু টাকার গুরুত্বটা বুঝতে পারবেন। আর সেই সঙ্গেই বাড়বে আত্মবিশ্বাস। শেয়ার বাজার সব সময় আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তাই আশা এবং আত্মবিশ্বাস, এই দুইয়ের ওপর ভর করেই আপনাকে পৌঁছতে হবে আপনার অভীষ্ট লক্ষ্যে।