চালচিত্র এখন আসলে সিনেমার মধ্যে সিনেমা

Chaalchitra Ekhon Review: এত ভিন্নতা নিয়েও– এই দু’টি চরিত্র– অঞ্জন ও মৃণাল– একটি সমরূপ লক্ষ্যের দিকে বন্দুক বাগিয়ে তাক করে আছেন।

এক যুবক বহতা জলের মধ্যে ঝুঁকে পড়ে কী যেন খুঁজছে। আর, আস্তে আস্তে স্রোতোধারার সারাৎসারে ফুটে উঠছে তার নিজেরই বিম্ব, নিজেরই আদল ও মুখচ্ছবি। এই জল আসলে আয়নার মতো। এই আয়না আসলে নিয়তির মুচকি হাসি। এই হাসিই আসলে কখনও অট্টরবে, কখনও নিঃশব্দে ছড়িয়ে আছে ‘চালচিত্র এখন’ সিনেমার আঁকেবাঁকে।

যদিও এ সিনেমায় সচেতনভাবে নাম-ধাম বদলানো হয়েছে, তাও এখানে যে-যুবকের কথা হচ্ছে, তিনি স্বয়ং অঞ্জন দত্ত– এই অভিমতে অতিশয়োক্তি নেই, বিরোধ নেই। আলোচ্য সিনেমার তিনিই পরিচালক, প্রাণপুরুষ এবং স্বচ্ছ ও সঞ্চরমাণ এই জলধারা যেন মৃণাল সেনের জীবনবোধ ও চলচ্চিত্র দর্শনের ‘মেটাফর’। সেটিকে ‘আয়না’ বলছি– কেননা, এতে অঞ্জন দত্তর ‘অভিনেতা’ হয়ে ওঠার পরম্পরাটি রেখাচিত্রে দেখা যায়।

তামুক খেতে-খেতে যেন নিয়তিই একদিন সংযোগ ঘটিয়ে দিল অঞ্জন ও মৃণালের, যাঁরা বয়সে অসমান, রাজনৈতিক ভাবনায় বিপরীত, অনুভূতির প্রকাশেও মিলমিশহীন। অঞ্জন, কম বয়সের রাগে তোলপাড়। ঔদ্ধত্য ও নিরাশা তাঁকে পাকে-পাকে জড়িয়ে রেখেছে। অন্যদিকে, মৃণাল সেন, বিশিষ্ট ফিল্মমেকার, প্রতিষ্ঠিত তবু অস্থির। দূরকে আগাম দেখার মতো সংবেদনশীলতা অর্জন করেছেন বয়স ও অভিজ্ঞতার গুণেই। তিনি তাই অঞ্জনের আকাশচুম্বী রাগ দেখতে পছন্দ করেন, অঞ্জনের সিদ্ধান্তহীনতার যৌবনোচিত কাটাকুটি প্রত্যক্ষ করেন কিন্তু কখনও ব্যঙ্গ করেন না অঞ্জনকে। তর্কে থামিয়ে দেন না, তাঁর এক্সপ্রেশনকে আটকান দেন না, বরং প্রশ্রয় দেন– প্রকাশের পথে। মোদ্দায়, অঞ্জনের আত্মউন্মোচনের সলতেটিকে আসকারা দেন।

আরও পড়ুন- ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র শেষ নিয়ে আপত্তি ছিল মৃণাল সেনের

এর কারণ, এত ভিন্নতা নিয়েও– এই দু’টি চরিত্র– অঞ্জন ও মৃণাল– একটি সমরূপ লক্ষ্যের দিকে বন্দুক বাগিয়ে তাক করে আছেন। সেটা কী? না, বারবার আত্মপরীক্ষায় বসা। নিজেকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে দাঁড় করিয়ে আচ্ছাসে ঝাঁকিয়ে দেওয়া। তারপর ‘তরতাজা’ চোখে চারপাশকে দেখতে চাওয়া। এই আত্মবীক্ষণ ও আত্মপ্রহার, এইভাবে তৃপ্তি ও কমফোর্ট জোনের মেদ কাটিয়ে বাইরে বেরনোর তাগিদ– অঞ্জন ও মৃণালকে কাছে টেনে আনে– যেভাবে মহাকাশের নিয়মে ঘুরতে-ঘুরতে সূর্য ও পৃথিবী কখনও বা নিকটে চলে আসে। সেদিন রোদ ও ছায়ার স্বাভাবিক নিয়মে কিছু মহাজাগতিক ব্যত্যয় ঘটে যায়।
‘চালচিত্র এখন’ তেমনই এক ব্যত্যয়ের গল্প। বৈশিষ্ট্যে ও প্রভাবে এটিকে ‘অভিনেতা’ অঞ্জন দত্তর আত্মস্ফূরণ বললে কিছুমাত্র ভুল হয় না। তাঁর মূলত থিয়েটার করতে ভালো লাগে, কলকাতা শহরকে আহামরি মনে হয় না, তাই মনও বসে না, বিখ্যাত এক পরিচালকের আহ্বানে এসেছেন সিনেমায় অভিনয় করার, কিন্তু সেই ডাক কি এত শক্তিমান, যে, সব বিরস মেঘের বলয় ফুঁড়ে উষ্ণ সূর্যের দিকে জীবনটাকে ঠেলে দেবে?

‘আ পারফেক্ট ভ্যাকুয়াম’। লেখক স্তানিস্লোয়াভ লেম। ১৯৭১ সালে প্রকাশিত বইটি নন-ফিকশন জঁরে পড়বে। এটি ১৬টি বুক-রিভিউয়ের সংকলন। আর, এই তথ্যটার গর্ভেই লুকিয়ে আছে চমক ও বাজিমাতের চাবুক। ১টি বাদে, ১৬টির মধ্যে অন্যান্য ১৫টি বইয়ের, আদতে কোনও বাস্তব অস্তিত্ব নেই। এই ১৫টি বই, লেম, কল্পনা করে নিয়েছিলেন। যেমন– ‘দি সেক্সপ্লোশন’। সাই-ফাই উপন্যাস, যদিও এই নামে কোনও বই নেই। ছিলই না কখনও। অথচ এই বইটির ‘রিভিউ’ লেম যা লিখেছেন, তাতে মনে হতে পারে বইটির বিষয়: সমুদয় অচলায়ন ভেঙে যৌন আকাঙ্খার অপার উন্মেষ ঘটানো। তার জন্য যদি সেক্স ড্রাইভেও লাগাম পরাতে হয়, হবে! নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন বিজ্ঞানী যে অভিভাষণ দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে একটি রিভিউ আছে। শিরোনাম: ‘দি নিউ কসমোগনি’।

লেম কিন্তু প্রথম মানুষ নন, যিনি অ-বাস্তব বইয়ের এরকম কল্পনাজারিত রিভিউ লিখেছেন। আর্জেন্তিনিয় কিংবদন্তী হোর্হে লুই বোর্হেসের ‘ইনভেস্টিগেশন অফ দি রাইটিংস অফ হার্বাট কুইন’-কেও একই যাত্রাপথের মাইলফলক বলা যেতে পারে। এই যে ধারার ‘অল্টারনেটিভ রাইটিং’, বা ‘বিকল্প লেখা’-র আশ্চর্য ভুবনের দরজায় টোকা মারা, তার সমতুল্য দৃষ্টান্ত কি সিনেমাতেও আছে? অর্থাৎ এমন কোনও সিনে-রিভিউ, যেখানে ফিল্মটি আদতে বানানোই হয়নি, ফলে বাজারে প্রকাশও হয়নি কখনও, তার রিভিউ? যে-চরিত্ররা অভিনয় করেছেন সেই অপার্থিব সিনেমায়, তাঁরা হয়তো কেউ বাস্তবের নন, বা বাস্তবের হলেও– এরকম নামের কোনও সিনেমায় কখনও অভিনয় করেননি, তার রিভিউ কি হয়েছে?

না, এমন নজির নেই।

এই ‘অল্টারনেটিভ রাইটিং’ আরও একটি ধাঁচার সম্ভাব্যতার কথা বলে। কোনও একটি বিখ্যাত পুস্তকের অন্তিম পরিণতি– নতুনভাবে লিখলে কী বা কেমন হতে পারে, তা নিয়ে! চার্লস ডিকেন্সের ‘গ্রেট এক্সপেক্টেশনস’ (১৮৬১), পাঠকদের মতে (‘দি গার্ডিয়ান’ সমীক্ষা করেছিল) ডিকেন্সের লেখা ‘সেরা’ উপন্যাস বলে বিবেচিত হয়েছিল ২০১১ সালে। যদিও এর চূড়ান্ত পরিণতিটি তর্কমুক্ত নয়। প্রথম সংস্করণের পরিণতি, পরের সংস্করণে অদলবদল করা হয়েছিল– তবে এটি করেছিলেন চার্লস ডিকেন্স স্বয়ং। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত রোয়াল্ড ডালের ‘মাটিল্ডা’-ও পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে গিয়েছে। খসড়া ও প্রথম প্রকাশিত সংস্করণের মধ্যে পরিমার্জনার ছাপ স্বীকৃত। এটিও করেছেন রোয়াল্ড ডাল নিজেই। অর্থাৎ অন্যতর পরিণতি কিছু হতে পারত কিনা, সেটি নির্ধারণ করেছেন লেখকরা, অন্য কারও কল্পনা বা প্রতিভার দ্বারা তার নিষ্পত্তি হয়নি।

‘অল্টারনেটিভ রাইটিং’ গোঁত্তা খেয়েছে সিনেমার ‘এন্ডিং’ বা পরিণতির বেলাতেও। হাতের কাছে মজুত চটজলদি কর্মাশিয়াল উদাহরণ হতে পারে ‘টাইটানিক’। এর আখ্যান সুবিদিত, তাই পুনরুক্তির দরকার নেই। কেবল এটুকু বললেই হবে, যে-রোজের জবানে পুরো গল্পটি দর্শক দেখে, সে-ই রোজ শেষ মুহূর্তে তাঁর কাছে স্মৃতি হিসেবে রক্ষিত বহুমূল্য নেকলেসটিকে অতলান্তিকের জলে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু এই সিনেমার আরেকটি ‘অল্টারনেটিভ’ পরিণতি তোলা হয়েছিল। সেটি ‘ফিল্মড’। যেখানে নেকলেসটি রোজ প্রথমে তুলে দেবে সমুদ্রের তলার সম্পদের খোঁজে রত ব্রক লভেটের হাতে, কথোপকথন হবে তাদের মধ্যে, এরপর বিসর্জন ঘটবে নেকলেসের।

এটি, বলা বাহুল্য, দেখানো হয়নি। অর্থাৎ কোন ভার্সনটি দেখানো হবে, বা কোনটি হবে না– সেই সিদ্ধান্ত নির্দেশকের আওতায় থেকেছে। যেমনটি, বইয়ের পরিণতির বেলায় ছিল ডিকেন্স বা ডালের স্বায়ত্তশাসনের অধীনে। স্তানিস্লোয়াভ লেম বা বোর্হেস যেরকম করে না-ছাপা বইয়ের কথা বলে কাল্পনিক ন্যারেটিভ রচনা করেছিলেন– তেমন বহুমাত্রিক নয় বিষয়টি।

আরও পড়ুন- শ্রমিকদের পাওনার দাবিতে প্রথম সই করেছিলেন মৃণাল সেন

দু’টি বিশেষ দৃশ্যের জন্য ‘চালচিত্র এখন’-এর কাছে নতুন করে ফেরা যায় বৈকি। প্রথমটা এমন, মৃণাল ও অঞ্জনের রাজনৈতিক বিশ্বাস উল্টো মেরুর। মৃণাল বামপন্থায় প্রত্যয় রাখেন। সমবেত সংঘ শক্তির বিস্ফোরণে সিস্টেম বদলে যেতে পারে– এই চিন্তাকে অমূলক মনে করেন না। অঞ্জন, আবার, যে কোনও সংঘকে মনে করে সত্যের বধ্যভূমি। ডান হোক বা বাম– সংঘ মানেই গোষ্ঠী। আর, গোষ্ঠী সবসময় ব্যক্তিকে চালনা করে, শেখায়-পড়ায়, নাচায়ও কি? সিনেমায় দেখি, তাঁদের মধ্যে কথা হচ্ছে। তাঁরা প্রশ্ন করছেন একে-অপরকে। অঞ্জন বেশি তেজি। মৃণাল সেন সংযত। তিনি বরং আগুন টেনে বের করে আনতে চান অঞ্জনের ভেতর থেকে।

‘চালচিত্র এখন’ তো আসলে সিনেমার মধ্যে সিনেমা। অঞ্জন অভিনয় করছেন মৃণালের একটি সিনেমায়। সেই অভিনয় পর্ব নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাইরের সিনেমাটি। তো, ভেতরের সিনেমায়, যেখানে অঞ্জন ‘অভিনেতা’, মৃণাল ‘পরিচালক’, একটা এমন সিকোয়েন্স ছিল; শ্যাওলা-ধরা চাতালকে সবাই মিলে পরিষ্কার করে ফেলবে, রাগে। রোজকার আছাড় খাওয়ার বদলা নিতে যেন বা। শুট হয়ে গিয়েছে। সেটিকে মনে করিয়ে দিয়ে, পরিচালক মৃণাল সেন বলেন অঞ্জনকে– এটা কিন্তু বাইরের সিনেমায় ঘটছে– সবাই মিলে একটা শ্যাওলা ধরা চাতাল সাফ করল। এক থেকে বহু– যৌথ খামার কি সত্যিই হয় না?
অঞ্জন, শোনে, স্তব্ধ হয়ে যায়। বিশ্বাস কি বদলায়?

আমরা জানি না। সিনেমা তা দেখায় না।

দ্বিতীয়টা এমন; অত্যন্ত জরুরি একটি দৃশ্য শুট করা হচ্ছে। পরিচালক মৃণালের পছন্দ হচ্ছে না কিছুতেই। তিনি বোঝাচ্ছেন– প্রতিটা শটে আমরা চেষ্টা করি একশো পার্সেন্ট অ্যাচিভ করতে। একশো তো আর হয় না। একটু কম হয়। ধরো, ৯৫ পার্সেন্ট। এবার ধরা যাক, কোনও-কোনও শটের ক্ষেত্রে ক্যামেরা দিচ্ছে ৫০ পার্সেন্ট। এডিটিং দিচ্ছে ৩০ পার্সেন্ট। মিউজিক দিচ্ছে আরও ২০ পার্সেন্ট। তাহলে অ্যাক্টর অ্যাক্টিং করলে কত দেবে? উত্তর হলো: নাথিং। কিছু দেবে না অভিনেতা। এই না দেওয়াই শটটাকে বাঁচিয়ে দেবে। আসলে, এই শট কোনও ‘অভিনয়’ ডিমান্ড করছে না। যত কম অভিনয় করা যাবে, দৃশ্যায়নটি ততই ভালো হবে। মনে পড়তে পারে, সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ সিনেমায় অরিন্দমের বলা সেই অবিস্মরণীয় সংলাপ– ক্যামেরার সামনে অতি অভিনয় চলে না। একটু করলে অনেকটা বেড়ে যায়।

তা, সেই ‘জরুরি’ দৃশ্যটি কেমন করে তোলা হলো শেষে? ‘চালচিত্র এখন’-এর পরিচালক অঞ্জন দত্ত সেটা দেখাননি। তবে, এরপরে, সিনেমার ভেতরের সিনেমায় মৃণালের সঙ্গে অঞ্জন যখন নিশ্চিন্ত হয়ে কথা বলেন, আমরা বুঝি, দৃশ্যটি শুট করতে অসুবিধে হয়নি কোনও।

এখানে এসে, অর্থাৎ ‘চালচিত্র এখন’ সিনেমার একদম শেষ লগনে, আমাদের মনে ফিরে আসে– সেই ‘অল্টারনেটিভ এন্ডিং’– অচেনা রোমাঞ্চের বর্ষাতি গায়ে। কেমন হতো, যদি জলরঙের কবিতার মতো, একটু-একটু বদলে যেত ‘চালচিত্র এখন’-এর শেষটা? এই সিনেমায় মৃণাল সেনের নাম ‘কুণাল সেন’। তিনি যখন থিয়েটারের ঘরানা থেকে তুলে আনলেন অঞ্জন দত্তকে, সিনেমায় যার নাম ‘রঞ্জন’, তাঁর সন্দেহ ছিল যথেষ্ট। এই ছেলে, শুট শেষ না-হওয়া পর্যন্ত থাকবে তো? রোজ আসবে তো? পালিয়ে যাবে না তো? এই ছেলে কলকাতাকে ভালোবাসে না, বিদেশে পালাতে চায়, বেঁচে থাকার প্রতি যথেষ্ট বিভ্রান্ত, একা মানুষের স্বাধীনতার বিশ্বাস করে কিন্তু স্বাধীনতাকে খোলা মনে উপভোগ করতে পারে না– এই ছেলে সেটে হাজিরা দেবে তো নিয়মিত?

শেষ দৃশ্যে, ‘পরিচালক’ মৃণাল সেন অর্থাৎ কুণাল সেন, উত্তর কলকাতার মতো টিপিক্যাল দেখতে কোনও লম্বা ও একহারা গলি ধরে বেরিয়ে যান। গলি থেকে বেরিয়ে তিনি কি রাজপথে পড়লেন বা অন্য কোনও বড় গলিতে? আমরা জানি না। তবে গলির মুখে অদৃশ্য হওয়ার সময় হাঁক পেড়ে জানতে চান– কলকাতাকে কেমন লাগছে?

প্রশ্নটা রঞ্জনকে করা, বা অঞ্জন দত্তকে। আর, প্রশ্নকর্তা যেই হন– কুণাল সেন বা মৃণাল সেন– আমরা উন্মুখ হয়ে উঠি। এই রঞ্জন বা অঞ্জন উত্তর দেন– ‘দারুণ’। আর, আমাদের চোখের সামনে সমস্ত বিস্ময়, সমস্ত সোহাগ, সমস্ত আনকোরা আনন্দলহরী খান-খান হয়ে ভেঙে যায়! এখানে এতখানি অভিব্যক্তি কি ঢেলে দিতেই হতো? যেখানে চিত্রনাট্য, ক্যামেরা, এডিটিং, মিউজিক সর্বস্ব পণ করে সবটা ভরিয়ে দিতে চাইছে– সেখানে অভিনেতা কেন কিছু ‘দিতে’ যাবে?
দিলেই যে অতি-অভিনয়, এ-ই ‘দারুণ’ কি নিদারুণ নয়?

More Articles