মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য! কেন এমনটা বললেন অমর্ত্য সেন?
CM Mamata Banerjee Amartya Sen : তৃণমূলের বিধায়ক থেকে শুরু করে সাংসদ-মন্ত্রী, সাধারণ কর্মী, প্রত্যেকের বক্তব্য একটাই। ‘ভারত এবার মেয়েকে চায়’।
‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য’ – বক্তা হলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন!
কেবল এটুকুই সাড়া ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। যিনি বলছেন, তিনি তো হেলাফেলার কেউ নন! অমর্ত্য সেন! নোবেলজয়ী পণ্ডিত, অর্থনীতিবিদ, সেইসঙ্গে ভারতরত্ন! সেই তিনিই কিনা প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারের দাবিদার মানছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে! বহুদিন ধরে খোদ তৃণমূল কংগ্রেসেরই এমনটা বক্তব্য ছিল। ঘাসফুলের নিচুস্তরের কর্মী থেকে বিধায়ক-সাংসদ-মন্ত্রী, প্রত্যেকের বক্তব্য একটাই। ‘ভারত এবার মেয়েকে চায়’। এ নিয়ে বিশেষ ক্যাম্পেনও শুরু হয়ে গিয়েছে। তারই মধ্যে খোদ অমর্ত্য সেনের এমন বক্তব্য শুধু অক্সিজেন নয়, জীবনদায়ী ওষুধও দিল তৃণমূল কংগ্রেসকে।
ঘটনাটি ঠিক কী? সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে একটি সাক্ষাৎকার দেন অমর্ত্য সেন। সেখানে দেশ ও বিশ্বের অর্থনীতি ছাড়াও উঠে আসে রাজনীতির প্রসঙ্গ। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বছর পেরোলেই ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। কাজেই রাজনীতির প্রসঙ্গ যে আসবে না, সেটা মনে করাটাই অন্যায়। আর অমর্ত্য সেন এর আগেও নিজের মতামত, আদর্শ সব খোলাখুলিই বলেছেন। সেজন্য বহুবার বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরাগভাজনও হয়েছেন। ঘোষিতভাবেই বিজেপি বিরোধী তিনি। দেশজুড়ে ধর্ম নিয়ে হিংসা, বেকারত্ব, মন্দা বাদ দিয়ে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের দিকে বেশি মন, ইতিহাস বিকৃতি – সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ করেছেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেনের বক্তব্য, বিজেপি এর আগে সহজেই জিতেছে। গুজরাত ভোটেও রেকর্ড হারে জিতেছে। কিন্তু ২০২৪ নির্বাচন গেরুয়া ব্রিগেডের জন্য খুব একটা সহজ হবে না। অমর্ত্য সেনের বক্তব্য, আঞ্চলিক দলগুলি আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। সাম্প্রতিক বেশকিছু নির্বাচনে এই আঞ্চলিক দলগুলির প্রভাবই দেখা গিয়েছে। দিল্লি, পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টি থেকে বাংলায় তৃণমূল – বিজেপিকে পরাস্ত করেছে তারা। ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলিও হেলাফেলার নয়।
এই প্রসঙ্গেই চলে আসে তৃণমূলের কথা। বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির মতো সাপে নেউলে সম্পর্ক নয় অমর্ত্য-মমতার। বরং নোবেলজয়ীর স্বাস্থ্য নিয়েও খেয়াল রাখেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। একেবারে মতবিরোধ হয় না, তা হয়তো নয়। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কী হিসেবে দেখছেন? এর উত্তরেই ফের একবার আঞ্চলিক দলগুলির প্রসঙ্গ সামনে আনেন অমর্ত্য সেন। বিজেপির বিরুদ্ধে এই দলগুলির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসও যে একটা ভূমিকা নিতে পারে, জানান তিনি।
সেইসঙ্গেই বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আছে। তিনি যোগ্য। কিন্তু তিনি আদৌ বিজেপি বিরোধী হাওয়া তুলতে পারবেন কিনা, মানুষের হতাশার জায়গা বুঝে সেখানে পৌঁছতে পারবেন কিনা সেটা জানা নেই। এর ওপরেই অনেকটা নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ। সবাইকে এক ছাতার তলায় আনতে পারলে তবেই মমতা মুখ হয়ে উঠবেন, এমনটাই মনে করেন অমর্ত্য সেন। আঞ্চলিক দলগুলিও বড় ভূমিকায় উঠে আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি।