এখনও জল রয়েছে মঙ্গল গ্রহে? বিজ্ঞানীদের নতুন 'আবিষ্কার' ঘিরে বিশ্বজুড়ে যে সম্ভাবনা দানা বাঁধছে
Curiosity Rover found Opal gems Mars : বিশ্লেষণ করার পর আরও হতবাক হয়ে যান নাসার বিজ্ঞানীরা। সামান্য পাথর নয়, এ যে রত্নভান্ডার!
কেবলমাত্র পৃথিবীতেই রয়েছে প্রাণ? আর কোথাও নেই? এই প্রশ্ন থেকেই যাত্রা শুরু হয়েছিল। মহাকাশে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি আমাদের সৌরজগতের দিকেও নজর রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে মঙ্গল গ্রহের ওপরই কড়া পর্যবেক্ষণ চালানো হয়। যত সময় এগোয়, বিজ্ঞানীদের বিস্ময় তত বাড়তে থাকে। রুক্ষ, শুষ্ক লাল গ্রহের বুকেই নাকি প্রাণ ছিল! এমন তত্ত্ব দীর্ঘ বহু বছর ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে পৃথিবীতে। সত্যিই কি তাই?
এখন মঙ্গল গ্রহের যা আবহাওয়া, তাতে প্রাণ আছে বলে বিজ্ঞানীরা সেভাবে মনে করেননি। তবে একের পর এক তথ্য তাঁদের চমকে দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই মঙ্গলযান তথা রোভার ‘কিউরিওসিটি’-কে পাঠিয়েছে নাসা। সেখানে গিয়ে কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে মার্স রোভারটি। তার পাঠানো ছবি, তথ্য বিশ্লেষণ করেই বেশকিছু চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। কীসের চিহ্ন? মঙ্গলে একটা সময় হয়তো সত্যিই জলের অস্তিত্ব ছিল। এই মুহূর্তে রেডিয়েশনের জন্য মঙ্গলের উপরিভাগে জল, জীবন কোনও কিছুরই অস্তিত্ব নেই। কিন্তু লাল মাটির নিচে? সেখানের পরিস্থিতি কী?
আরও পড়ুন : মঙ্গলগ্রহে পাওয়া গেছে পিরামিড, দরজার আড়ালে ভিনগ্রহীরা? জেনে নিন আসল তথ্য
এই প্রশ্নটিই তাড়া করে বেড়াচ্ছিল বিজ্ঞানীদের। এই মুহূর্তে মঙ্গলের ‘গ্যাল ক্র্যাটার’ অঞ্চলে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে মার্স রোভার কিউরিওসিটি। নাগাড়ে চলতে থাকা সেই কাজের যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণও শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। তখনই অদ্ভুত একটি জিনিস লক্ষ্য করলেন। ডিএএন স্পেকট্রোমিটারের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেন, গ্যাল ক্র্যাটারের নিচে কেবল শুষ্ক পাথর নেই। সেইসঙ্গে আরও কিছু রয়েছে। উল্লেখ্য, এই গ্যাল ক্র্যাটার একটা সময় বিশাল বড়ো হ্রদ ছিল বলে মনে করা হয়। এখন অবশ্য বিরাট এক শুষ্ক গহ্বর ছাড়া আর কিছুই নয় এটি। কিন্তু তার নিচে পাথর ছাড়া ওই বস্তুগুলি কী?
বিশ্লেষণ করার পর আরও হতবাক হয়ে যান নাসার বিজ্ঞানীরা। সামান্য পাথর নয়, এ যে রত্নভান্ডার! গ্যাল ক্র্যাটারের নীচেই রয়েছে ওপালের রাজত্ব! মাটির নিচে শক্ত পাথরের সঙ্গেই সার দিয়ে সাজানো রয়েছে সেই ওপাল। আর এই তথ্যটাই বিজ্ঞানীদের নতুন করে ভাবাচ্ছে। কেন?
আগে জেনে নেওয়ায় যাক ওপাল কী? পৃথিবীর বাসিন্দারা হয়তো এই পাথরটিকে নিশ্চয়ই চিনবেন। নীলাভ সবুজ রঙের এই পাথরটি রত্ন হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এক ঝলক দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। অন্যান্য জেমস্টোন বা রত্নের মতো এটিও রাসায়নিক বিক্রিয়ায়, তাপে চাপে তৈরি হয়। আর এটি তৈরির মূল উপাদান? জল!
আরও পড়ুন : মঙ্গলের বুকে ‘অজানা’ উড়ন্ত বস্তুটি আসলে কী! সাড়া দিল ভিনগ্রহের বাসিন্দারা?
মাটির ভেতর থাকা সিলিকার সঙ্গে জলের বিক্রিয়ায় তৈরি হয় ওপাল। এর মধ্যে জলের ভাগ বেশ বেশিই। মঙ্গলের ভেতর এরকম ওপাল রত্নের হদিশ পাওয়া মানে জলের অস্তিত্ব আরও প্রকট হওয়া। কারণ, জল না থাকলে কিছুতেই এই পাথর তৈরি হতে পারে না। আর এটি যে ওপাল, তা একপ্রকার নিশ্চিত। তাহলে যা ভাবা হচ্ছিল, তার থেকেও বেশি সময় পর্যন্ত জলের অস্তিত্ব ছিল মঙ্গলে? আর জল মানেই জীবন। তাহলে সত্যিই প্রাণের অস্তিত্ব ছিল? মার্স রোভারের নতুন এই তথ্য সেই সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করল।