‘জারি হতে পারে রাষ্ট্রপতি শাসন’! দিল্লির দখল নিতে নয়া ছক বিজেপির?
President's rule in Delhi: ইতিমধ্যেই কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিবকে বরখাস্ত করা ছিল সেই পরিকল্পনারই অংশ। আপ দলের অভিযোগ, এর পরে দিল্লি জুড়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করারই পরিকল্পনায় রয়েছে বিজেপি।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর রাজনৈতিক ভাবে একটা অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে দিল্লি। আর তার মধ্যেই নয়া আশঙ্কায় কাঁপছে রাজনীতি। ভোটের ঠিক মুখে মুখে দিল্লিতে জারি হতে পারে রাষ্ট্রপতি শাসন। এমনই আশঙ্কা করছে আম আদমী পার্টি।
ভোটের মুখে মুখে অবিজেপি রাজ্যের নেতানেত্রীদের পিছনে কেন্দ্রীয় সংস্থা লাগিয়ে হেনস্থার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন কেউ কেউ। আর তার নেপথ্যে রয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারই। এবার বিজেপির বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ আনল আম আদমী পার্টি। ভারতীয় জনতা পার্টি দিল্লি জুড়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে চাইছে বলে এবার অভিযোগ করলেন বিতর্কিত আপ নেত্রী অতীশি মারলেনা সিং। দিল্লির মন্ত্রী অতীশির দাবি, তিনি এবং তাঁর দল বিশেষ বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারকে আরও বেশি রকম অস্থির করে তুলতে চক্রান্ত করা হচ্ছে। আর তা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি বলেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দিল্লির মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: জেলেও রুটিন মানা মাপা জীবন, তিহাড়ে কেমন আছেন কেজরিওয়াল?
গত ২১ মার্চ, আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। প্রাথমিক ভাবে ইডি-হেফাজতে থাকলেও পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় তিহাড় জেলে। ভোট এগিয়ে এলেও জেল থেকে বেরোনোর তেমন কোনও আশা দেখা যাচ্ছে না কেজরির। যদিও দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার প্রশ্ন নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী জেল থেকেই রাজ্য শাসনের কথা শোনা গিয়েছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে। প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে জেলেই কেজরিওয়ালের জন্য দফতর তৈরি করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন আপ নেতারা। তবে তেমনটা এখনও হয়নি। যদিও জেলে যাওয়ার পর পরই মন্ত্রিসভার জন্য নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন কেজরি।
দিল্লি থেকে কেজরিওয়াল সরকারকে ফেলার পুরোদমে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন অন্যান্য আপনেতারা। আর সেই সব অভিযোগের পুরোভাগে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অতীশি মারলেনা। সম্প্রতি তিনি ফের বিজেপি সরকারকে তোপ দেগেছেন এ নিয়ে। জানিয়েছেন, একাধিক বিভাগে শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও দিল্লিতে সিনিয়র আইএএস অফিসারদের পোস্টিং বেশ কয়েক মাস বন্ধ রাখা হয়েছিল। আর এর নেপথ্যে বিজেপির সুচিন্তিত পরিকল্পনা রয়েছে বলে দাবি করেন। অতীশির দাবি, অতীতের একাধিক ঘটনার দিকে ফিরে তাকালে বারবার তেমনটাই মনে হচ্ছে তাঁদের। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তেমনটাই জানিয়েছেন মন্ত্রী।
আপ নেতাদের একটা অংশের মতে, বেশ কয়েক মাস যাবৎ দিল্লিতে কোনও অফিসারের পোস্টিং হয়নি। এমনকী দিল্লির মধ্যেও কোনও পোস্টিং বা বদলি বন্ধ রয়েছে। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনিক অফিসারেরা মিটিংয়ে যোগ দেওয়া বন্ধ করেছেন। ইতিমধ্যেই কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিবকে বরখাস্ত করা ছিল সেই পরিকল্পনারই অংশ। আপ দলের অভিযোগ, এর পরে দিল্লি জুড়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করারই পরিকল্পনায় রয়েছে বিজেপি। বহু চেষ্টা করেই কেজরি সরকারকে দিল্লি থেকে সরাতে পারেনি বিজেপি। সে কারণে ভোটের আগে পথের কাঁটা সরাতেই বিজেপির এই উদ্যোগ বলে দাবি করা হচ্ছে আপের তরফে।
আরও পড়ুন:কেজরিওয়ালই শেষ নয়, আপকে শেষ করতে বিজেপির যে ভয়াবহ পরিকল্পনা ফাঁস করলেন অতিশী
যদিও এই সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে বিজেপি। আপের অভিযোগ হাওয়ায় উড়িয়ে তাদের দাবি, প্রতিদিন নতুন নতুন মনগড়া কাহিনি ফাঁদছে আম আদমি পার্টি। বিজেপির মুখপাত্র হরিশ খুরানার বক্তব্য, দিল্লিতে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছে দল। এদিকে, সেই গত সেপ্টেম্বর থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেলের সঙ্গে দেখা করেনি কেজরিওয়াল নিজেই।
সত্যিই কি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জেলযাত্রার সুযোগ নিয়ে রাজধানী দিল্লিতে তেমন কোনও পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিজেপি সরকার। কোন প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই বা কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ আনছে আপ। দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতিতে উঠে গিয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। দিল্লিতে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে গত এক মাস ধরে, সেই আবহে দিল্লিকে আদৌ ধরে রাখতে পারবে তো আম আদমী পার্টি? রয়েছে সেই সওয়ালও।