বেছে বেছে টুইট সরাতে বলছে মোদি সরকার! বিস্ফোরক অভিযোগ মাস্কের
Elon Musk: এই প্রথম নয়, এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে বিজেপি সরকার। মাস্ক মালিকানা পাওয়ার আগেও X-এস সঙ্গে সংঘাত দেখা দেয় কেন্দ্রের।
সামনেই লোকসভা ভোট। ইতিমধ্যেই বেজে গিয়ে ভোটের দামামা। এরই মধ্যে দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনল এলন মাস্কের সংস্থা 'এক্স'। সোশ্যাল মিডিয়ার বাছাই কিছু অ্যাকাউন্ট ও পোস্টের ক্ষেত্রে নাকি আপত্তি রয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। তাদের তরফে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে সেই সব বিশেষ অ্যাকাউন্ট ও পোস্টের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর সেখানেই বিরোধ বেঁধেছে টুইটার কর্তার সঙ্গে সরকারের।
সরকারি নির্দেশ মেনে কিছু কিছু অ্যাকাউন্টের পোস্ট সরিয়ে দিতে রাজি হলেও, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জেল বা জরিমানার মতো যে যে সম্ভাব্য শাস্তির কথা জানিয়েছে কেন্দ্র, তার সঙ্গে একমত হতে পারেননি মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্ক ও তার সংস্থা। তাদের মতে, এই ধরনের নির্দেশ আদতে বাক-স্বাধীনতার পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: বিজেপির বিরুদ্ধে বললেই টুইটার বন্ধের হুমকি দিয়েছিল সরকার! অভিযোগ কতখানি সত্য?
খুব বেশিদিন হয়নি, টুইটার অধিগ্রহণ করেছে এলন মাস্ক। তার পর টুইটারের বহু নিয়মকানুনই পাল্টেছে। এমনকী বদলে গিয়েছে সোশ্যাল মাইক্রো ব্লগিং সাইটটির নাম এবং লোগো। সাবেক টুইটার নাম বদলে হয় 'এক্স'। তার পরেই নীল রঙা পাখিটি উড়ে গিয়ে লোগোতে এসে বসে ইংরেজি বর্ণমালার 'এক্স' বর্ণটি। সম্প্রতি এক্স-এর গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স টিমের তরফে একটি সোশ্যাল মিডিা পোস্টে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ আনা হয়েছে। আর তার পরেই সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট 'এক্স'-এর তরফে জানানো হয়েছে, সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত না হলেও, সরকারি নির্দেশ মেনে এই পোস্ট ও অ্যাকাউন্টগুলিকে বন্ধ করবে এক্স। ইতিমধ্যেই সেইসব ব্যবহারকারীদের তাদের নীতি মেনে নোটিস পাঠিয়েছে এলন মাস্কের সংস্থা। সরকারের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কোনও পিটিশন তারা দাখিল না করলেও টুইটার জানিয়েছে,সরকারের আপত্তি থাকা পোস্ট ও অ্যাকাউন্টগুলির শুধুমাত্র ভারতবর্ষেই বন্ধ করবে এলন মাস্কের সংস্থা।
The Indian government has issued executive orders requiring X to act on specific accounts and posts, subject to potential penalties including significant fines and imprisonment.
— Global Government Affairs (@GlobalAffairs) February 21, 2024
In compliance with the orders, we will withhold these accounts and posts in India alone; however,…
দেশ জুড়ে নয়া জোয়ার পেয়েছে কৃষক আন্দোলনের ঢেউ। বৃহস্পতিবার এক তরুণ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বিক্ষোভে নেমে। এ নিয়ে ২ জন কৃষকের মৃত্যুর খবর মিলল কৃষক-আন্দোলনে নেমে। স্বাভাবিক ভাবেই এ ঘটনায় ফুটছে গোটা দেশ। ভোটের আগে এই কৃষক আন্দোলনকে মোটেও ভালো চোখে দেখছে না বিজেপি সরকার। এর আগেও দু-দু'বার কৃষক বিক্ষোভের মুখে পড়েছে কেন্দ্র সরকার। সেসময় বিক্ষোভের মুখে পিছু হঠতে হয়েছিল বিজেপিকে। এবার তেমন কিছু ঘটুক, একেবারেই চাইছে না বিজেপি নেতৃত্ব। সে জন্য সব দিক থেকে বজ্রআঁটুনি পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এক্স-এর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, চলতি কৃষক বিক্ষোভ সংক্রান্ত সমস্ত পোস্টই মাইক্রো ব্লগিং সাইট থেকে মুছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
ব্যবহারকারীদের কাছে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট রাখতে ভারত সরকারের নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে এক্স। তবে আইনি বাধা থাকার কারণেই সরকারি ‘নির্দেশনামা’ প্রকাশ্যে আনা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে একই সঙ্গে মাস্কের সংস্থা জানিয়েছে, স্বচ্ছতার খাতিরে ওই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসা উচিত। X-এর তরফে আরও জানানো হয়, আমদের আগের অবস্থানই বজায় রয়েছে। ভারত সরকার অ্যাকাউন্ট ব্লকের যে নির্দেশ দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে তাদের আবেদন এখনও পড়ে রয়েছে আদালতে। সংস্থার নীতি-নিয়মের কথা জানিয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের মালিকদেরও।
আরও পড়ুন: হকের দাবিতে লড়তে গিয়ে ২২ বছরের তরুণ কৃষকের মৃত্যু! এই আন্দোলন বিপাকে ফেলবে বিজেপিকে?
এই প্রথম নয়, এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে বিজেপি সরকার। মাস্ক মালিকানা পাওয়ার আগেও X-এস সঙ্গে সংঘাত দেখা দেয় কেন্দ্রের। ২০২১ সালে কেন্দ্রের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন সংস্থার তদানীন্তন কর্তৃপক্ষ। মাস্কের হাতে সংস্থার মালিকানা ওঠার পর যদিও সেই অবস্থানে পরিবর্তন ঘটে। প্রকাশ্যেই মাস্ক জানান, নির্দেশ না মানলে কর্মীদের জেল-জরিমানা হতে পারে। তাই সেই ঝুঁকি নেবেন না তিনি। তবে এলন মাস্ক যে বাকস্বাধীনতার পক্ষেই সওয়াল করার দিকে, তা বারবারই প্রমাণ করেছেন এলন মাস্ক। সম্প্রতি বাকস্বাধীনতার অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নরওয়ে থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন মাস্ক। আর ঠিক তারপরেই ভারতবর্ষের বাকস্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুললনে এক্স-কর্তা। কোথায় যাবে মোদি সরকারের সঙ্গে এক্স-এর এই সংঘাত, সেটাই এখন দেখার।