চিরকালের জন্য দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে রাসায়নিক রঙ, সতর্ক থাকুন

আকাশ বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে বসন্তের কোকিলের সুর। সকলেই কাছের মানুষদের সাথে মেতে উঠছেন রঙ খেলায়।তবে সজাগ হোন রঙ কেনার সময়ে। একদিনের আনন্দ যেন আপনার শরীরের কাছে পীড়াদায়ক না হয়ে ওঠে। বাজারে বিভিন্ন গুণমানের রঙ পাওয়া গেলেও সবকটি ত্বক ও চুলের জন্য ভালো নয়। কিন্তু আপস করবেন না বছরের একটি দিন। দোল উৎসবে মন খুলে আনন্দ করুন ভেষজ আবিরে।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে ,বাজারে যেসব আবির পাওয়া যায় তার বেশিরভাগেই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মেশানো থাকে। সীসার মত রাসায়নিক উপস্থিত রয়েছে বাজারের রঙ এবং আবিরে। ভেষজ বা প্রাকৃতিক আবির এক্ষেত্রে একমাত্র বিকল্প।


প্রাকৃতিক রঙ বা আবির কী?

সহজ কথায় বললে, প্রকৃতি থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে আমরা যে রঙ বানাতে পারি তাকেই বলে প্রাকৃতিক রঙ।অন্যভাবে বলা যায় প্রাকৃতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে এই রঙ বা আবির তৈরি করা হয়। কোনোপ্রকার রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না এই রঙ প্রস্তুত করতে।
যেহেতু বাজারের রঙে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় তাই  অনেকেই দোল খেলতে চান না। আবার অনেকে অ্যালার্জির সমস্যা ও শ্বাসকষ্টের জন্যও রঙ মাখতে ভয় পান। তবে ভেষজ আবিরের ক্ষেত্রে এই ভয় নেই। নির্দ্বিধায় এমন মানুষেরা মেতে উঠতে পারেন দোলের হুল্লোড়ে।

রাসায়নিক রঙের ভয়াবহতা

বাজারের চোখ ধাঁধানো উজ্জ্বল রঙ শুধুমাত্র মানুষ নয় কুকুর বিড়াল বা যে কোনো প্রাণীর জন্যই ক্ষতিকারক। এমনকি পরিবেশ দূষণও হয় এই রঙের ব্যবহারে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা রয়েছে রঙয়ের তুলনায় আবির বোধহয় কম ক্ষতিকারক।কিন্তু তা একেবারেই ঠিক নয়। দেখা গেছে আবিরের রঙ ত্বককে শুষ্ক করে দেয়।বিশেষত যাদের অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস ( ত্বকের প্রদাহ) এবং এক্সিমার প্রবণতা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে আবির রোগগুলির প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
আবিরকে আরও চকচকে করতে অভ্র এবং মিহি কাঁচের গুঁড়োর মত উপাদান মেশানো হয়।এর ফলে মুখে ব্রণ ,ফুসকুড়ির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। অ্যাকনের মত সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। বাতাসে মিশে থাকা আবিরের কণা শ্বাসনালীতে ঢুকে সর্দি ,কাশি হওয়ার পাশাপাশি অ্যাজমার সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

এছাড়াও আবিরের রঙে রেড অক্সাইড,মেটানিল ইয়োলো এবং ম্যালাকাইট গ্রিন ব্যবহার করা হয়।এসব রাসায়নিক থেকে অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। ক্ষতি হতে পারে চোখের কর্নিয়ার। বাচ্চাদের বিভিন্ন রকমের ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আবার বেশিরভাগ দোলের রঙ বিভিন্ন অক্সাইডাইজড ধাতু ও ইঞ্জিন তেল মিশিয়ে রঙ তৈরি করা হয়।যেমন, কপার সালফেট থেকে সবুজ রং, ক্রোমিয়াম আয়োডাইড  থেকে বেগুনি রঙ, অ্যালুমিনিয়াম ব্রোমাইড থেকে রূপালী রঙ তৈরি করা হয়। এইসব রাসায়নিক উপাদানগুলি থেকে চামড়ার অ্যালার্জি, চোখ জ্বালা এমনকি অস্থায়ী অন্ধত্ব পর্যন্ত হতে পারে ।

ভেষজ আবির বা রঙ খুব সহজেই আপনি নিজেও বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন।এর ফলে আপনিও সুস্থ থাকবেন এবং পরিবেশও রক্ষা পাবে।এবার দোলের দিনে ভেষজ রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে।

More Articles