হকের দাবিতে লড়তে গিয়ে ২২ বছরের তরুণ কৃষকের মৃত্যু! এই আন্দোলন বিপাকে ফেলবে বিজেপিকে?

Farmers’ protest: শুভকরণের মৃত্যু কি লোকসভা নির্বাচনের আগে বিপাকে ফেলবে বিজেপি সরকারকে?

বয়স মাত্র ২২। সরকারের বিরুদ্ধে হকের পাওনার দাবিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন তিনি। বুধবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে কৃষক আন্দোলনের এই বিক্ষোভকারীর। 'দিল্লি চলো' আন্দোলন ফের শুরু করতেই পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তে এক সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বছর বাইশের তরুণ কৃষক শুভকরণ সিং। কৃষকরা নিজেদের ন্যূনতম ভর্তুকি মূল্যের (এমএসপি) দাবিতে সরকারকে চাপ দেওয়ার জন্য দিল্লিতে মিছিল শুরু করেছিলেন। শুভকরণ সিং ১৩ ফেব্রুয়ারি খানউরি সীমান্তে অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে এই আন্দোলনে শামিল হন। আন্দোলনরত কৃষকরা জানাচ্ছেন, হরিয়ানা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে। পুলিশি সংঘর্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাবের ভাটিন্ডার বাসিন্দা শুভকরণ প্রাণ হারান। যদিও পুলিশ শুভকরণের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

হাজার হাজার কৃষক খানাউরি এবং শম্ভু সীমান্তে তাদের ট্রাক্টর-ট্রলি এবং ট্রাক নিয়ে আন্দোলন করছেন। কৃষি ঋণ মকুব এবং ফসলের ন্যূনতম ভর্তুকি মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা নিয়ে লড়ছেন কৃষকরা। এই কৃষক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। বুধবার সকালে, শুভকরণ খানউরির বিক্ষোভস্থলে নিজের এবং অন্যান্য কৃষকদের জন্য সকালের খাবার তৈরি করছিলেন। আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে বসে একসঙ্গেই প্রাতঃরাশ সারছিলেন তিনি। গল্প করতে করতেই শুভকরণ বলেওছিলেন, পরে আর একসঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়ার বা একসঙ্গে বসার সুযোগও নাও মিলতে পারে।

আরও পড়ুন- 

শুভকরণের বাড়ি ভাটিন্ডার বালোকে গ্রামে। বাবা চরণজিৎ সিং আর দুই বোন ও ঠাকুমাকে নিয়ে তাঁর সংসার। বাবা পেশায় স্কুল ভ্যান চালক। শুভকরণ নিজে অবশ্য পশুপালন করতেন। প্রায় ৩ একর জমি এবং বেশ কিছু গবাদি পশু ছিল শুভকরণের। নিজের অধিকারের দাবিতে লড়তে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তরুণ কৃষক।

হরিয়ানা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেই যে শুভকরণের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি একেবারেই স্বীকার করেনি পুলিশ। পুলিশের উল্টে দাবি, মার খেয়েছে পুলিশই। হরিয়ানার জিন্দের সীমান্তের কাছে পঞ্জাবের সাংরুর জেলায় অবস্থিত খানৌরিতে লাঠিচার্জ ও পাথর ছোড়ার সময় পুলিশের ১২ জন কর্মকর্তা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের। কৃষকরা দাবি করছেন, হরিয়ানা পুলিশরা শুধু কাঁদানে গ্যাসের শেলই ছোড়েনি, রাবার বুলেটও ছুড়েছে।

শুভকিরণের মৃত্যুর পরে কৃষকরা তাদের 'দিল্লি চলো' মিছিল দুই দিনের জন্য স্থগিত করেছে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা কৃষকদের সঙ্গে পঞ্চম দফা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তে কৃষক ও পুলিশের মধ্যে শান্তির সপক্ষে কথা বলেছেন তিনি। অতীতেও কেন্দ্রসরকারকে কৃষি আইনে রদবদলে বাধ্য করেছিল কৃষক আন্দোলন। সাম্প্রতিক সময়ের কৃষক আন্দোলনই একমাত্র বড় সংগঠিত আন্দোলন হয়ে দেখা দিচ্ছে যা শাসককে চিন্তায় ফেলতে পারে। এর মাঝে শুভকরণের মৃত্যু কি লোকসভা নির্বাচনের আগে বিপাকে ফেলবে বিজেপি সরকারকে?

More Articles