আজ থেকে মেসি মারাদোনা সমার্থক, ২০২২ বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার

Fifa World Cup 2022 : লিওনেল মেসির কান্না, তাঁর স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হল। ১৯৮৬ তে মারাদোনা, এখন মেসি - বৃত্ত সম্পূর্ণ হল যেন। 

কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন এই রাতকে? প্রতিটা মুহূর্তে হার্টবিট উঠছে নামছে। এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কথা। এই মুহূর্তে আর্জেন্টিনা এগল, অন্য মুহূর্তে ফ্রান্স। শেষ মুহূর্তে বাজিমাত। আর নাম ভূমিকায়? সেই লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। অসম্ভব একটি গোল বদলে দিল স্কোরলাইন। স্বপ্নপূরণ আর্জেন্টিনার। ৩৬ বছর বাদে বিশ্বকাপ জয় লা আলবিসেলেস্তেদের। লিওনেল মেসির কান্না, তাঁর স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হল। ১৯৮৬ তে মারাদোনা, এখন মেসি - বৃত্ত সম্পূর্ণ হল যেন। পেনাল্টি শ্যুট আউটে ফ্রান্সকে হারাল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ জিতল নীল-সাদা।  

এমন ফাইনাল ম্যাচ শেষবার কবে দেখেছিল বিশ্ব, জানি না। ৩-৩ গোলে শেষ হয় ম্যাচ। পেনাল্টিই ছিল ভরসা। সেখানে অন্যতম ভরসা ছিলেন এমি মার্তিনেজ। হতাশ করেননি তিনি। দুটো পেনাল্টি রুখে দেন। আর মেসি? তিনিই সব। তিনিই ম্যাজিক। তিনিই নাকি ঈশ্বর! জীবনের শেষ বিশ্বকাপের মঞ্চেও সেই তিনিই হয়ে রইলেন সেরার সেরা। আর একজন? আর্জেন্টিনার কঠিন জয়ের পরে ফের আলোর মুখোমুখি আর্জেন্টিনার গোলকিপার মার্টিনেজ।

মেসি-মার্টিনেজ। দুই ম্যাজিকের নামে ভর করেই জিততে জিততে হেরে যাওয়া ম্যাচেও জিতে দেখাল আর্জেন্টিনা। আর এই অসাধ্য সাধনে ওঁরাই যেন কাঁদিয়ে দিলেন বিশ্বের আপামর নীল সাদা ভক্তদের। এমবাপের যাদুতে ভর করে এগিয়ে যাওয়া ফ্রান্সকে শেষমুহূর্তে ফের পিছিয়ে দিলেন মেসি-মার্টিনেজ। দুই রাজপুত্র দেখিয়ে দিলেন লড়াই কাকে বলে।

আর এই বিশ্বসেরার লড়াইয়ের ফলেই টাইব্রেকারের লড়াইয়ে স্বপ্নভঙ্গ হল ফরাসিদের। লাতিন আমেরিকার দেশের কাছে চূড়ান্ত লড়াইয়ে হেরে গেলেন এমবাপে, জিরৌরা। প্রথমার্ধে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ৭৫ মিনিট পর্যন্ত সেই ফলাফলই ছিল। কিন্তু সমস্তটা বদলে দিলেম কিলিয়ান এমবাপে। ২৩ বছরের এক যুবকের ঝড় এলোমেলো করে দিল আর্জেন্টিনা। ধীরে ধীরে ফ্রান্স টুঁটি টিপে ধরেছে নীল সাদা রক্ষণকে। তবে সামনে ছিলেন এমি মার্তিনেজ। তিন গোল খেলেও, অসামান্য তাঁর দক্ষতা। আর পেনাল্টি? কোয়ার্টার ফাইনাল, ফাইনাল দুটো ম্যাচেই তাঁর হাত ভরসা হয়ে রইল। অতিমানব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন এমি। কোপার ছবিই ফিরে এল কাতারে। 

আর্জেন্টিনার লড়াই তখন ঝিমিয়ে এসেছে খানিকটা। ম্যাচ গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। খেলা চলছে। লিওনেল মেসির চকিত গোলের পর আর্জেন্টিনার বক্সে হ্যান্ডবল। এমবাপের হ্যাটট্রিক। ফের তীরে এসে তরী ডোবার আশঙ্কা। কিন্তু চাপা টেনশন আর উত্তেজনার শোরগোল পড়েছে স্টেডিয়াম জুড়ে। মেসি কই! তাহলে কি এবারও বিদায়! তখনই খেল দেখালেন এমি মার্তিনেজ। খেল দেখালেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। এবারো চোখের কোলে জল মেসির। সেটা দুঃখের নয়, আনন্দের। স্বপ্নপূরণের। 

নাহ্! সে আর হতে দিলেন কই! মেসি-ম্যাজিকের বিবর্তনেই রচিত হল এক ইতিহাস। আর শেষ মুহূর্তের মার্টিনেজ দেখিয়ে দিলেন যোগ্য সঙ্গত কাকে বলে। জয়ের এক মৌলিক গাঁথা রেখে গেলেন আর্জেন্টিনার সেরারা। আর ফরাসিদের নাস্তানাবুদের নেপথ্যে রাখলেন ওই বেঁটে খাটো লোকটার নামই।

More Articles