৯০০০ লাশ, শতাধিক গণকবর! যেভাবে কবরের শহর হয়ে উঠছে গাজা...

Gaza Mass Graves : এত লাশের গন্তব্য কোথায়? নতুন কবরের জন্য জায়গা তৈরি করতে পুরনো কবর খোঁড়া হচ্ছে আবার

যুদ্ধ গুঁড়িয়ে দিয়েছে গাজাকে। প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু, শয়ে শয়ে লাশ! টানা ২৫ দিন পার করে ফিলিস্তিনিরা ধীরে ধীরে বুঝছেন, ইজরায়েল এবং হামাসের বিধ্বংসী যুদ্ধ কেবল তাদের প্রিয়জনদেরই নয়, স্বজনদের শেষকৃত্যের জায়গাও কেড়ে নিচ্ছে। গাজা শহরটাই আস্ত কবরখানায় পরিণত হয়েছে। লাশ চেনা যাচ্ছে না যাদের, তাঁদের ঠাঁই হচ্ছে গণকবরে। হাসপাতাল এবং মর্গজুড়ে কেবলই মৃত্যুর খবর।

শোকও যেন স্থবির হয়ে গিয়েছে। অবিরাম বোমাবর্ষণের মাঝে দাঁড়িয়ে স্বজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা, শোক করাও যেন অসম্ভবপর। এত লাশের গন্তব্য কোথায়? পুরনো কবর খোঁড়া হচ্ছে আবার, নতুন কবরের জন্য জায়গা তৈরি করতে পুরনো গর্তগুলোই আরও গভীর করে খোঁড়া হচ্ছে।

আত্মীয়রা দেহ দাবি করার আগেই উপচে পড়া মর্গগুলি হাসপাতালগুলিকে এই লাশগুলিকে কবর দিতে বাধ্য করেছে। স্বজন মারা গেলে শনাক্ত করার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য ফিলিস্তিনি পরিবারগুলি বিশেষ ব্রেসলেট পরা শুরু করেছে। শিশুদের লাশ যাতে চেনা যায় তার জন্য বাচ্চাদের হাত ও পায়ে মার্কার দিয়ে নাম লিখে দিচ্ছেন বাবা-মা।

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে গাজা উপত্যকা। গত চার সপ্তাহ ধরে সেখানে ইজরায়েলের নিরলস বোমাবর্ষণ চলছে। অভাবনীয় হত্যাকাণ্ড দেখছে তামাম বিশ্ব। তিন হাজারেরও বেশু শিশু সহ ৯,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আরও কম করে ১৮০০ ফিলিস্তিনি নিজেদের বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে। এই আটকে থাকা মানুষদেরও অর্ধেক আবার শিশু।

ফিলিস্তিনিরা গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি বোমা হামলায় নিহত আত্মীয়দের মৃতদেহ দেইর আল-বালাহ শহরের একটি কবরস্থানেও সমাধিস্থ করছে। শুধু তো বাড়িঘর নয়, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরেও বোমা পড়ছে। অকাতরে মরছে মানুষ। মানুষ কেবল সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে রোজ। শিশুরা নিথর হয়ে যাচ্ছে রোজ। গণকবরে শুয়ে আছে শয়ে শয়ে ফিলিস্তিনির দেহ। যুদ্ধ না জেতা অবধি হামলা করবে ইজরায়েল, জানিয়েই দিয়েছে সে দেশের সরকার। জয়ের জন্য যে কোনও নৃশংসতার সীমা পেরিয়ে যেতেও দ্বিধা করবে না রাষ্ট্র। যুদ্ধ একদিন থামবে নিশ্চয়ই। কেবল গাজা ততদিনে হয়ে উঠবে পৃথিবীর বৃহত্তম কবরখানা।

More Articles